আগামী সপ্তাহেই হকি বিশ্বকাপ-২০১৮ (পুরুষ) উপলক্ষে ভুবনেশ্বরে যাওয়ার কথা বলিউড বাদশাহ শাহরুখ খানের।তবে ওড়িশা রাজ্যের ভুবনেশ্বরে গেলেই মুখে কালি ছুড়ে মারার হুমকি দিয়েছে ‘কলিঙ্গ সেনা’ নামের স্থানীয় একটি সংগঠন।
কলিঙ্গ সেনা প্রধান হেমন্ত রথের অভিযোগ, ১৭ বছর আগে শাহরুখ অভিনীত ‘অশোকা’ চলচ্চিত্রে ওড়িশার সংস্কৃতিকে অপমান করা হয়েছিল। আর এর জন্য ক্ষমা চাইতে হবে শাহরুখকে, নইলে প্রতিবাদের মুখে পড়তে হবে তাঁকে। ওড়িশার মানুষের অনুভূতিতে আঘাত, রাজ্যের সংস্কৃতিকে অপমান ও চলচ্চিত্রে কলিঙ্গ যুদ্ধকে ‘বাজেভাবে’ উপস্থাপনের অভিযোগ এনে গত ১ নভেম্বর শাহরুখের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ দেয় সংগঠনটি।
কলিঙ্গ সেনার সাধারণ সম্পাদক নীহার পানি গণমাধ্যমকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলেছেন,‘বিমানবন্দর থেকে স্টেডিয়াম পর্যন্ত সব জায়গায় অভিনেতার মুখে কালি ছুড়ে মারা ও কালো পতাকা প্রদর্শনের জন্য আমরা সব প্রস্তুতি সেরেছি। যেখানেই খান পরিদর্শন করুন না কেন,আমাদের কর্মীরা রাস্তার পাশে সর্বক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকবে।’
শাহরুখের আগমন রুখে দিতে গত ১১ নভেম্বর কলিঙ্গ সেনা প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে। কর্মীরা শাহরুখের কুশপুত্তলিকাও দাহ করে। পুলিশের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, শাহরুখ খানসহ সব ভিভিআইপি ব্যক্তির জন্য অতিরিক্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
শাহরুখ অভিনীত ‘অশোকা’ চলচ্চিত্রটি মুক্তি পায় ২০০১ সালে। ব্যাপক প্রতিবাদের মুখে সে সময় সাত দিনেরও বেশি ওড়িশার থিয়েটারগুলোতে ছবি প্রদর্শন সম্ভব হয়নি।
কলিঙ্গ (ওড়িশার ঐতিহাসিক নাম) যুদ্ধ সংঘটিত হয় খ্রিস্টপূর্ব ২৬৫ অব্দে, দয়া নদীর নিকটবর্তী ধৌলি পাহাড়ের কাছে মৌর্য ও কলিঙ্গ বাহিনীর মধ্যে ভীষণ রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ হয়। দুই দলের প্রচুর হতাহতের মাধ্যমে সম্রাট অশোক কলিঙ্গ রাজাকে পরাস্ত করেন। বলা হয়, যুদ্ধে কলিঙ্গ বাহিনীর এক লাখ সেনা ও মৌর্য বাহিনীর ১০ হাজার সেনা নিহত হয় এবং অসংখ্য নর-নারী আহত হয়। যুদ্ধের বীভৎসতা সম্রাট অশোককে বিষাদগ্রস্ত করে তোলে। পরে তিনি যুদ্ধের পথ ত্যাগ করে বৌদ্ধধর্ম গ্রহণ করে অহিংসার পথে সাম্রাজ্য পরিচালনার নীতি গ্রহণ করেন।