শ্রীপুরে যুবককে কুপিয়ে হত্যা, হাসপাতালের বারান্দায় বৃদ্ধের মরদেহ

সাখাওয়াত হোসেন সানি, শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি:

গাজীপুরের শ্রীপুরে কনুই থেকে বিচ্ছিন্নের পর এক যুবককে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষরা। ঝুট ব্যবসাকে কেন্দ্র করে হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছে বলে নিহেতর পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।

বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় কড়ইতলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে। নিহত যুবক ফারুক হোসেন (২৬) শ্রীপুর পৌরসভার কড়ইতলা এলাকার হাফিজুর রহমানের ছেলে ও পৌর শ্রমিকলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক।

এ ছাড়া ওই যুবককে হাসপাতালে নেয়ার পর সকাল ১১টায় লোকজনের কোলাহলের মধ্যে অজ্ঞাত পরিচয়ের এক বৃদ্ধের (৭৫) মরদেহ কয়েকজন পথচারী হাসপাতালে রেখে যান।

নিহত ফারুক হোসেনের চাচা শ্রীপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল হাসান ও স্থানীয়রা জানান, ফারুক কেওয়া পশ্চিমখণ্ড এলাকার গোল্ড লিফ সিগােেটর বিক্রয় প্রতিনিধির গুদামে শ্রমিকের কাজ করতো। সকাল সাড়ে ৯টায় কারখানার উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হয়। পরে স্থানীয় জালাল উদ্দিনের ছেলে সুমন, বাবুল ও তার ৮/১০ জন সহযোগী মাওনা-বারতোপা সড়কের মসজিদ মোড়ে ফারুকের পথরোধ করে।

এ সময় তাদের কয়েকজন তাকে জোর করে পিকআপে উঠিয়ে কড়ইতলা বাজারে নিয়ে যায়। সেখানে লোহার রড, চাপাতি, দা ও ছুরি দিয়ে কুপিয়ে শরীর থেকে দু’হাত বিচ্ছিন্ন করে ফেলে।

খবর পেয়ে নিহতের স্বজনেরা তাকে তার বিচ্ছিন্ন দু'হাত পলিথিন ব্যাগে ভরে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে। পরে তাকে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।

কেওয়া পশ্চিমখণ্ড ও বহেরারচালা এলাকায় ঝুট ব্যবসায়ের আধিপত্যকে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। এরই জেরে হত্যাকাণ্ডটি ঘটে বলে জানা যায়।

শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাসনিয়া মাসনাজ জানান, ব্যাগভর্তি নিহতের বিচ্ছিন্ন দু’হাত ব্যাগে করে ফারুককে তার বাবা মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসে। এ সময় অজ্ঞাত পরিচয় এক বৃদ্ধকে (৭৫) কয়েকজন পথচারী মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসে। তার গায়ে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। শ্রীপুর পৌর শহরের কোনো এলাকায় মাথা ঘুরিয়ে লুটিয়ে পড়া বৃদ্ধকে হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়। তার স্বজনের খোঁজ মেলেনি এখনও।

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাবেদুল ইসলাম জানান, পুরো ঘটনা দু'জন উপ-পরিদর্শক প্রাথমিকভাবে তদন্ত করছেন। বৃদ্ধ মৃত্যুর ঘটনাও আমলে নিয়ে স্বজনদের খোঁজ নেয়া হচ্ছে। হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্তদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

হত্যাকাণ্ডে নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। দুটি ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি বলেও জানান তিনি।