Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ শুক্রবার, মার্চ ২০২৪ | ১৫ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

এশিয়ান হাইওয়ে নেটওয়ার্ক জোরদার করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার: পরিকল্পনামন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২৩ অক্টোবর ২০১৮, ০৫:২৫ PM
আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০১৮, ০৫:২৫ PM

bdmorning Image Preview
একনেক বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী


শিল্প ও বাণিজ্যে গতিশীলতা আনতে বিমসটেক ও সার্ক করিডোরসহ আঞ্চলিক সড়ক নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ করতে এশিয়ান হাইওয়ে নেটওয়ার্ক জোরদার করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এর জন্যে ভূমি অধিগ্রহণসহ ঢাকা-সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক ৪ লেনে উন্নীত করা হবে বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

আজ মঙ্গলবার (২৩ অক্টোবর-২০১৮) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) ২১তম বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি এসব কথা বলেন।

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) এর ২১তম বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এটি বর্তমান সরকারের ১৪৮তম বৈঠক।

মন্ত্রী বলেন, এশিয়ান হাইওয়ে নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ তরান্বিত করলে শিল্প ও বাণিজ্যে গতিশীলতা আসবে। এর অংশ হিসেবে ‘ভূমি অধিগ্রহণ ও ইউটিলিটি স্থানান্তর প্রকল্প: সাপোর্ট টু ঢাকা (কাঁচপুর)-সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ এবং উভয় পাশে পৃথক সার্ভিস লেন নির্মাণ’ নামের প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বিমসটেক করিডোর, সার্ক করিডোরসহ আঞ্চলিক সড়ক নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ ত্বরান্বিত হবে। ভবিষ্যতে উপ-আঞ্চলিক সড়ক নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার জন্য মহাসড়কের উভয় পাশে পৃথক সার্ভিস লেনসহ চার লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্প বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে খরচ ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৮৮৫ কোটি ৭২ লাখ টাকা। ঢাকা (কাঁচপুর)-সিলেট মহাসড়কটি এশিয়ান হাইওয়ে এবং সার্ক হাইওয়ে করিডোরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটি উপ-আঞ্চলিক বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলের সঙ্গে রাজধানী ঢাকাসহ অন্যান্য অঞ্চলের যোগাযোগের প্রধান করিডোর। সে জন্য ঢাকা (কাঁচপুর)-সিলেট মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করা অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। ভবিষ্যতে ঢাকা-সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ এবং উভয় পাশে পৃথক সার্ভিস লেন নির্মাণের জন্য যে বিনিয়োগ প্রকল্প নেওয়া হবে, তার লিংক প্রকল্প হিসেবে ভূমি অধিগ্রহণ এবং ইউটিলিটি স্থানান্তর কার্যক্রম শেষ করা প্রয়োজন। এই প্রকল্প এশিয়ান হাইওয়ে অংশ হিসেবে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কটি চার লেনে উন্নীতকরণ কাজ সহজ করবে।

পরিকল্পনামন্ত্রী আরও বলেন, দেশের দুর্গম এলাকায় নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ করছে সরকারি মোবাইল অপারেটর টেলিটক। এ জন্য স্থাপন করা হচ্ছে সৌর বেসড স্টেশন। ফলে দুর্গম অঞ্চলে সুবিধাবঞ্চিত ২৫ লাখ মানুষকে টেলিযোগাযোগ সুবিধা দেয়া সম্ভব হবে। সেইসঙ্গে টেলিটকের সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। এ লক্ষ্যেই ‘সৌর বেসড স্টেশন স্থাপনের মাধ্যমে দুর্গম ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে টেলিটক নেটওয়ার্ক কভারেজ শক্তিশালীকরণ’ শীর্ষক প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়েছে। এটি বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৪০৬ কোটি ১৭ লাখ টাকা। এরমধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ১২৫ কোটি ২৪ লাখ টাকা, ভারতীয় তৃতীয় লাইন অব ক্রেডিট (থার্ড এলওসি) থেকে ২৫৫ কোটি টাকা এবং বাস্তবায়নকারী সংস্থা টেলিটক, বাংলাদেশ লিমিটেডের নিজস্ব তহবিল থেকে ২৫ কোটি ৯২ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেড ২০০৪ সালে ২ হাজার কোটি টাকা মূলধন নিয়ে গঠিত হয়। ২০০৫ সালের ৩১ মার্চ টেলিযোগাযোগ সুবিধা সম্প্রসারণে বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু করে। বর্তমানে টেলিটকের মার্কেট শেয়ার মাত্র ৩ শতাংশ। সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০২০ সাল পর্যন্ত মার্কেট শেয়ার ২০ শতাংশে উন্নীত করার পরিকল্পনা রয়েছে। এ লক্ষ্যপূরণে কোম্পানিটি নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণে নিজস্ব, সরকারি এবং বৈদেশিক সহায়তায় বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। কিন্তু দেশের দুর্গম এলাকা যেমন: হাওর, বন, দ্বীপ, চট্টগ্রামের পাহাড়ি এলাকা, জামালপুর, শেরপুর, নেত্রকোনা ও ময়মনসিংহের পাহাড়ি এলাকায় এখনও আধুনিক উচ্চগতিসম্পন্ন থ্রি-জি প্রযুক্তির টেলিযোগাযোগ সেবা পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। এসব অঞ্চলে টাওয়ার বেসড স্টেশন নির্মিতব্য স্থানে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া সম্ভব নয়। তাই সেলুলার নেটওয়ার্ক স্থাপন কৌশলগতভাবেই চ্যালেঞ্জিং। এর বাইরে ডিজেল জেনারেটরের মাধ্যমে বেস স্টেশন স্থাপন করা হলে জনবসতি না হওয়ায় ব্যক্তি খাতে বিনিয়োগ ফেরত আনা যাবে না। কারণ অন্যান্য এলাকার তুলনায় জনবসতি কম হওয়ায় রাজস্বও কম আদায় হবে। তবে সৌরচালিত স্টেশনের মাধ্যমে নিু পাওয়ার বেসড স্টেশন স্থাপন করা হলে নেটওয়ার্ক পরিচালনা ব্যয় কম হবে। ফলে দেশের দুর্গম এলাকায় নেটওয়ার্ক স্থাপনকে অধিক সহজতর করবে। এরমধ্য দিয়ে দেশের যেসব এলাকায় বেসরকারি খাতের মোবাইল অপারেটরদের সেবা বিস্তৃত হয়নি, সেসব এলাকার জনগণকে টেলিটক নেটওয়ার্কের আওতায় নিয়ে আসা সম্ভব হবে।

আজকে ২১টি (নতুন ও সংশোধিত) প্রকল্পের জন্যে মোট ব্যয় ১৯ হাজার ৭৭৮ কোটি ৭৩ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে জিওবি ১৭ হাজার ৩১৬ কোটি ৯৩ লক্ষ টাকা, সংস্থার নিজস্ব তহবিল ২৩৩ কোটি ৯৩ লক্ষ টাকা এবং বৈদেশিক প্রকল্প সাহায্য ২ হাজার ২২৭ কোটি ৮৭ লক্ষ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

Bootstrap Image Preview