Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ শুক্রবার, মার্চ ২০২৪ | ১৫ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

দেশে তার আসা হবে ঠিকই, কিন্তু কফিনে আসবে প্রাণহীন দেহ

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১২ অক্টোবর ২০১৮, ০৯:২২ PM
আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০১৮, ০৯:২২ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত ছবি


`আমার ছেলের আর আসা হলো না। তার লাশ আমরা কবে পাব, নাকি পাবই না তার কিছুই জানা নেই আমাদের। ৬ ছেলে ১ মেয়ের মধ্যে সবার ছোট আমার জাকির। বছর তিনেক পরে আগামী নভেম্বরে তার দেশে আসার কথা ছিল’।- এভাবেই নিজের প্রবাসী ছেলের মৃত্যুর খবর জানিয়েছেন হাজীগঞ্জের কালচোঁ দক্ষিণ ইউনিয়নের চাঁদপুর গ্রামের আব্দুল রশিদ বকাউল।

জানা যায়, বাহরাইনের মানামা সিটির কুমিল্লা হোটেলের বিপরীতে একটি ভবনে বাস করতেন কয়েকশ বাংলাদেশি। এই ভবনের দ্বিতীয়তলায় থাকতেন আব্দুল রশিদ বকাউলের ছেলে জাকির প্রধানিয়া ও তার অপর ভাই জুলহাস।

গত ৯ অক্টোবর সন্ধ্যা রাতে জাকিরকে রুমে রেখে বড় ভাই জুলহাস যান বাজার করতে। এর কিছু পরেই গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে ভবনধসে নিহত হন জাকির।

প্রসঙ্গত, আগামী নভেম্বর মাসে বাহরাইন থেকে ছুটিতে আসার কথা ছিল তার। কিন্তু ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস, চিরদিনের ছুটি মিলল তার। দেশে তার আসা হবে ঠিকই। তার নিহতের খবর দেশে আসামাত্রই বাড়িতে চলছে শোকের মাতম।

কালচোঁ দক্ষিণ ইউনিয়নের জাকিরের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় পরিবার-স্বজনদের আর্তনাদ। পরিবারের ছোট ছেলেকে হারিয়ে শোকের মাতম চলছে পুরো পরিবারে। জাকিরের স্ত্রী লিপিকে এখন পর্যন্ত জানানো হয়নি জাকির মারা গেছেন। পরিবার স্ত্রীকে জানিয়েছে জাকির সামান্য আহত হয়েছেন, হাসপাতালে ভর্তি আছেন। এদিকে জাকিরের লাশ দ্রুত দেশে আনার জন্য সরকারের প্রতি আবেদন জানিয়েছে তার পরিবার। দেশে তার আসা হবে ঠিকই, কিন্তু কফিনে আসবে প্রাণহীন দেহ।

নিহতের পারিবারিক সূত্র জানায়, জাকির প্রায় ৩ বছর পূর্বে হাজীগঞ্জ পৌরসভাধীন খাটরা বিলওয়াই গ্রামের আবদুল মালেকের মেয়ে লিপিকে বিয়ে করেন। তাদের ঘরে কোনো সন্তান হয়নি।

জাকিরের বয়োবৃদ্ধ বাবা আব্দুল বাসার বলেন, ৬ ছেলে ১ মেয়ের মধ্যে সবার ছোট জাকির। প্রায় ১০ বছর হতে চলল ছেলে বিদেশ করছে। প্রায় ৮ বছর পূর্বে হাজীগঞ্জ পৌর এলাকার ধেররা গ্রামের আ. মালেকের মেয়ে লিপির সঙ্গে বিয়ে দেয়া হয়। এর মধ্যে বছর তিনেক আগে জাকির দেশে এসেছে। আসছে নভেম্বরে সে দেশে আশার কথা ছিল।

তিনি বলেন, ছেলের মৃত্যুর খবর বউমাকে জানানো হয়নি। আমার আরেক ছেলে জুলহাস জাকিরের সঙ্গে একই রুমে ছিল। জুলহাস বাজার করতে যাওয়ার পরেই এই ঘটনা ঘটে। জুলহাস ইতিমধ্যে জাকিরের কাজগপত্র দূতাবাসে জমা দিয়েছে। কিন্তু লাশ আমরা কবে পাব বা আদৌ পাব কিনা তার কিছুই আমরা বলতে পারছি না।

কালোচোঁ দক্ষিণ ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা স্বপন বলেন, নিহতের পরিবারের পক্ষে লাশ দেশে আনার কোনো সুযোগই নেই। সরকার লাশ আনার ব্যবস্থা করলে পরিবারটি অন্তত সন্তানের লাশ দেখতে পারত।

Bootstrap Image Preview