Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৫ বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

ফেসবুকে যৌন নির্যাতনের কথা বলায় জেলে তরুণী!

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০১ অক্টোবর ২০১৮, ১০:১০ PM
আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০১৮, ১০:১১ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত ছবি


যৌন নির্যাতনের শিকার আমি। সাহস করে এই কথাটুকুই জানিয়েছিলেন ফেসবুকে। সাজা হয়েছে সঙ্গে সঙ্গে। তবে অপরাধীর নয়। তাঁর নিজেরই।

গত মে মাসে ফেসবুকে একটি ভিডিয়ো পোস্ট করেছিলেন বছর ৩৩- এর মিশরীয় তরুণী আমাল ফাথি। তিনি যে যৌন নিগ্রহের শিকার এবং অপরাধীর এ অবধি কোনও শাস্তি হয়নি, সে কথাটাই জানিয়েছিলেন তিনি। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গত কয়েকমাস বিচার চলার পরে শনিবার মিশরের আদালত তাঁকে ‘ভুয়া খবর ছড়ানোর অপরাধে’ দোষী সাব্যস্ত করেছে। দুই বছরের জেল ও ১০ হাজার মিশরীয় পাউন্ড জরিমানা করা হয়েছে আমালকে।

আমালের আইনজীবী দোয়া মুস্তাফা জানান, আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানাতে চলেছেন তাঁরা। তবে মুস্তাফা এ-ও জানান, ২০ হাজার পাউন্ড দিলে আপাতত কারাদণ্ড স্থগিত রাখা হবে বলে জানিয়েছে কোর্ট। যদিও তাতে লাভ কিছু হবে কি না, জানা নেই।

কারণ ইতিমধ্যেই অন্য একটি মামলায় নাম জড়িয়েছে আমালের। অভিযোগ, তিনি একটি সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের সদস্য। আমালের বন্ধুদের দাবি, ‘তিনি মানবাধিকার কর্মী। কোনও জঙ্গি সংগঠনের সদস্য নয়।’

আমাল পেশায় এক জন অভিনেত্রীও। মে মাসের ভিডিয়ো পোস্টে আমাল জানিয়েছিলেন, কীভাবে একটি ব্যাঙ্কের নিরাপত্তা রক্ষী তাঁকে যৌন হেনস্থা করেছেন। এবং প্রশাসন যে মেয়েদের সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ, ভিডিয়োটিতে সে প্রশ্নও তোলেন তিনি।

ফেসবুকে এই পোস্টের দুই দিনের মাথায় তাঁর বাড়িতে হানা দেয় নিরাপত্তা বাহিনী। আমাল, তাঁর স্বামী ও ছেলেকে তুলে নিয়ে যায়। পরে স্বামী-পুত্রকে ছেড়ে দেওয়া হলেও আমাল বন্দিই রয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে ‘ভুয়া খবর ছড়ানো’ ও ‘আপত্তিকর জিনিস সঙ্গে রাখা’র অভিযোগে মামলা শুরু হয়।

শনিবার দুটি মামলাতেই দোষী সাব্যস্ত হন আমাল। দুই মামলাতে এক বছর করে মোট দুই বছর সাজা হয়েছে। সঙ্গে জরিমানা। সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের সদস্য হওয়ার যে অভিযোগ রয়েছে, সেই মামলা এখনও চলছে।

শনিবার রায়ের খবর ছড়াতে সময় লাগেনি। লন্ডনের একটি মানবাধিকার সংগঠন বলেছে, ‘লজ্জাজনক ঘটনা। যৌন নিগ্রহের প্রতিবাদ জানানোর সাহস দেখিয়েছিলেন উনি। অবিচারের জঘন্যতম উদাহরণ। যে আক্রান্ত, সে-ই কি না জেলে। আর অপরাধী মুক্ত ঘুরে বেড়াচ্ছে।’

জাতিসংঘের রিপোর্ট অনুযায়ী, মিশরের ৬০ শতাংশ নারী জীবনে কখনও না কখনও, কোনও না কোনও ভাবে যৌন নিগ্রহের শিকার। ২০১৭ সালেই একটি আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা কায়রোকে মেয়েদের জন্য সব চেয়ে বিপজ্জনক শহরের তকমা দিয়েছে।

আমালের স্বামী মহম্মদ লোতফির কথায়, ‘সেটাকেই তো স্বীকৃতি দিল আদালত। যে কেউ হেনস্থা করতে পারে। অপরাধীর শাস্তি হবে না। আর নিগৃহীতার জন্য- মুখ বন্ধ রাখো। না হলে জেল।’

Bootstrap Image Preview