Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৫ বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

টাকার বিনিময়ে রোহিঙ্গা নারী আলমরজান হয়ে গেলেন মর্জিনা

এম. সালাহ উদ্দিন আকাশ, উখিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৭:৪৭ AM
আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৭:৪৮ AM

bdmorning Image Preview


প্রতিদিন শত-শত রোহিঙ্গারা কৌশলে চেক পোস্ট ফাঁকি দিয়ে দেশের বিভিন্নস্থানে পাড়ি জমাচ্ছে। হাজার হাজার টাকা খরচ করে বাংলাদেশি নাগরিকত্ব কিনে নিচ্ছে। নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে সন্তানদের ভর্তি করাচ্ছে স্কুল-কলেজে। পর্যায়ক্রমে স্কুল-কলেজ শেষ করে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রী নিয়ে দেশের বিভিন্ন সেক্টরে কর্মরত আছেন অনেক রোহিঙ্গা।

চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষার সাথে রোহিঙ্গা ভাষার কিছুটা মিল থাকার সুযোগ নিয়ে রোহিঙ্গারা কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সাথে মিশে যাচ্ছে। অসৎ কিছু মানুষের সহযোগিতায় তারা তাদের ছেলেমেয়েদের টাকার বিনিময়ে ভর্তি করে দিচ্ছে শহরের স্কুল গুলোতে।

উখিয়ার কুতুপালং ক্যাম্পের ডি ৫ এ আশ্রয় নেওয়া আলমরজান তাদেরই একজন। সে রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে চট্টগ্রাম গিয়ে গড়ে তুলেছে স্থায়ী আবাস। নাম বদল করে হয়েছেন মর্জিনা। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের ম্যানেজ করে পেয়েছেন বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্র। তার ২ মেয়ে আমিরা বেগম, রোজিয়া বেগম ও দুই ছেলে ইসফাতুর রহমান, জিয়াউর রহমানকে ভর্তি করে দিয়েছেন চট্টগ্রামের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। ছেলেমেয়েগুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ালেখা করলে এখনো রেশন কার্ডের মাধ্যমে প্রতিমাসে রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে রেশন পাচ্ছে। এরকম হাজারো রোহিঙ্গা পরিবার রয়েছে। যারা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার-ভাড়া বাসায় অবস্থান করলেও রোহিঙ্গা ক্যাম্পে রয়েছে হরদম যাতায়াত।

কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কে বেশ কয়েকটি চেকপোস্ট থাকলেও স্থানীয় জনগণের বেশে এসব রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী বাংলাদেশের স্থায়ী বাসিন্দা হয়ে যাচ্ছে। তাছাড়া মিয়ানমার থেকে নির্যাতনের শিকার হয়ে আসা সচ্ছল পরিবারগুলো আগেই পাড়ি জমিয়েছে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার সহ দেশের আনাচে কানাচে।

মধুরছড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বসবাস করা চট্টগ্রামে থাকা আলমরজান ওরফে মর্জিনার দেবর সাইদুর রহমান জানান, তারা মিয়ানমার থেকে একসাথে এসেছিল, তার ভাই আবুবকর, ভাবী আলমরজান চট্টগ্রামে থাকে ভাইপো ভাইজিরা চট্টগ্রামের স্কুলে পড়ালেখা করে। তবে কোন স্কুলে সে জানে না। তারা চট্টগ্র্রামের বাকলিয়া থানার কালামিয়া বাজার থাকে। ভাইয়ের এক মেয়ে সমিরা বেগম এখনো কুতুপালং ডি-৫ এ থাকে। তার স্বামীর নাম মৌলভী ইয়াছিন। তাদের সাথে যোগাযোগ রয়েছে ভাবীর। এখনো রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে নিয়মিত রেশন পাচ্ছে ভাইপো, ভাইজিরা। ক্যাম্পে তারা এখন বেড়াতে আসে। দুই/তিন দিন থাকার পর আবার চলে যায়।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কুতুপালং ক্যাম্প ম্যানেজমেন্ট কমিটির সেক্রেটারি মোহাম্মদ নুর জানান, মিয়ানমার থেকে আসার পর হাজার হাজার রোহিঙ্গা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখ দেশের বিভিন্ন স্থানে চলে গেছে,ক্যাম্পের সাথে অনেকের এখনো আসা যাওয়া রয়েছে। মিয়ানমার থেকে যারা টাকা পয়সা নিয়ে আসতে পেরেছে তারা আগেই দেশের বিভিন্নস্থানে পাড়ি জমিয়েছে।

এদিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে রোহিঙ্গাদের দেশের বিভিন্নস্থানে চলে যাওয়ার ব্যাপারে গত মাসের মাসিক উখিয়া উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় ব্যপক আলোচনা হয়েছে।

এ ব্যাপারে উখিয়া থানা ওসি মোহাম্মদ আবুল খায়ের বলেন, ভাষাগত মিল থাকায় অনেক সময় রোহিঙ্গারা পার পেয়ে যায়। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ভবিষ্যতে আরো কঠোর হবে।

Bootstrap Image Preview