পদ্মাসেতু প্রকল্পের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে। এবার পদ্মা সেতুতে পরীক্ষামূলকভাবে রেলওয়ে স্ল্যাব বসানোর শুরু হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে স্প্যানে স্ল্যাব বসানোর কাজ শুরু হয় জাজিরা প্রান্তে। পরীক্ষা সফল হলে শিগগিরই স্থায়ীভাবে স্ল্যাব বসানো হবে। এরই মধ্যে ৮টি স্ল্যাব বসানো হয়েছে। সেতু প্রকল্পের মাওয়া কন্সট্রাকশন ইয়ার্ডে বেশ কিছু স্ল্যাব তৈরির কাজও শেষ হয়েছে।
জানা যায়, মাওয়া থেকে স্ল্যাবগুলো জাজিরা প্রান্তে নিয়ে আসা হয়। একেকটি স্প্যানে ৪টি সেকশনে ৮টি করে মোট ৩২টি স্ল্যাব বসবে। সেই হিসাবে ৪১টি স্প্যানে রেলওয়ে স্ল্যাব বসবে এক হাজার ৩১২টি।
পদ্মা সেতুর প্রকৌশলী সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে ৪১ ও ৪২ নম্বর পিলারের মধ্যবর্তী ৭-এফ স্প্যানের ওপর এসব রেলওয়ে স্ল্যাব বসানো হচ্ছে। এর আগে মাওয়া থেকে ৮টি স্ল্যাব নিয়ে আসা হয় জাজিরায়। স্ল্যাব নিয়ে মাওয়া থেকে জাজিরা পৌঁছাতে লাগে একদিন। ৮ টন ওজনের একেকটি স্ল্যাবের দৈর্ঘ্য ২ মিটার এবং প্রস্থ ৫.১৫ মিটার।
আরও জানা যায়, মঙ্গলবার প্রথমে স্ল্যাব বহনকারী ভাসমান ক্রেনটিকে ৪১ ও ৪২ নম্বর পিলার বরাবর নির্ধারিত স্থানে রাখা হয়। এরপর সুবিধাজনক উচ্চতায় উঠিয়ে স্ট্রিংগার বিমসহ স্প্যানের ওপর রাখা হয়। স্ল্যাব বসানো শেষে স্ল্যাবের মধ্যবর্তী স্থানে কংক্রিট ঢালাইয়ের কাজ করা হবে। স্প্যানের ওপর রাখার আগে লোডটেস্টসহ বিভিন্ন পরিক্ষা নিরীক্ষা করা হয়। মাওয়া প্রান্তে ৭০০ বেশি স্ল্যাব প্রস্তুত রয়েছে। জাজিরা প্রান্তে এখন যে ৬টি পিলারে ৫টি স্প্যান বসানো হয়েছে তাতে রেলওয়ে স্ল্যাব বসানো হচ্ছে। এছাড়া স্ট্রিংগার বসানো হবে স্ল্যাবের সঙ্গেই।
এক প্রকৌশলী জানান, স্ল্যাবগুলো যদি সফলভাবে বসানো যায় তাহলে আর সরানো হবে না। যদিও ট্রায়ালের কথা বলা হচ্ছে। আর যদি কোনও সমস্যা দেখা দেয় তাহলে আবার ভিন্ন উপায়ে স্ল্যাব বসানোর চেষ্টা করা হবে।
এদিকে, সেতুর পিলারের ওপর এ বছর আর কোনও স্প্যান বসানো হবে না বলে জানা গেছে। এ পর্যন্ত সেতুর ৩৭, ৩৮, ৩৯, ৪০, ৪১ ও ৪২ নম্বর পিলারের ওপর পাঁচটি স্প্যান বসানোর মাধ্যমে জাজিরা প্রান্তে পৌনে এক কিলোমিটার কাঠামো দৃশ্যমান হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে সেতুর কাজ শুরু হয়। ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর বসানো হয় প্রথম স্প্যানটি। এরপর চলতি বছরের ২৮ জানুয়ারি দ্বিতীয় স্প্যানটি বসে। এর মাত্র দেড় মাস পর ১১ মার্চ শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে তৃতীয় স্প্যান বসানো হয়। এর ২ মাস পর ১৩ মে বসে চতুর্থ স্প্যান এবং পঞ্চম স্প্যানটি বসে তার মাত্র এক মাস ১৬ দিনের মাথায়।