Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ শুক্রবার, মার্চ ২০২৪ | ১৪ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

অসলো চুক্তির ২৫ বছর : হারিয়ে যাচ্ছে ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতার শেষ স্বপ্ন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৩:৩২ PM
আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৩:৩২ PM

bdmorning Image Preview


৯০ দশকে স্বাক্ষরিত নরওয়ের রাজধানী অসলোতে একটি চুক্তির মাধ্যমে ফিলিস্তিন ও ইসরায়েল পরস্পরকে স্বীকৃতি দিয়েছিল। যাকে বলা হয় অসলো চুক্তি। ফিলিস্তিনের বহু তরুণের মতো আবেদ জুহায়েরও মনে করেন, অসলো চুক্তির কারণেই নিজেদের ভূমির ওপর থেকে তাদের অধিকার রুদ্ধ করা হয়েছে। তিনি বলেন, অসলো চুক্তি ছিল ভুল।

১৯৯৩ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর হোয়াইট হাউসে বসে ফিলিস্তিনি নেতা ইয়াসির আরাফাত ও ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী আইজ্যাক রবিন এ চুক্তি সই করেন।

এ দুই নেতা তখন হোয়াইট হাউসের লনে দাঁড়িয়ে প্রথমবারের মতো ঐতিহাসিক হাত মেলান। পরে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠায় তাদের শান্তিতে নোবেল পুরস্কারও দেয়া হয়েছিল।

সেই চুক্তির ২৫ বছর পার হতে যাচ্ছে আজ বৃহস্পতিবার। জুহায়ের বলেন, নিজের সীমান্ত বরাবর ইসরাইল কখনই একটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র মেনে নেবে না।

তিনি বলেন, ইহুদি রাষ্ট্রটি আমাদের সব ভূমি দখল করতে চায়। অধিকৃত পশ্চিমতীরের অধিকাংশ ভূমি তারা আত্মীভূত করে নেবে।

এতে দুই রাষ্ট্রের সমাধানের শেষ আশাটুকুও নেই হয়ে গেছে। সেখানে শান্তি প্রতিষ্ঠার সুযোগ সুদূর পরাহত ছাড়া আর কিছু নয়।

১৯৯৩ সালের পর পশ্চিমতীরের ভূমিতে ইসরাইলি বসতি নিয়মিত সম্প্রসারিত হতে দেখেছেন ফিলিস্তিনিরা। এর মধ্যে ২০০০ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত দুপক্ষই দ্বিতীয় ফিলিস্তিনি জাগরণ বা ইন্তিফাদা দেখেছে।

গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের সঙ্গে তিনটি যুদ্ধ হয়েছে। গত এক দশক ধরে গাজা অবরোধ করে রেখেছে ইসরাইল। এতে সেখানে চরম মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।

১৯৯৩ সালে স্বাক্ষরিত ওই চুক্তির মধ্য দিয়ে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের ক্ষমতাসীন দল পিএলও প্রথমবারের মতো পরস্পরকে স্বীকৃতি দেয়। চুক্তিতে গাজা উপত্যকাকে পশ্চিম তীর থেকে পৃথক করার সুপারিশ করা হয়।

কিন্তু এ চুক্তিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেওয়ার পর এটি পর্যালোচনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পিএলও।

ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্টের পররাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক উপদেষ্টা নাবিল শাত সে সময় জানান, ওই চুক্তি বাতিলের বিষয়ে আলোচনা করবে পিএলও’র কেন্দ্রীয় কাউন্সিল।

১৯৯৩ সালে অসলো চুক্তি স্বাক্ষরের পর ১৯৯৫ সালে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ নামে অন্তর্বর্তীকালীন ফিলিস্তিন সরকার গঠনের মধ্য দিয়ে একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পথে এগিয়ে যাওয়া হয়েছিল।

অসলো চুক্তির মধ্য দিয়ে পশ্চিম তীরের ৬০ শতাংশ এলাকায় ফিলিস্তিনি অর্থনীতি, বেসামরিক ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ পেয়েছিল ইসরায়েল। ওই চুক্তির মধ্য দিয়ে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের মধ্যে বিতর্কিত নিরাপত্তা সহযোগিতার দুয়ার খুলেছিল। এখন সেই অসলো চুক্তি স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিয়েছে পিএলও।

কিন্তু ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতার স্বপ্নের মতো সিটিও আজ জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে রয়েছে।

২৮ বছর বয়সী জিহাদ মানাসরা বলেন, ইসরাইলিরা প্রতিনিয়ত অসলো চুক্তি লঙ্ঘন করে যাচ্ছেন। এ কারণেই চুক্তিটি ব্যর্থ হয়ে গেছে।

জুহায়ের বলেন, আমরা যদি থেমে যাই ও আলোচনা অব্যাহত রাখি, তবে দখলদারিত্বও চলতে থাকবে। অস্ত্র হাতে না নেয়া পর্যন্ত আমরা কিছুই পাব না।

মাজিদ নামে আরেক ফিলিস্তিনি যুবক বলেন, কোনো দিন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হবে, এমন আশা তিনি দেখছেন না। তিনি বলেন, আমার কাছে একটিই বিকল্প আছে, তা হল- শিক্ষিত হওয়া। আর প্রজন্মের পর প্রজন্মকে জানিয়ে দেয়া যে এখানে একটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র ছিল।

Bootstrap Image Preview