Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ শুক্রবার, মার্চ ২০২৪ | ১৫ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

গাজীপুরের হল ব্যবসায় ধস, বন্ধ এক তৃতীংশ

নাঈমুল হাসান
প্রকাশিত: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১১:৪৭ AM
আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১১:৪৭ AM

bdmorning Image Preview


নাঈমুল হাসান, টঙ্গী (গাজীপুর) প্রতিনিধি:

দর্শকের অভাবে লোকসান গুনতে গুনতে গাজীপুরের ১৮টি সিনেমা হলের মধ্যে ১১টি বন্ধ হয়ে গেছে। এক সময় সিনেমা পাগল দর্শকদের উপচে পড়া ভিড় ছিল গাজীপুরের সিনেমা হলগুলোতে। যে ৭টি চালু রয়েছে দর্শকের অভাবে যেকোন সময় বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এতে হতাশায় দিন গুনছেন সিনেমা হল মালিকরা।

১৮টি সিনেমা হলের মধ্যে টঙ্গী এলাকায় ৪টি, গাজীপুর সদর ৭টি, শ্রীপুরে ২টি,কালিয়াকৌর ২টি, কালীগঞ্জ ২টি, কাপাসিয়া ১টি। বর্তমানে চালু থাকা হলগুলো থেকে সরকার বছরে পাচ্ছে ৪ হাজার টাকা। অথচ প্রায় এক যুগ আগে এর পরিমান ছিল লক্ষাধিক। পূর্বে সিনেমা হলের দর্শকদের ব্লাকে টিকিট নিয়ে হলে ঠুকতে হতো। নতুন সিনেমা প্রদর্শনী শুরু হলে ৪-৫ দিন ধারণ ক্ষমতার চেয়ে অতিরিক্ত আসন সংযোজন করতে হতো।বর্তমানে ডিস চ্যানেলগুলোতে উন্নতমানের সিনেমা ও নাটক দেখা যায়। অনেকের ধারণা সিনেমা হলে নিন্মমানের লোক দর্শক হিসেবে যায়। তাছাড়া মোবাইল ও ইন্টারনেটের সহজ ব্যবহারে হল মুখি মানুষের অনিহা দিনদিন বেড়েই চলেছে।

সিনেমা হল কর্তৃপক্ষ জানায়, গাজীপুরে ১৮ সিনেমা হল ছিল। এগুলো হলো চম্পাকলি, আনারকলি, ক্যাপরী, বর্ষণ, চান্দনা, ঝুমুর, নন্দিতা, উল্কা, বর্ষা, এরিণ, আলোঘর, সিনেমা ঘর, মনোরম, বনরুপা, শাপলা ও চিত্রপুরী।

গাজীপুরের টঙ্গী এলাকার বাসিন্দা এইচ আর মনির বলেন, এক সময় কাজের ফাঁকে প্রায় দিন সিনেমা হলে গিয়ে বাংলা ছবি দেখতাম। সিনেমা হলের পরিবেশ নষ্ট হয়ে গেছে। বাসায় বসে ডিস লাইন ও ইন্টারনেটে সব ধরণের ছবি দেখতে পাই। এখন সিনেমা হলে চলে অশ্লীল ছবি। এছাড়া সিনেমা হলের সামনে অশ্লীল পোস্টার ও সিনেমা প্রদর্শন করা হয়ে থাকে। যার কারণে পরিবারের সকলকে নিয়ে সিনেমা হলে যাওয়া অসম্ভব হয়ে পড়েছে।

টঙ্গীর আরেক বাসিন্দা রাজিব মাহমুদ জানান, সিনেমা গুলোর কাহিনী এখন ভাল লাগে না। বাংলাদেশের ছবির চেয়ে ভারতের ছবিগুলো অনেক ভাল লাগে। এছাড়া আমাদের দেশের সিনেমা হলের পর্দাও অনেক খারাপ, পরিষ্কার ছবি দেখা যায় না। আগে সিনেমা হলের ছবি দেখতে লাইন ধরে টিকিট কাটতে হতো। এখন ডেকেও সিনেমা হলে দর্শক পাওয়া যায় না। সিনেমা হলের অবস্থান আগের জায়গায় নিতে হলে সিনেমা হলের পরিবেশ ভাল করতে হবে, ভাল মানের ছবি, হলের পর্দা উন্নত থাকলে হয়তো দর্শক আবার সিনেমা হলে গিয়ে ছবি দেখবে।

টঙ্গীর চম্পাকলি সিনেমা হল মালিক সালাহউদ্দিন সরকার জানান, এখন ঘরে ঘরে টেলিভিশন থাকায় মানুষ সিনেমা হলে আসে না। ঘরে বসেই মানুষ এখন সকল ছবি দেখে। এছাড়া সিনেমা হলে ছবি চলার আগেই তা টেলিভিশন, ডিশ ও ইন্টারনেটে দেখতে পাওয়া যায়। এছাড়া ছবির মানও তেমন ভাল হয় না। সিনেমা হল চালিয়ে স্টাফদের বেতন দেওয়া যায় না। প্রতিনিয়ত লোকসানে গুনতে হচ্ছে সিনেমা হল মালিকদের। তবে ঈদে কিছুটা দর্শক সমাগম হলেও স্থায়ী ভাবে দর্শক হল মুখো করতে হলে ভালো মানের ছবি তৈরি করার কথা জানান তিনি।

গাজীপুর জেলা তথ্য অফিসার মো. রাহাত হাসনাত(মুঠোফোনে)জানান, গাজীপুরে ১৮টি সিনেমা হল এক সময় ছিল। সিনেমা হল নিয়ে কাজ শুরু করছি। জেলা প্রসাশন থেকে অনুমতি নেওয়া লাগে সিনেমা হলের । তাদের কাছ থেকে একটি তালিকা নিয়েছি। সেই তালিকায় এখন ৭টি সিনেমা হল। সিনামা হলে গিয়ে সিনামা দেখার যে কালচার সেটা আমাদের দেশে নাই। ২০০০সাল থেকে ২০১০সালের মধ্যে অশ্লীল সিনেমা চলে আসছে তখনই কালচারটা নষ্ট হয়ে গেছে। শুধু অশ্লিল ছবির কারনে সিনামা হল বন্ধ হচ্ছে না। সিনামা হলের পরিবেশ কারনেই কেউ সিনামা দেখতে যায়না। সরকার সিনেমা হলের জন্য কাজ করছে। সিনেমা হলগুলো ডিজিটাল করা হবে।

Bootstrap Image Preview