চট্টগ্রাম দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদ্রাসা থেকে প্রতিষ্ঠানটির সহকারী শিক্ষা সচিব মাওলানা আনাস মাদানীকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
বুধবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাত ১০ টার দিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মাদ্রাসার শুরা সদস্য ও মেখল মাদ্রাসার পরিচালক মাওলানা নোমান ফয়জী এ ঘোষণা পাঠ করে শোনান। মাদ্রাসার মহাপরিচালক আল্লামা আহমদ শফীর সভাপতিত্বে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, মাদ্রাসার মহাপরিচালক আল্লামা আহমদ শফীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত শুরার মিটিংয়ে প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক আল্লামা আহমদ শফীর ছেলে মাদ্রাসার শিক্ষক মাওলানা আনাস মাদানীকে অব্যাহতিসহ মোট তিনটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। উদ্ভুত পরিস্থিতি রাতে আয়োজিত এ বৈঠকের সভাপতি মাদ্রাসার মহাপরিচালক আল্লামা আহমদ শফী বৈঠকে ছেলে মাওলানা আনাস মাদানীকে অব্যাহতি দেওয়ার সিদ্ধান্তে সম্মত হন। এখন থেকে মাদ্রাসার ছাত্রদের কোনো রকমের হয়রানি করা হবে না বলে জানান মাদ্রাসার শুরা সদস্য মাওলানা নোমান ফয়জী।
এর আগে বুধবার দুপুরে মাওলানা আনাস মাদানীকে বহিষ্কারসহ বিভিন্ন দাবিতে হাটহাজারী মাদ্রাসায় বিক্ষোভ শুরু করেন ছাত্ররা।এ সময় মাদ্রাসা মসজিদের মাইক থেকে বারবার ঘোষণা করা হয় প্রশাসনের কেউ ভেতরে ঢুকার চেষ্টা করবেন না। অযথা আতংক সৃষ্টি করে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করলে সারাদেশের কওমী অংগনে তা ছড়িয়ে পড়বে। এবং এই রক্তপাতের দায় আপনাদেরকেই নিতে হবে।
আরও বলা হয়- বাউন্ডারি ওয়াল টপকিয়ে পুলিশ সদস্য ভাইয়েরা মাদ্রাসা অভ্যন্তরে ঢুকার চেষ্টা বন্ধ করুন। আমরা যথাযত কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে এই সৃষ্ট জটিলতার সুরাহা করব। এটা সরকার বিরোধী কোনো আন্দোলন নয়। মনে রাখবেন, এটা কোনো মহল বা সরকার বিরোধী আন্দোলন নয়। এটা আমাদের কওমী আক্কীদা রক্ষার, ন্যায্য অধিকার আদায়ের আন্দোলন”। এ সময় মাইকে আরও বলা হয়, ভাইসব, এই আন্দোলন আপনাদের প্রাণের কওমী মাদ্রসা আর আক্কীদা রক্ষার আন্দোলন। এই আন্দোলন আপনাদের যাকাত, ফিতরা, দান ছদকা, চামড়া, মুঠিচাল দিয়ে তিল তিল করে গড়ে তোলা কওমী মাদ্রাসা আর আক্কীদা রক্ষার আন্দোলন। প্রশাসনের ভাইদের বলছি, কেউ দেওয়াল টপকে ভেতরে ঢুকার চেষ্টা করলে পরিণতি ভাল হবে না। আর কোনো ভাই যদি আহত বা রক্তাক্ত হয়, পরিস্থিতি সামাল দিতে পারবেন না। এ সময় র্যাব পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা ঘটনাস্থলে গেলেও তাদের মাদ্রাসার অভ্যন্তরে প্রবেশ করতে দেয়নি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
মাদ্রাসার শুরা সদস্য ও মেখল মাদ্রাসার পরিচালক মাওলানা নোমান ফয়জী জানান, আগামী শনিবার মজলিসে শুরার সব সদস্যরা মিলে বাকি সমস্যাগুলো সমাধান করবেন। এবং রাত ১০টার দিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের এসব তথ্য জানানো হলে তারা শান্ত হন বলে জানান তিনি।