Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৯ মঙ্গলবার, মার্চ ২০২৪ | ৫ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

দেশের বাজারে ৫ লাখ ২৫ হাজার টন পেঁয়াজের মজুদ আছে

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০৯:৩১ PM
আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০৯:৩১ PM

bdmorning Image Preview


হঠাৎ করে অনির্দিষ্টকালের জন্য পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ ঘোষণা করেছে ভারত। এ ঘোষণার পরপরই দেশের বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় এই পণ্যটির দাম প্রায় দ্বিগুণ বেড়ে গেছে। তবে দেশে প্রায় তিন মাসের পেঁয়াজ মজুদ আছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন।

বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের এক প্রতিবেদনে জানা গেছে, দেশের প্রধান পেঁয়াজ উৎপাদনকারী জেলা পাবনা, ফরিদপুর, রাজবাড়ী, রাজশাহী, কুষ্টিয়া ও মানিকগঞ্জে বর্তমানে পেঁয়াজের মজুদের পরিমাণ ৫ লাখ ২৫ হাজার টন। তবে বাংলাদেশে পেঁয়াজের মৌসুম আসতে এখনও ছয় মাস বাকি। এই সময়ে পেঁয়াজের চাহিদা রয়েছে প্রায় ১১ লাখ টন।

কমিশনের এ হিসেবে দেখা যায়, আগামী প্রায় তিন মাসের পেঁয়াজ মজুদ আছে। বাকি তিন মাসের পেঁয়াজ আমদানি করেই মেটাতে হবে। অর্থাৎ, মার্চের আগপর্যন্ত আরও প্রায় ৬ লাখ টন পেঁয়াজ আমদানির দরকার পড়বে।

বিদ্যমান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের এক প্রতিবেদনে পেঁয়াজের সরবরাহ ও দাম স্বাভাবিক রাখতে ভারতের বিকল্প হিসেবে আটটি দেশের বাজারের সন্ধান করতে পরামর্শ দেয়া হয়েছে। দেশগুলো হচ্ছে- মিয়ানমার (বার্মা), আফগানিস্তান, মিসর, তুরস্ক, চীন, মালয়েশিয়া, পাকিস্তান ও নেদারল্যান্ডস।

ট্যারিফ কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশে পেঁয়াজের বার্ষিক চাহিদা প্রায় ২৫ লাখ টন। সাধারণত স্থানীয়ভাবে উৎপাদন ও আমদানির মাধ্যমে পেঁয়াজের চাহিদা পূরণ করা হয়। ২০১৯-২০ অর্থবছরে স্থানীয়ভাবে পেঁয়াজ উৎপাদন হয় ২৫ লাখ ৫৭ হাজার টন। এর মধ্যে ২২-২৫ শতাংশ সংগ্রহকালীন এবং সংরক্ষণকালীন ক্ষতি বাদ দিলে স্থানীয় উৎপাদিত পেঁয়াজ থেকে বাজারে মোট সরবরাহ করা হয় ১৯ লাখ ১৭ হাজার টন।

এ ছাড়া ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, দেশে পেঁয়াজ আমদানি করা হয়েছে ৪ লাখ ৩৬ হাজার টন। যা ২০১৯ সালে ছিল ৬ লাখ ৭৪ হাজার টন এবং ২০১৮ সালে ৬ লাখ ৯৬ হাজার টন। অর্থাৎ, ২০১৯ ও ২০১৮ সালের তুলনায় ২০২০ সালে যথাক্রমে ৩৫ ও ৩৮ শতাংশ পেঁয়াজ কম আমদানি হয়েছে। আমদানি কম হওয়ায় চলতি বছর স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত পেঁয়াজের ব্যবহার বেশি হয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, করোনা সংক্রমণের শুরুর পর এপ্রিল মাসের দিকে বাংলাদেশে সব ধরনের আমদানি কার্যক্রম বন্ধ ছিল। স্বাভাবিক আমদানি না থাকায় দেশে উৎপাদিত পেঁয়াজ ব্যবহার হয়েছে বেশি।

জানতে চাইলে ট্যারিফ কমিশনের সদস্য (বাণিজ্য নীতি) শাহ মো. আবু রায়হান আলবেরুনী যুগান্তরকে বলেন, স্থানীয় বাজারকে প্রোটেকশন দেয়ার জন্য ভারত পেঁয়াজের রফতানি বন্ধ করে। সে জন্য ভারত বাদেও চীন, তুরস্ক, মিসর, মিয়ানমারসহ বিভিন্ন দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি দ্রুত শুরু করতে হবে।

তিনি বলেন, ট্যারিফ কমিশনের সুপারিশে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে ব্যবসায়ীদের নির্দেশনা দিয়েছে বিকল্প থেকে পেঁয়াজ আমদানির। একইসঙ্গে টিসিবিও আমদানির প্রস্তুতি নিচ্ছে।

সোমবার ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বৈদেশিক বাণিজ্য বিভাগের মহাপরিচালক অভিৎ জাধব স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে অনির্দিষ্টকালের জন্য পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ ঘোষণা করেছে দেশটি।

ভারতের মালদা কাস্টমসের যুগ্ম সচিব হিলি স্থলবন্দরে প্রথমে একটি মেইলের মাধ্যমে জানায়, নীতি পরিবর্তনের কারণে ভারতের মালদা কাস্টমস থেকে পেঁয়াজ রফতানি একদিনের জন্য বন্ধের ঘোষণা করা হয়েছে।

এ ছাড়া পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই সোমবার সকাল থেকে বেনাপোল বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করেছে ভারত। বন্দর দিয়ে সকালে ৫০ টন পেঁয়াজ দেশে ঢোকার পর সব কটি বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দেয় দেশটির পেঁয়াজ রফতানিকারকদের সংগঠন। ফলে বেনাপোলের ওপারের পেট্রাপোলে আটকা পড়েছে পেঁয়াজভর্তি প্রায় ১৫০টি ট্রাক।

পেট্রাপোল রফতানিকারক সমিতি সূত্র বলছে, প্রতি টন ৭৫০ ডলারের নিচে বাংলাদেশে পেঁয়াজ রফতানি করবে না ভারত।

বেনাপোলের পেঁয়াজ আমদানিকারক রফিকুল ইসলাম রয়েল জানান, ভারতের সঙ্গে আমদানি বাণিজ্য শুরুর পর থেকে ২৫০ মার্কিন ডলারে পেঁয়াজ আমদানি হয়ে আসছে। ভারতের নাসিকে বন্যার কারণে সেখানে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়ায় পেঁয়াজের রফতানিকারকরা স্থানীয় বাজারদর হিসাবে ৭৫০ ডলারের নিচে বাংলাদেশে পেঁয়াজের রফতানি করবে না। এ কারণে তারা পেঁয়াজের রফতানি সাময়িক বন্ধ করে দিয়েছে।

হিলি স্থলবন্দর কাস্টমসের উপকমিশনার সাইফুল আলম বলেন, সোমবার সকাল থেকে হঠাৎ করে ভারত পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দিয়েছে। আমরা বিভিন্নভাবে খোঁজ নিয়ে জেনেছি, ভারতে পেঁয়াজের অভ্যন্তরীণ সংকট রয়েছে।

Bootstrap Image Preview