প্রতিনিয়ত বন উজাড় হচ্ছে এক শ্রেণীর প্রভাবশালী কর্তৃক,সেই সাথে রয়েছে লাউয়াছড়ার ভূমি দখল করে গড়ে ওঠা লেবু বাগান তৈরী ,বৃক্ষ পাচারের ফলে খাদ্যের অভাব দেখা দিয়েছে বন্যপ্রাণীদের।তাই প্রায়শঃই খাদ্যের সন্ধানে লোকালয়ে গিয়ে ধরা পড়ছে বিভিন্ন
বন্যপ্রাণী।কখনো কখনো এসব বন্যপ্রাণী লোকালয় থেকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা সম্ভব হলেও মানুষের হাতে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে অহরহ।এসব বন্যপ্রাণীদের তাদের নিজের নিরাপদ আবাসস্থল লাউয়াছড়া বনে নিরাপদে বেঁচে থাকতে হলে প্রয়োজন খাদ্য।বন্যপ্রাণীরা বিভিন্ন পোকামাকড় থেকে শুরু করে বিভিন্ন গাছের ফলমূল খেয়েই বেঁচে থাকে।কিন্তু সময় পরিক্রমায় বন্যপ্রাণীর খাদ্যের যোগান দেয়া এসব গাছ এক শ্রেণীর চোর চক্র কর্তৃক পাচার হয়ে লাউয়াছড়া চিরহরিৎ বন এখন পূর্বের জৌলস হারাচ্ছে তাই বন্যপ্রাণীর জীবনও পড়ছে হুমকির মুখে।এসব বিষয় মাথায় রেখে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ফাউন্ডেশন এক বিশেষ উদ্যোগ হাতে নিয়েছেন।
বন্যপ্রাণীদের খাবারের যোগান দেয়া গাছগুলো সংগ্রহ করে ধারাবাহিকভাবে প্রায় দশ হাজার গাছ লাগানোর উদ্যোগ হাতে নিয়েছেন সংগঠনটি।তারই ধারাবাহিকতা আজ ৭ জুন রবিবার সকালে গাছ লাগাই,পরিবেশ বাঁচাই এই স্লুগানকে সামনে রেখে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে প্রথম দিনের কার্যক্রম শুরু করেন সংগঠনটি।প্রথম দিনেই বন্যপ্রাণীর খাদ্যের যোগান দেয়ার মধ্যে অন্যতম বৃক্ষ বট, জলপাই,অর্তকী,বয়রা,কৃষ্ণচূড়া মিলিয়ে প্রায় দুইশ গাছ রোপন করা হয় লাউয়াছড়ায়।পর্যায়ক্রমে বাকি গাছগুলোও রোপন করা হবে বলে জানান জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ফাউন্ডেশনের সভাপতি সাংবাদিক হৃদয় দেবনাথ।
হৃদয় বলেন,গাছ আমাদের প্রাণ।যে অক্সিজেন নিয়ে প্রতিটি প্রাণ বেঁচে আছে তা সম্পূর্ণটাই আমরা গাছ থেকে পাই।এছাড়াও এসব গাছের ফল খেয়েই বেঁচে থাকে বন্যপ্রাণীরা।আমাদের প্রধান লক্ষ্যই হলো বন্যপ্রাণীদের খাদ্য সংকট দূর করা আর তা একমাত্র সফলভাবে বৃক্ষরোপন করতে পারলেই বন্যপ্রাণীদের জীবন নিরাপদ হবে তবে তা হতে হবে বন্যপ্রাণীদের যোগান দেয় এমন গাছ যোগ করেন তিনি ।আর এতে সফল হতে পারলেই খাদ্য সংকটে তখন আর কোনো বন্যপ্রাণী বন ছেড়ে লোকালয়ে গিয়ে মানুষের হাতে মারা পড়বেনা।
হৃদয় বলেন আমাদের মূল উদ্দেশ্যই হলো বনায়নে মানুষকে উৎসাহিত করা।বন্যপ্রাণী সম্পর্কে মানুষকে ধারাবাহিকভাবে ধারনা দিয়ে সচেতন করে তুলা।উক্ত বৃক্ষ রোপন কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বৃক্ষ রোপন উদ্ভোধন কাজের শুভ উদ্ভোধন করেন জনাব আশরাফুজ্জামান সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ সার্কেল।বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কর্মকর্তা মোনায়েম হোসেন বলেন,বৃক্ষ আমাদের পরম বন্ধু,বৃক্ষ ও বন্যপ্রাণীর জীবন নিরাপদ করতে না পারলে এ পৃথিবী একদিন বসবাসের জন্য অনুপযোগী হয়ে পড়বে।তাই নিজেরা নিরাপদে বাঁচতে হলে বৃক্ষ উজাড় নয় বরং বনায়নে মানুষকে উদ্ভোদ্ধ করতে হবে।বন্যপ্রাণী পাখি শিকার সম্পর্কে জনসচেতনতা তৈরী করতে হবে জানিয়ে পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তা আশরাফুজ্জামান বলেন,জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ফাউন্ডেশন টিম যেভাবে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে প্রকৃতি ও বন্যপ্রাণী রক্ষায়,আমি তাদের ধন্যবাদ জানাই।পাশাপাশি বিশ্বাস করি ‘জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ফাউন্ডেশন’ সারাবাংলাদেশে সুনাম অর্জন করবে।
তিনি বলেন উচ্চশিক্ষিত যুবকদের নিয়ে গড়ে ওঠা এই সংগঠন দেশের প্রাণ প্রকৃতি রক্ষায় আরো অনেক দূর এগিয়ে যাবে এটা আমার বিশ্বাস ।এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আফজাল আহমেদ সংগঠনের অন্যতম সদস্য পঙ্কজ নাগ,রূপক দত্ত,সুবাস দাশ তপন, মোহাম্মদ আলামিন,শাওন আহমেদ,মোহাম্মদ রিপন,সুজন মুন্ডা,কামাল হোসেন প্রমুখ।