Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৯ মঙ্গলবার, মার্চ ২০২৪ | ৫ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

পাখি শিকার ছেড়ে দিলেই মিলছে খাদ্যসামগ্রী!

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২০ মে ২০২০, ০২:৪১ AM
আপডেট: ২০ মে ২০২০, ০২:৪১ AM

bdmorning Image Preview


মৌলভীবাজার প্রতিনিধি।। করেনাকালে মৌলভীবাজারের বিভিন্ন উপজেলায় পাখি শিকারি ১০০ টি পরিবারের পাশে খাদ্য সহায়তা নিয়ে পাশে দাঁড়িয়েছেন জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ফাউন্ডেশন,শ্রীমঙ্গল।

আজ মঙ্গলবার (১৯ মে ) সকাল থেকে শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে পেশাদার পাখি শিকার কাজে জড়িত পরিবারের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী ও নগদ অর্থ প্রদান করেছেন সংগঠনটি।খাদ্যদ্রব্যের পাশাপাশি বন্যপ্রাণী ধরা মারা আটকে রাখাসহ এর কুফলগুলো তুলে ধরে লিফলেটের মাধ্যমে সচেতন করে তুলার চেষ্টা করা হয়েছে।শিকারী পেশা থেকে সরে আসায় এসব পরিবার করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের এই কঠিন সময়ে এসে চরম অসহায় জীবযাপন করছেন। তাই এ পেশা ছেড়ে আসা দরিদ্র এ জনগুষ্ঠির প্রায় এক'শ পরিবারের মধ্যে খাদ্য সামগ্রী ও প্রাণপ্রকৃতি রক্ষার সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ করা হয়। এসময় খাদ্য সামগ্রীর সাথে বাড়িতে রোপন করার জন্য প্রত্যেক পরিবারকে একটি করে ওষধি বৃক্ষের চারাও দেয়া হয়।

জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ফাউন্ডেশনের সভাপতি হৃদয় দেবনাথ জানান, ত্রান সামগ্রীর পাশাপাশি প্রত্যেক পরিবারকে প্রাণপ্রকৃতি রক্ষায় জনসচেতনতা তৈরীর জন্য একটি লিফলেট ও একটি করে ওষুধি গাছের চারা বাড়িতে রোপনের জন্য দেয়া হয়েছে '।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ এড়াতে বন্যপ্রাণী রক্ষাসহ বৃক্ষ রোপনের বিকল্প নেই জানিয়ে তিনি বলেন,পৃথিবীতে এখন পর্যন্ত যত ধরণের প্রাকৃতিক দুর্যোগ সৃষ্টি হয়েছে তার জন্য আমরা মানুষরাই দায়ী'।

তাই প্রকৃতির ক্ষতস্থান কিছুটা হলেও লাঘব করতে বাড়ির পরিত্যাক্ত জায়গায় বেশি করে বৃক্ষ রোপন করার জন্য বলেন সাংবাদিক হৃদয়।

তিনি বলেন শুধু তাই নয় গ্রাম এলাকায় প্রত্যেকের বাড়িতেই পরিত্যাক্ত ভূমি রয়েছে আর এসব পরিত্যাক্ত ভূমিতে বনায়নের মাধ্যমে প্রত্যেকেই আর্থিকভাবে যেমন লাভবান হবেন সেই সাথে আমাদের প্রকৃতিও নিরাপদ থাকবে ।

তিনি আরো বলেন,যত বেশি বৃক্ষ রোপন করা হবে ততই তা সমাজ দেশ তথা সমস্ত বিশ্বের উপকার বয়ে নিয়ে আসবে'। প্রত্যেককেই বন্যপ্রাণী পাখি রক্ষা সহ সাধ্যমত নিজের পরিত্যাক্ত ভূমিতে বেশি করে বৃক্ষরোপন করার জন্য অনুরোধ করেন তিনি '।

এ সময় জীববৈচিত্র্য সংগঠন ফাউন্ডেশনের অন্যতম সদস্য তপন চক্রবর্তী,দ্বীপ দে, সুভাষ দাশ তপন,জসিম উদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন '।

সংগঠনের সভাপতি হৃদয় দেবনাথ কর্মহীন অসহায় মানুষদের হাতে খাদ্য সামগ্রী ও একটি করে ওষুধি বৃক্ষের চারা ও একটি বন্যপ্রাণী বিষয়ক সচেতনতামূলক লিফলেট তুলে দেন। এ ব্যাপারে হৃদয় দেবনাথ বলেন, আমাদের সামর্থ্য কম থাকতে পারে কিন্তু সবাই যার যার অবস্থান থেকে চেষ্টা করলে এবং সচেতন হলে করোনার কারণে ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের দুর্ভোগ কমিয়ে আনা সম্ভব।ত্রাণসামগ্রীর পাশাপাশি ওষুধি বৃক্ষ পেয়ে সকলেই খুব খুশি হয়েছেন '।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ফাউন্ডেশন এর অন্যতম সদস্য সংবাদকর্মী সুভাষ দাস তপন,দ্বীপ দে,তপন চক্রবর্তী,মো জসিম উদ্দিন,রিমন ইসলাম প্রমুখ।

ওয়াইল্ডলাইফ ক্রাইম কন্ট্রোল ডিভিশনের পরিচালক এ এস এম জহির আকন জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ফাউন্ডেশের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন,এ তরুণদের ব্যাতিক্রমী ভাবনা এবং প্রতিনিয়ত শিকারির কাছ থেকে বন্যপ্রাণী ও পাখি উদ্ধারসহ হাইল হাওর এলাকায় জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম নিঃসন্দেহে দারুন কাজ করছে।তিনি আরো বলেন তাদের কর্মকান্ডের ফলে মৌলভীবাজার জেলায় পাখি শিকার এখন অনেকটাই কমেছে । তিনি জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ফাউন্ডেশনের ভবিষ্যৎ সফলতা কামনা করে পাশে থাকার প্রত্যয় ব্যাক্ত করেন ।

বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আনম আব্দুল ওয়াদুদ বলেন,সাংবাদিক হৃদয় দেবনাথ এর নেতৃত্বে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ফাউন্ডেশন সংগঠনটি যেভাবে ধারাবাহিক সফলতার সাথে কাজ করে যাচ্ছে আমরা বন বিভাগ সত্যিই মুগ্ধ।

তিনি বলেন জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ফাউন্ডেশনের তারুণ্যদীপ্ত এ টিমটি বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে বেশ ভালো ভূমিকা রাখছে । সংগঠনের সফলতা কামনা করেন তিনি ।

মৌলভীবাজার জেলাপ্রশাসক নাজিয়া শিরিন বলেন,দীর্ঘদিন ধরেই সংবাদমাধ্যমে দেখছি সাংবাদিক হৃদয় দেবনাথ এর নেতৃত্বে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ফাউন্ডেশন টিম নানান প্রান্ত থেকে ঝুঁকি নিয়ে চোরা শিকারিদের কাছ থেকে পাখিসহ বিভিন্ন বন্যপ্রাণী উদ্ধার করে অবমুক্ত করছেন। নিঃসন্দেহে প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষা করতে তাদের ভূমিকা চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে ।

উপজেলা নির্বাহীকর্মকর্তা মো নজরুল ইসলাম বলেন,সাংবাদিক হৃদয়ের প্রকৃতির প্রতি যে ভালোবাসা তা সত্যিই প্রশংসার দাবী রাখে'।তিনি বলেন তার এই ব্যাতিক্রমী উদ্যোগ দেখে আশা করছি আরো অনেকেই উদ্ভুদ্ধ হবে '। 

Bootstrap Image Preview