সাভারে দেড় বছরের সন্তানের জন্য দুধ কিনতে মাথার চুল বিক্রি করে দেওয়ার খবরকে মিথ্যা দাবি করেছে স্থানীয় প্রশাসন। সাভারের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পারভেজুর রহমান এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে দাবি করেছেন, এই সন্তানের জন্য এই নারীর চুল বিক্রির তথ্য মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তিনি দাবি করেন, তারা তদন্তে এর প্রমাণ পেয়েছেন।
ইউএনও পারভেজুর রহমান বুধবার (২২ এপ্রিল) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে দাবি করেন, বুধবার (২২ এপ্রিল) সকালে ওই নারীর সঙ্গে কথা বলে তারা জেনেছেন ওই নারী দেড় মাসে চুল কাটেন এবং দেড় মাস আগেই তিনি এই এলাকায় আসেন। এর আগে মঙ্গলবার ঘটনা তাৎক্ষণিক শুনে সহকারী কমিশনার ভূমি ওই নারীকে সরকারের পক্ষ থেকে ত্রাণ দিয়ে আসেন। তবে এই কর্মকর্তার বক্তব্য গণমাধ্যমে পুরো উঠে আসেনি, আংশিক প্রকাশিত হওয়ায় সঠিক তথ্য উঠে আসেনি। তিনি সন্তানের দুধের জন্য চুল কাটার খবরটিকে মিথ্যা দাবি করেন।
এবিষয়ে জানতে তাকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
অন্যদিকে ঘটনাস্থলে পরিদর্শন শেষে ঢাকার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মাহমুদুল হক বলেন, এই নারী এই দুই মাস আগে সাভারে এসেছেন। আপনারা জানেন যে ফেরি করে অনেকেই চুল কেনেন, এটা আমারও জানা ছিল না। গতকাল থেকে উপজেলা প্রশাসন ও অন্যান্য জায়গা এবং সংগঠন থেকে অনেক সহায়তা করা হয়েছে। সে এখানকার স্থানীয় নারীও না। তাকে জনপ্রতিনিধিরা চিনবেনও না। মাত্র কিছু দিন আগে উনি এখানে এসেছেন। সরকার যে সাধারণ ছুটি ঘোষনা করেছে এই ঘটনাটি তার আগের ঘটনা। দেড় মাসের আগের ঘটনা বলে তারা জানতে পেরেছে। বিভিন্ন মিডিয়া গত দুই দিনের যে ঘটনা বলে উল্লেখ করা হয়েছে, তা দুঃখজনক।’
ওই নারী নিজে, তার স্বামী, প্রতিবেশী, স্থানীয় মেয়র, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বুধবার (২২ এপ্রিল) দাবি করেছেন, সন্তানের খাবার কেনার জন্য চুল কেটে বিক্রির ঘটনা সত্য।
বুধবার সকালে বুধবার সকালে ব্যাংক কলোনী এলাকার বাসায় ভুক্তভোগী সাথী বেগম বলেন, ‘অভাবের তাড়নায় করোনার লকডাউনের মধ্যেই নিজের শিশু সন্তানের দুধ কেনার জন্য টাকা খুঁজছিলাম। একজন জানায় চুল বিক্রি করলে টাকা মিলবে। এ জন্য মাথার চুল কেটে রাখি। পরে স্থানীয় হকারের কাছে ১৮০ টাকায় সেই চুল বিক্রি করি। এই টাকা দিয়ে দুধ ও এক কেজি চাল কিনে আনি।’
ওই নারী জানান, এলাকার আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ নেতাকর্মীরা তাকে এই ঘটনা সাংবাদিকদের জানানোর জন্য হুমকিধামকি দিয়েছে।
সাভার উপজেলা চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল আলম রাজীব বলেন, ‘খবর পেয়ে মঙ্গলবার রাতেই ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই নারীর সঙ্গে কথা বলে ঘটনার সত্যতা খুঁজে পেয়েছি। আমি নগদ টাকাসহ খাদ্য সহযোগিতা করেছি।’
সাভার উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাসিনা দৌলা বলেন, ‘একজন নারী খুব অসহায় অবস্থায় না পড়লে তার মাথার চুল কেটে বিক্রি করে না। তার এই অবস্থায় সবার সহযোগিতা করা দরকার। আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের স্থানীয় কিছু নেতা লোকজন নিয়ে বাড়িতে গিয়ে ওই নারীকে ভয়ভীতি দেখিয়ে অন্যায় কার করেছে। যা তারা কখনোই করতে পারে না।‘