Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৮ বৃহস্পতিবার, মার্চ ২০২৪ | ১৪ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

চাকরি নিতে গোপনে ২ বিয়ে করে বাড়িছাড়া ফায়ার সার্ভিসকর্মী

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২০, ০৯:১৪ PM
আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২০, ০৯:১৪ PM

bdmorning Image Preview


ঢাকার ধামরাইয়ে চাকরি নিতে ঘুষের ১২ লাখ টাকা সংগ্রহের জন্য গোপনে দুই বিয়ে করে বিপাকে পড়েছেন এক ফায়ার সার্ভিসকর্মী। সদ্য সমাপ্ত ফায়ার সার্ভিসের নিয়োগে চাকরি পাওয়া ওই কর্মী এখন দুই স্ত্রীর টানাপোড়েনে শেষ পর্যন্ত বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন।

অপরদিকে ওই দুই স্ত্রীর মধ্যে চলছে চুলাচুলি ও তুমুল ঝগড়া-বিবাদ। সব মিলিয়ে বাড়িটি যেন নরকে পরিণত হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে বালিয়া ইউনিয়নের ইন্দরা গ্রামে। এ সব ঘটনা দেখতে শত শত উৎসুক গ্রামবাসী ওই বাড়িতে ভিড় জমাচ্ছেন।

এলাকাবাসী জানান, ফায়ার সার্ভিসের সদ্য সমাপ্ত নিয়োগে চাকরি নিতে উক্ত গ্রামের মো. আব্দুল খালেক বাদ্যকরের ছেলে আলামিন হোসেন বাদ্যকরকে নগদ ১২ লাখ টাকা ঘুষ দিতে হয় এক দালালকে। বাবার এত টাকা জোগাড়ের কোনো সামর্থ্য না থাকায় ওই ফায়ার সার্ভিস কর্মী আলামিন হোসেন কৌশলে গোপনে দুটি বিয়ে করে ঘুষের ১২ লাখ টাকা জোগাড় করেন।

এরপর ওই ফায়ার সার্ভিস কর্মী প্রশিক্ষণে চলে যান। এর মধ্যে কোনো স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ না করলে তারা ক্ষুব্ধ হয়ে গত বুধবার একে একে ওই ফায়ার সার্ভিস কর্মীর বাড়িতে চলে আসেন। তারা আলামিনের পরিবারের কাছে বিয়ের বিষয়টি ফাঁস করেন।

এ দিকে ফায়ার সার্ভিস কর্মীর স্ত্রীর দাবিদার দুইজনের মধ্যে শুরু হয়ে যায় চুলাচুলি ও ভীষণ ঝগড়াঝাটি। এতে পরিবারের সদস্যরা পড়েন মহাবিপাকে।

স্ত্রী দাবিদার দু'জনকে কোনোমতেই সামাল দিতে না পেরে ফায়ার সার্ভিস কর্মী আলামিন হোসেনের কাছে বিষয়টি গোপন রেখে তাকে কৌশলে বাড়ি ডেকে আনা হয় মঙ্গলবার সকালে। বাড়িতে আসা মাত্রই স্ত্রী দাবিদার ওই দুই তরুণী আলামিনের দুই হাত ধরে টানা-হেঁচড়া শুরু করে দেয়। আর তারা বলতে থাকে বল তুমি কাকে বিয়ে করেছ।

এমন অবস্থায় কোনো জবাব নেই আলামিনের মুখে। তিনি স্তব্ধ হয়ে যান তার গোপনে বিয়ে করা ওই দুই স্ত্রীর আচরণে। দিনভর চলে এমন টানাপোড়েন। কেউ সামাল দিতে পারেননি এ ঘটনা। পরিশেষে টয়লেটে যাওয়ার কথা বলে বিকাল ৫টার দিকে ওই ফায়ার সার্ভিস কর্মী আলামিন হোসেন বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান।

স্ত্রী দাবিদার ওই দুই তরুণীর নাম সুমাইয়া আক্তার ও রেখা আক্তার। সুমাইয়া আমতার গ্রামের মো. জালাউদ্দিনের মেয়ে আর রেখা আক্তার আশুলিয়া থানার কাঠগড়া এলাকার রজ্জব আলীর মেয়ে বলে জানা গেছে।

সুমাইয়া আক্তার বলেন, আলামিন চাকরি নেয়ার জন্য ঘুষ দেয়ার কথা বলে ৮ লাখ টাকা নিয়ে আমাকে গোপনে বিয়ে করেছে। এখন আবার শুনি সে গোপনে আরেকজনকে একই কৌশলে বিয়ে করেছে। আমি ওকে ছাড়ব না। আমার কাবিন থাকা পর্যন্ত আমি এই বাড়ি ছেড়ে যাব না।

এ ব্যাপারে রেখা আক্তার বলেন, চাকরি নেবে বলে ঘুষের জন্য আমার কাছ থেকে ৬ লাখ টাকা নিয়েছে আলামিন। সে আমাকে গোপনে বিয়ে করেছে। এখন দেখি ও আমাদের দুইজনের সঙ্গেই চরম প্রতারণা করেছে। আমি এর শেষ দেখে ছাড়ব। ওকে কোনোভাবেই আমি ছাড়ব না।

এ ব্যাপারে আলামিন হোসেনের পক্ষের মাতব্বর ও আওয়ামী লীগ নেতা মো. আব্দুল গণি সুমন বলেন, বিষয়টি খুবই জটিল হয়ে গেছে। প্রথম দিকে একজন এসে স্ত্রীর দাবিতে অনশন শুরু করে। পরবর্তী মসয়ে আরেকজন এসে একই দাবিতে রণক্ষেত্র পরিণত করে।

যখন কৌশলে আলামিনকে ডেকে বাড়ি আনা হল তখন দুই স্ত্রীর অত্যাচারে সে বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে গেছে। এতে পরিস্থিতি আরও জটিল থেকে জটিল আকার ধারণ করেছে। এখন কি করব তা ভেবে স্থির করতে পারছি না।

Bootstrap Image Preview