নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের মহাসড়কজুড়েই রয়েছে চোরাই তেল ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট। খুপড়ি ঘরের সামনে কিছু তেলের ড্রাম আর পাইপ ঝুলানো দেখলেই চুরি করে তেল বিক্রি করে দেন অসাধু চালক। এসব অবৈধ কাজে একটি চাঁদাবাজ চক্র।
সরেজমিন দেখা গেছে, উপজেলার উপর দিয়ে যাওয়া ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের তারাবো পৌর এলাকায় হাটিপাড়া রোলিং মিলের সামনে কয়েকটি খুপড়ি ঘরে দেদারছে চলছে চোরাই তেল বাণিজ্য। একই চিত্র এ রোডের রূপসী, বরপা, গোলাকান্দাইলসহ ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে। সবচেয়ে ভয়াবহ পরিবেশ পূর্বাচলে। রাজউকের নির্মাণাধীন পূর্বাচল নতুন শহর সীমানায় রয়েছে ৩০০ ফুট খ্যাত সড়ক এবং ঢাকা বাইপাস এশিয়ান মহাসড়ক। ঢাকা বাইপাস মহাসড়কের গোলাকান্দাইল মোড় থেকে কালীগঞ্জের উলুখোলা পর্যন্ত রয়েছে ২৪টি খুপড়ি ঘর। এছাড়াও ৩০০ ফুট সড়কে রয়েছে আরো ১৭টি দোকান। এসব ঘরে একই কায়দায় বৃহৎ তেলবাহী গাড়ি থেকে নামানো হয় বিপুল পরিমাণ তেল। এসব তেল যায় স্থানীয় বাজারে পাইকারি দরে। ভোজ্য ও জ্বালানি উভয় তেল নামানো হয় এ রোডে। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বৈধ তেল ব্যবসায়ীরা।
৩০০ ফুট ও এশিয়ান রোডে এমন চোরাই তেল ব্যবসায়ীর মধ্যে রয়েছেন- সুরিয়াবো এলাকার নাজমুল, হাবিবনগর এলাকার ফয়সাল, সুরিয়াবোর হুসেন, ওমর ফারুক, কাঞ্চনের সামসুলের মালিকানায় মায়ার বাড়ি ও পূর্বাচলের লালমাটি, হঠাৎ মার্কেটের খুকুমনি, লালমাটির সজীব, রাজীব, মাঝিপাড়ার সুমন, সোলাইমান, কালনী স্ট্যান্ড এলাকায় মুহম্মদ আলী, মফিজুল, নাজমুল, পলখানের শরীফ, সোলমান, রাকিব, নীলা মার্কেট এলাকায় রতন, কাশেম, হাতিম। এসব দোকানে প্রকাশ্যে চোরাই তেল নামানোর কাজ।
অভিযুযক্ত চোরাই তেল ব্যবসায়ী নাজমুল বলেন, মালবাহী ট্রাকের চালক ও আমাদের উভয় পক্ষের সমঝোতায় তেল টাকা দিয়ে ক্রয় করি। এতে চোরাই বলে কিছু নেই।
তেল বিক্রির অনুমোদন আছে কিনা জানতেই চাইলে তিনি বলেন, পূর্বাচলে ইয়াসিনের ছাড়া কারোই লাইসেন্স নেই। ডিপো লাইসেন্স একমাত্র ইয়াসিনের আছে। মাঝে-মধ্যে আমরাও ইয়াসিনের মাধ্যমে বৈধ তেল দোকানে রাখি। তবে এসব দোকান চালাতে গিয়ে অনেককেই খুশি করতে হয়।
এ প্রসঙ্গে র্যাব-১, সিপিসি ৩ এর কমান্ডার মেজর আব্দুল্লাহ আল মেহেদী বলেন, আমি দায়িত্ব নেয়ার পরপরই এসব চোরাই তেল ব্যবসায়ীদের খুপড়ি ঘর উচ্ছেদের উদ্যোগ নিয়েছি। একাধিকবার অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এদের কাছ থেকে ভোজ্য ও জ্বালানি তেল উদ্ধার, ২২ চোরাই তেল ব্যবসায়ী গ্রেপ্তার, তাদের বিরুদ্ধে বিদ্যমান আইনে মামলা দিয়েছি। সেসব মামলা চলমান। তবুও কী কারণে আবার সক্রিয় হচ্ছে- তা ঊর্ধ্বতন মহলকে জানিয়ে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হাসান বলেন, মহাসড়কের আশপাশে ও পূর্বাচলে কিছু অবৈধ চোরাই তেল ব্যবসায়ী রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আবার আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
চোরাই তেলে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে থানা প্রশাসন কোনো অবৈধ লেনদেনে জড়িত নয় বলে দাবি করেন তিনি।
রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মমতাজ বেগম বলেন, শিগগিরই এসব অবৈধ চোরাই তেল ব্যবসায়ী ও খুপড়ি ঘর উচ্ছেদে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে।