Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২০ শনিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

দোয়া কবুল হয় যে সময়

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০১ ফেব্রুয়ারী ২০২০, ০৪:৪৯ PM
আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারী ২০২০, ০৪:৪৯ PM

bdmorning Image Preview


দোয়া ইসলামের অন্যতম ইবাদত। হাদিস শরিফে দোয়াকে ইবাদতের মগজ আখ্যায়িত করা হয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) যেকোনো প্রতিকূল পরিস্থিতির সম্মুখীন হলে দোয়ায় মত্ত হয়ে যেতেন। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘যখন তোমার কাছে আমার বান্দা আমার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে (তখন বলে দাও যে) নিশ্চয়ই আমি তাদের কাছে। প্রার্থনাকারী যখন আমাকে ডাকে, তখন আমি তার ডাকে সাড়া দিই। সুতরাং তারাও যেন আমার ডাকে সাড়া দেয় ও ঈমান আনয়ন করে, আশা করা যায় তারা সফলকাম হবে।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৮৬)

দোয়া করার জন্য আল্লাহর ওলি হওয়া জরুরি নয়। যেকোনো পাপী বান্দার দোয়াও মহান আল্লাহ কবুল করেন।

অভিশপ্ত শয়তান আদম (আ.)-এর সামনে সিজদা করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল। এর শাস্তিস্বরূপ কিয়ামত অবধি তাকে অভিশপ্ত করা হয়েছে। এমন মুহূর্তেও সে আল্লাহর কাছে দোয়া করেছে। সে আল্লাহর কাছে কিয়ামত পর্যন্ত বেঁচে থাকার দোয়া করেছে। মহান আল্লাহ তার দোয়া কবুল করেছেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘আল্লাহ সৃষ্টিজগৎ সৃষ্টি করার পর আরশে লিখে দিয়েছেন যে আমার রহমত আমার ক্রোধের ওপর অগ্রগামী হয়ে গেছে।’ (মুসলিম, হাদিস : ২৭৫১)

নিচে দোয়া কবুলের কিছু গুরুত্বপূর্ণ সময় নিয়ে আলোচনা করা হলো—

জুমার দিন : শুক্রবার দোয়া কবুলের দিবস। জুমার দিন ইমাম খুতবা দেওয়ার জন্য মিম্বরে বসা থেকে নিয়ে নামাজ আদায় পর্যন্ত সময়ে দোয়া কবুল হয়। এভাবে আসরের পর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়টি গুরুত্বপূর্ণ। এ সময় দোয়া কবুল হয়। রাসুল (সা.) বলেন, ‘জুমার দিন এমন একটি মুহূর্ত আছে, যেই মুহূর্তে বান্দা যা প্রার্থনা করবে তিনি তাই দেবেন।’ (বুখারি, হাদিস : ৬৪০০, মুসলিম, হাদিস : ১৪০৭)

ওলামায়ে কেরাম এ হাদিসের ব্যাখ্যায় বলেছেন, এই বিশেষ মুহূর্ত থেকে উপকৃত হতে মুমিন ব্যক্তির উচিত মাগরিবের আগে বেশি বেশি দোয়া ও ইস্তেগফার করা।

হজের মৌসুমে : হজের মৌসুম তথা জিলহজের প্রথম দশকে ও আরাফার দিবসে দোয়া কবুল হয়। কারণ আরাফা ও জিলহজের প্রথম দশকের মাহাত্ম্য ও শ্রেষ্ঠত্ব অনেক বেশি। প্রিয়নবী (সা.) বলেন, ‘জিলহজের এ দশকে সম্পাদিত আমল থেকে আল্লাহর কাছে উত্তম কোনো আমল নেই। সাহাবায়ে কেরাম প্রশ্ন করেন, তাহলে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদও কি নয়? তিনি বলেন, না, আল্লাহর রাস্তায় জিহাদও নয়। তবে কোনো ব্যক্তি যদি জান-মাল নিয়ে আল্লাহর পথে বের হয় অতঃপর জিহাদের ময়দান থেকে কিছুই নিয়ে না ফিরে।’ (অর্থাৎ শহীদ হয়ে যায়, তাহলে সে ব্যক্তি ব্যতিক্রম) (মুসনাদে আবি ইয়ালা, হাদিস : ২০৯০)

রমজান মাসে : রমজান মাস অতি বরকতময়। রমজানে ইফতারের সময় দোয়া কবুল হয়। এ ছাড়া আছে মহিমান্বিত কদর রজনী। এ রজনী হাজার রাত থেকে উত্তম। বরকতময় এ রজনীতে ফেরেশতারা বান্দার দোয়া আল্লাহর দরবারে নিয়ে যান।

শেষ রাতে : শেষ রজনী দোয়া কবুলের বিশেষ মুহূর্ত। কেননা এ সময় আল্লাহ দুনিয়ার আকাশে অবতরণ করেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, মহান আল্লাহ প্রতি রাতের শেষ প্রহরে (যখন রাতের এক-তৃতীয়াংশ বাকি থাকে) দুনিয়ার আকাশে অবতরণ করেন। তিনি তখন বলেন, ‘আছ কি কোনো আহ্বানকারী? আমি তোমার ডাকে সাড়া দেব। কোনো প্রার্থনাকারী কি আছো, আমি তোমাকে যা চাও তা দেব? কেউ কি ক্ষমা প্রার্থনা করবে, আমি তোমাকে ক্ষমা করে দেব।’ (মুসলিম, হাদিস : ৭৫৮)

আজান-ইকামতের মধ্যবর্তী সময়ে : এভাবে আজান-ইকামতের মধ্যবর্তী সময়ে দোয়া কবুল হয়। কেননা রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আজান ও ইকামতের মধ্যবর্তী দোয়া ফিরিয়ে দেওয়া হয় না। (তিরমিজি, হাদিস : ২১২)

ফরজ নামাজের পর : হজরত আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত, একবার রাসুল (সা.)-কে জিজ্ঞেস করা হলো, হে আল্লাহর রাসুল! কোন সময়ের দোয়া দ্রুত কবুল হয়? তিনি উত্তর দিলেন, রাতের শেষ সময়ে এবং ফরজ নামাজের পর। (তিরমিজি, হাদিস : ৩৪৯৮)

এ ছাড়া রোগাক্রান্ত অবস্থায়, বালামুসিবতের সময়, দূরবর্তী সফরের সময় ও মা-বাবার দোয়া কবুল হয় বলে হাদিসে এসেছে। আর দোয়া কবুলের দৃঢ় আত্মবিশ্বাস রাখা চাই। এবং অব্যাহত দোয়ায় মত্ত থাকা চাই।

মহান আল্লাহ আমাদের আমল করার তাওফিক দান করুন।

Bootstrap Image Preview