Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৫ বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

ওপরে আল্লাহ নিচে আমি, মেয়র থাকি বা না থাকি টাকা আপনারা পাবেনঃ চট্টগ্রাম সিটি মেয়র

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৮ জানুয়ারী ২০২০, ০৬:৪৬ PM
আপডেট: ২৮ জানুয়ারী ২০২০, ০৬:৪৬ PM

bdmorning Image Preview


চট্টগ্রাম নগরের বারইপাড়া থেকে কর্ণফুলী নদী পর্যন্ত নতুন খাল খননে ক্ষতিগ্রস্থদের ক্ষতিপূরণের টাকা শতভাগ পরিশোধ করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন। তিনি বলেছেন, ‘কিছু আইনি প্রক্রিয়া আছে সেগুলো সম্পাদন করে জেলা প্রশাসন টাকাটা দেবে। আমি একজন জনপ্রতিনিধি। আমি আমলা নই। জনগণের কাছে আমার মুখোমুখি হতে হবে। ক্ষতিগ্রস্তরা তাদের ক্ষতিপূরণের শতভাগ টাকা পাবেন। মেয়র থাকি বা না থাকি, আমার দায়বদ্ধতা আছে। ওপরে আল্লাহ, নিচে আমি। আপনারা টাকা পাবেন।’

মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) সকালে পূর্ব বাকলিয়া ওয়াইজের পাড়া এলাকায় খাল খনন কাজের উদ্বোধন করে সিটি মেয়র এসব কথা বলেন। মেয়র বলেন, ‘আজ প্রকল্পের কাজ উদ্বোধন করতে আসার আগেও ডিসি মহোদয়ের সঙ্গে কথা হয়েছে। তাকে বলেছি যত দ্রুত সম্ভব আমাদের ক্ষতিগ্রস্থদের টাকা দেয়ার ব্যবস্থা করুন। আমি আপনাদের সাথে আছি। আমার কাছে তালিকা আছে কে কতটুকু জায়গা দিয়েছেন। কত টাকা পাবেন। সে অনুযায়ী সবার টাকা পরিশোধ করা হবে।’

প্রকল্পের অগ্রগতি নিয়ে মেয়র বলেন, ‘যখন প্রকল্প অনুমোদন হয়েছিল, সেটি ছিল ৩২৬ কোটি ২৪ লাখ ৮১ হাজার টাকা। পরে আমি যখন দায়িত্ব গ্রহণ করি তখন দেখা গেল ভূমি মন্ত্রণালয় এই জায়গার ক্ষতিপূরন দ্বিগুণ করেছে। আগে ছিল মৌজা রেটের দেড় গুন, এখন করা হয়েছে তিনগুন। এ কারণে প্রকল্প ব্যয় বেড়ে গেছে। যে পরিমাণ জায়গা অধিগ্রহণ প্রয়োজন, এই টাকা দিয়ে তা সম্ভব হচ্ছে না।’

তিনি বলেন, ‘এর আগে আবার আমরা নগরের জলাবদ্ধতা নিরসনে ওয়াসা ও ওয়ার্ল্ড ব্যাংকসহ এমইউ করেছিলাম, এ সময় এই খালের প্রয়োজন আছে কি নাই তা নিয়ে মতপার্থক্য দেখা দেয়। পরবর্তীতে আমরা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলে সীদ্ধান্ত নিই খালটা করা হবে। যারা মাস্টার প্ল্যান প্রণয়ন করেছেন তাদের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়। জলাবদ্ধতা নিরসনে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হলে, এই এলাকার মানুষদের জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি দিতে হলে চাক্তাই খালের পাশাপাশি আরেকটি নতুন খালের বিকল্প নেই। তখন আমরা আবার নতুন করে শুরু করলাম।’

সিটি মেয়র বলেন, ‘বর্তমানে প্রকল্প ব্যয় ১২শ ৫৬ কোটি ১৫ লাখ ৫৬ হাজার টাকায় উন্নীত হয়েছে। এটা একনেকে অনুমোদন হয়েছে ২০১৭ সালের নভেম্বরে। আপনারা জানেন জায়গা অধিগ্রহণ প্রক্রিয়াটি একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া। একই সাথে জায়গার যে ক্ষতিপূরণ, আইন অনুযায়ী জেলা প্রশাসনের কাছে টাকাটা হস্তান্তর না করলে জেলা প্রশাসন অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু করে না। এরপরে ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন নিয়ে আসার পরেই মূলত এই কাজটা শুরু করেছি আমরা।’

তিনি বলেন, ‘যে দুটো লটের কাজ শুরু করেছি সে টাকা জেলা প্রশাসনে আছে। জায়গার ক্ষতিপূরণ বাবদ আমরা যে টাকাটা পেয়েছি, ৮শ ৩১ কোটি টাকা, সেগুলো আমরা আজ থেকে ৬ মাস আগে জেলা প্রশাসনকে বুঝিয়ে দিয়েছি। কিছু আইনি প্রক্রিয়া আছে সেগুলো সম্পাদন করে জেলা প্রশাসন টাকাটা দেবে।’

নতুন এ খাল নগরের জলাবদ্ধতা নিরসন ও সৌন্দর্যবর্ধনে অবদান রাখবে জানিয়ে মেয়র বলেন, ‘এ খালটি হবে নয়নাভিরাম একটি খাল, যা দেশের অন্য কোথাও নেই। খালটির দৈর্ঘ্য হবে আনুমানিক ২ দশমিক ৯ কিলোমিটার এবং প্রশস্থ ৬৫ ফুট। খালটির মাটি উত্তোলন, সংস্কার ও নতুন যোগাযোগ ব্যবস্থা সৃষ্টির লক্ষ্যে খালের উভয় পাশে ২০ ফুট করে দু’টি রাস্তা ও ওয়াকওয়ে নির্মাণ এবং সৌন্দর্যবর্ধন করা হবে। নতুন খাল খনন প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে নগরের বিস্তীর্ণ এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসন হবে। প্রকল্পটি পুরোপুরি বাস্তবায়িত হলে পূর্ব-পশ্চিম ষোলশহর, চান্দগাঁও, মোহরা, উত্তর-দক্ষিণ-পূর্ব-পশ্চিম বাকলিয়া ও চকবাজারে জলাবদ্ধতা নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’

এসময় উপস্থিত ছিলেন প্যানেল মেয়র জোবাইরা নার্গিস খান, কাউন্সিলর এম আশরাফুল আলম, প্রধান প্রকৌশলী লে. কর্ণেল সোহেল আহমদ, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিক, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ প্রমুখ।

Bootstrap Image Preview