ইসলামি প্রজাতন্ত্রে মার্কিন আগ্রাসনের জন্য দুঃখ প্রকাশ ও ক্ষমা চেয়ে ইরানি জনগণের কাছে খোলা চিঠি পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের একটি সংগঠন। সোমবার (২৭ জানুয়ারি) ‘কোড পিঙ্ক’ নামে ওই সংগঠনটির পাঠানো চিঠিতে অন্তত ১০ হাজারের অধিক মার্কিনি স্বাক্ষর করেছেন বলে জানা যায়।
ইরানি সংবাদমাধ্যম প্রেস টিভি জানিয়েছে, সম্প্রতি ইরাকের বাগদাদ শহরে বিমান হামলা চালিয়ে ইরানি জেনারেল কাসেম সোলাইমানিকে হত্যা করে যুক্তরাষ্ট্র। বিষয়টি নিয়ে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যে কাণ্ডজ্ঞানহীন ও বর্বর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ‘কোড পিঙ্কে’র পক্ষ থেকে মূলত সে জন্যই দুঃখ প্রকাশ করা হয়।
১০ হাজার মার্কিনির স্বাক্ষর করা চিঠিতে বলা ছিল, আমেরিকা বিশ্বের সব মানুষের শান্তি ও নিরাপত্তা প্রদানের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এই কাণ্ডজ্ঞানহীন সিদ্ধান্ত কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়। তাই আমরা সকল ইরানি জনগণের কাছে ক্ষমা চাইছি।
চিঠিতে আরও বলা হয়, মধ্যপ্রাচ্যে ট্রাম্পের আগ্রাসন বন্ধের জন্য যে ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন আমরা তার সব কিছুই করব। একই সঙ্গে ইরানের ওপর দিন দিন যে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে তা বাতিল করে তেহরানের সঙ্গে একটি ভালো কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করা হবে।
‘কোড পিঙ্কের’ চিঠিটি ইংরেজি ও ফারসি দুই ভাষাতেই লেখা ছিল। এবার চিঠির পাশাপাশি একটি ভিডিও বার্তাও পাঠিয়েছে সংগঠনটি।
সেখানে বলা হয়, আমেরিকার জনগণ কখনোই ইরানের সঙ্গে যুদ্ধ চায় না। বরং আমরা শান্তি ও সম্প্রীতির সঙ্গে বসবাস করতে চাই। দয়া করে আপনারা আমাদের বন্ধুত্বের হাতকে গ্রহণ করুন।
এর আগে ৩ জানুয়ারি ভোরে ইরাকের বাগদাদ শহরের বিমানবন্দরে মার্কিন বিমান হামলায় ইরানি জেনারেল কাসেম সোলাইমানি নিহত হন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নির্দেশে চালানো সেই অভিযানে তেহরান সমর্থিত পপুলার মবিলাইজেশন ফোর্সেসের (পিএমএফ) উপপ্রধান আবু মাহদি আল-মুহান্দিসসহ বাহিনীর বেশ কয়েকজন সদস্য প্রাণ হারান।
সোলাইমানি হত্যার প্রতিশোধ হিসেবে গত ৮ জানুয়ারি ভোররাতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। এরপর ধারণা করা হচ্ছিল, ইরানের বিরুদ্ধে কঠিন কোনো পদক্ষেপই হয়তো নেবেন ট্রাম্প। যদিও বাস্তবে তা ঘটেনি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ইরানকে আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছেন।
আলোচনার প্রস্তাব দেওয়ার পরও যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে এখনো উত্তেজনা বিরাজ করছে।