Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৯ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

ভারতে ফেরত পাঠানো হল আজহারীর মাহফিলে ধর্মান্তরিত সেই ১২ জনকে

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৭ জানুয়ারী ২০২০, ১০:৩৯ PM
আপডেট: ২৭ জানুয়ারী ২০২০, ১০:৩৯ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত


লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে ওয়াজ মাহফিলে ধর্মান্তরিত সেই ১২ নারী-পুরুষকে বিশেষ নিরাপত্তার মাধ্যমে যশোরের বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারতে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।

সোমবার (২৭ জানুয়ারি) বিকেলে রামগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশ জানায়, ধর্মান্তরিত মনির হোসেনসহ (হিন্দু নাম শঙ্কর অধিকারী) ১২ জনের কাছ থেকে ভারতের বৈধ পাসপোর্ট পাওয়া গেছে। তারা ভারতের নাগরিক। দুই মাসের ভিসা নিয়ে ২০১৯ সালের ১৪ আগস্ট যশোরের বেনাপোল হয়ে তারা বাংলাদেশে আসে।

কিন্তু ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও তারা ভারত ফিরে যায়নি। গত ডিসেম্বরে তারা ঢাকার কেরাণীগঞ্জ থেকে বাংলাদেশি জন্মসনদ তৈরি করেছে। যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই তাদেরকে ভারত পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।

ধর্মান্তরিত মনির হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ২ মাসের ভিসা নিয়ে আমরা বাংলাদেশে প্রবেশ করি। এরপর আমি স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার ইছাপুর গ্রামে আসি। ভারত আর ফেরত যেতে চাই না। পুলিশ আমাদের ঢাকা নিয়ে যাওয়ার কথা বলে বেনাপোল দিয়ে ভারত পাঠাচ্ছে। আমরা ভারত গিয়ে কি করবো? সবকিছু বিক্রি করে আমরা বাংলাদেশে এসে মুসলমান হয়েছি।

বেনাপোল ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুম বিল্লাহ স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, তারা পাসপোর্টধারী যাত্রী। নিয়ম অনুযায়ী ইমিগ্রেশনের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে তারা ভারতে ফিরে গেছে। কোনো সমস্যা থাকলে আমরা বিষয়টি দেখতাম।

জানা গেছে, শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) উপজেলার পানপাড়া এলাকার ওয়াজ মাহফিলে ইসলামী বক্তা ছিলেন মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারী ও আমির হামযাসহ কয়েকজন আলেম। সেখানে মাহফিলের আয়োজকদের মাধ্যমে মনির হোসেনসহ তার পরিবারের ১২ জন সদস্য ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন।

হিন্দু ধর্ম ছেড়ে ইসলাম গ্রহণ করায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিওটি ভাইরাল হয়। এর প্রেক্ষিতে খোঁজ নিতে গিয়ে পুলিশ তাদেরকে ভারতীয় পাসপোর্টসহ গ্রেফতার করে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মনির প্রায় ৩৫ বছর আগে ঢাকার টঙ্গীতে খালা হালিমার কাছে থাকতো। তখন সে ঝালমুড়ি বিক্রি করতো। ওইসময় তার বয়স প্রায় ১৪ বছর ছিল। বিশ্ব ইজতেমায় মুড়ি বিক্রি করতে গিয়ে একদিন সে হারিয়ে যায়। এরপরে তার আর কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। মনির রামগঞ্জ উপজেলার ইছাপুর ইউনিয়নের ডাক্তার বাড়ির মজিবুল হক ও বর্তমান সংরক্ষিত ইউপি সদস্য ফাতেমা বেগমের বড় ছেলে।

এ বিষয়ে ফাতেমার ছোট ছেলে জহির উদ্দিন বলেন, মনির ২০১৬ সালে দেশে একা এসেছিলেন। কিন্তু হিন্দু হয়ে গেছেন জেনে আমরা তাকে দুইদিনের বেশি বাড়িতে থাকতে দেইনি। পরে তিনি ফের কলকাতায় চলে যান। এরপরে তিনি স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে ভারত থেকে চলে আসতে চেষ্টা করেন।

২০১৯ সালের মাঝামাঝি সময়ে তিনি স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে দেশে চলে আসেন। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে তিনি মুসলমান হতে চাইলে আমরা খুশি হই। এরপরই গত সপ্তাহে আনুষ্ঠানিকভাবে স্থানীয় একটি ওয়াজ মাহফিলে মনির স্ত্রী-ছেলেমেয়েদের নিয়ে ইসলাম গ্রহণ করেন।

Bootstrap Image Preview