ইরানের শীর্ষ জেনারেল কাসেম সোলাইমানিকে হত্যার পর দেশটির কুদস ফোর্সের নতুন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইসমাইল কায়ানিকে হত্যা করার যে হুমকি যুক্তরাষ্ট্র দিয়েছে তার প্রতিবাদ জানিয়েছেন রাশিয়া। দেশটি এই হুমকিকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ ও মেনে নেয়া যায় না বলে মন্তব্য করেছে।
রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বৃহস্পতিবার মস্কোয় এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন। মারিয়ার ভাষ্য, আমি আবারও বলতে চাই যে, যুক্তরাষ্ট্রের এ ধরনের হুমকি আমাদের কাছে অগ্রহণযোগ্য। আইন ও অধিকার লঙ্ঘন করে এ ধরনের বক্তব্য দেয়া হয়েছে এবং একজন রাষ্ট্রীয় প্রতিনিধির এ ধরনের কথা বলার কোনো অধিকার নেই।
ইরান বিষয়ক যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ প্রতিনিধি ব্রিয়ান হুক বৃহস্পতিবার সুইজারল্যান্ডের দাভোসে আরবি ভাষার দৈনিক আশরাক আল-আওসাতকে দেয়া সাক্ষাতকারে বলেন, নিহত কাসেম সোলাইমানির উত্তরসূরিকেও একই ভাগ্য বরণ করতে হবে।
তিনি বলেন, আমেরিকানদের হত্যায় ইসমাইল কিয়ানিও যদি একই পথ ধরে চলেন, তবেও তাকেও একই ভাগ্য বরণ করতে হবে।‘মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অনেক আগেই পরিস্কার করে দিয়েছেন যে আমেরিকান কিংবা আমেরিকার স্বার্থে আঘাত হানলে চূড়ান্ত জবাব দেয়া হবে’ যোগ করেন ব্রিয়ান হুক।
তিনি বলেন, এটা কোনো নতুন হুমকি নয় জানিয়ে তিনি আরও বলেন, আমেরিকান স্বার্থ রক্ষায় চূড়ান্ত জবাব দেয়ার কথা বলে আসছেন প্রেসিডেন্ট। আমি মনে করি, ইরানি সরকার উপলব্ধি করতে পেরেছে যে তারা আমেরিকায় হামলা চালাতে পারবে না এবং শাস্তি থেকেও রেহাই পাবে না।
গত ৩ জানুয়ারি বাগদাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ড্রোন থেকে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে ইরানের প্রভাবশালী জেনারেল সোলাইমানিকে হত্যা করে মার্কিন বাহিনী।
মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন বাহিনীর ওপর ইরান-ঘনিষ্ঠ মিলিশিয়াদের হামলার মূলহোতা হিসেবে সোলাইমানিকে আখ্যায়িত করে আসছিল যুক্তরাষ্ট্র। ইরানের সঙ্গে সই হওয়া পরমাণু অস্ত্র থেকে এক তরফাভাবে সরে যাওয়ার পর উত্তেজনার মধ্যেই এই জেনারেলকে হত্যার নির্দেশ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে ইরানের প্রভাব বিস্তারের মূল কারিগর বলা হয়ে থাকে সোলাইমানিকে। তাকে হত্যার প্রতিশোধ নিতে প্রথমবারের মতো ইরাকে মার্কিন ঘাঁটিতে সামরিক হামলা চালায় ইরান। যদিও এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
সোলাইমানি নিহত হওয়ার পর তার উত্তরসূরি হিসেবে আল-কুদসের প্রধান পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইসমাইল কিয়ানিকে। নিয়োগ পাওয়ার পরেই সোলাইমানির পথ অনুসরণের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন তিনি।
জেনারেল কায়ানি নিয়োগ পাওয়ার পর ৯ জানুয়ারি ইরানের সর্বোচ্চ নেতাকে জানান, সর্বশক্তি দিয়ে তিনি জেনারেল কাসেম সোলাইমানির পথ অনুসরণ করবেন। তিনি জানিয়েছেন, তার লক্ষ্য হবে পশ্চিম এশিয়া বা মধ্যপ্রাচ্য থেকে মার্কিন সেনাদের বহিষ্কার করা। এরপরই এই হুমকি দিল যুক্তরাষ্ট্র।