Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ শুক্রবার, মার্চ ২০২৪ | ১৪ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

শুধুমাত্র নামের মিল থাকায় এবার যশোরে গ্রেপ্তার ‘নির্দোষ’ ব্যক্তি

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৩ জানুয়ারী ২০২০, ১২:০৩ PM
আপডেট: ২৩ জানুয়ারী ২০২০, ১২:০৩ PM

bdmorning Image Preview


যশোরে বিস্ফোরক মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি মিজানুর রহমান ওরফে পাগলা মিজানের পরিবর্তে স্যানিটারি মিস্ত্রি মিজানুর রহমানকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত সোমবার গভীর রাতে এ ঘটনা ঘটে।

পরদিন মঙ্গলবার দুপুরে তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। অন্যদিকে গাজীপুরের শ্রীপুরে বন বিভাগের একটি মামলার আসামি করাতকলের মালিক রফিকুল ইসলামের পরিবর্তে চায়ের দোকানি রফিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।

যশোরে কারাবন্দি মিজানুর (৩৮) সদর উপজেলার খোলাডাঙ্গা গ্রামের সর্দারপাড়া এলাকার মুক্তিযোদ্ধা ও সেনা সদস্য মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে। অন্যদিকে মূল আসামি মিজানুর (৩৫) সদর উপজেলার সুজলপুর গ্রামের হঠাৎপাড়ার মৃত নূরুল হক হাওলাদারের ছেলে। তিনি ২০১৫ সালের ২৮ জানুয়ারি শহরতলির সুজলপুর জামতলা এলাকায় বোমা হামলা মামলার আসামি।

কারাবন্দি মিজানুরের ভাই আব্দুর রহিম বলেন, ‘মিজানুরের স্ত্রী আসমা সোমবার সকালে একটি ছেলেসন্তান প্রসব করেন। বিকেলের দিকে তিনি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে সন্তানসহ স্ত্রীকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করে মিজানুর বাড়ি ফিরে আসেন। রাত আড়াইটার দিকে পুলিশ পাঁচিল ডিঙিয়ে বাড়িতে ঢুকে মিজানুরকে ধরে নিয়ে যায়।’

জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তৌহিদুল ইসলাম বলেন,  ‘এ ঘটনা জানতে পেরে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ দ্রুত কোর্টকে অবহিত করে মিজানুরের জামিনের ব্যবস্থা করে। এ ছাড়া আটককারী কোতোয়ালি থানার এএসআই আল মিরাজ খানকে এ ঘটনায় শোকজ করা হবে।’

গতকাল বুধবার মিজানুর রহমানের আইনজীবী ডেজিনা ইয়াসমিন বলেন, ‘আদালত মিজানুরকে জামিন দিয়েছেন। তাঁর স্পষ্ট একটা ঠিকানা রয়েছে। দুজনের এলাকাও আলাদা। সেখানে এ ধরনের ভুল কাম্য নয়।’  

বন বিভাগের একটি মামলায় আসামি করাতকলের মালিক রফিকুল ইসলাম। পুলিশ ওই মামলায় গ্রেপ্তার করেছে নিরীহ চা দোকানি রফিকুল ইসলামকে।

স্বজনদের অভিযোগ, পুলিশের দুজন এএসআই ‘বন মামলা আছে’ বলেই হাতকড়া পরিয়ে গাড়িতে তুলে ফেলে রফিকুল ইসলামকে। গাড়িতে উঠেও রফিকুল ইসলাম দাবি করছিলেন, ‘আমার নামে কোনো মামলা নেই স্যার!’ ওই সময় একজন এএসআই তাঁকে ধমক দিয়ে বলেন, ‘থানায় চল, মামলা আছে কি না দেখামু নে।’

আসামি না হয়েও নিরীহ ব্যক্তির বিস্ময়কর এমন গ্রেপ্তারের শিকার হওয়ার ঘটনা ঘটেছে গাজীপুরের শ্রীপুর পৌর এলাকার কেওয়া পশ্চিমখণ্ড গ্রামে।স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিলকালে পুলিশের ‘অসতর্কতায়’ পাঁচ দিন ধরে জেল খাটছেন রফিকুল ইসলাম।

জেলে থাকা রফিকুল ইসলাম (৪৩) ওই গ্রামের মসজিদ মোড় এলাকার নূর মোহাম্মদের ছেলে।  তিনি ওই এলাকায় দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে চায়ের দোকান চালান।

আর বন বিভাগের মামলায় আসামি মো. রফিকুল ইসলাম (৪০) একই গ্রামের বেগুনবাড়ী এলাকার নূর মোহাম্মদের ছেলে। তিনি করাতকলের মালিক। তিনি জানিয়েছেন, উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়েছেন তিনি। থানার একটি সূত্র জানায়, গতকাল রাতে থানায় তিনি রিকলও জমা দিয়েছেন।

শ্রীপুর থানার ওসি মো. লিয়াকত আলী দাবি করেন, আসামির নাম ও বাবার নামের মিল থাকায় এমন ভুল হয়ে থাকতে পারে।

এদিকে তিন মাসের শিশু ছেলেকে কোলে নিয়ে স্বামীর মুক্তির জন্য এখানে-সেখানে ধরনা দিচ্ছেন রফিকুল ইসলামের স্ত্রী শিমু আক্তার। রফিকুল ইসলাম আসামি নন, সবাই জানলেও কিছুই করার নেই কারো। শিমু জানান, সবাই তাঁকে আদালত দেখাচ্ছেন। তিনি আরো জানান, গত সোমবার শ্রীপুর পৌরসভার মেয়র আনিছুর রহমান তাঁর স্বামী আসামি নয় বলে প্রত্যয়নপত্র দিয়েছেন।

শ্রীপুর থানার ওসি মো. লিয়াকত আলী গতকাল রাত সাড়ে ১০টার দিকে কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আদালতের নির্দেশনা পেয়েছি। আজ প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।’

Bootstrap Image Preview