Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৯ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

ব্যাংকের মালিকদের ঋণই পৌনে দুই লাখ কোটি টাকা

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৩ জানুয়ারী ২০২০, ১২:০০ PM
আপডেট: ২৩ জানুয়ারী ২০২০, ১২:০০ PM

bdmorning Image Preview


দেশের ব্যাংকব্যবস্থা থেকে মালিকদের নিজেদেরই প্রায় পৌনে দুই লাখ কোটি টাকার ঋণ রয়েছে, যা মোট বিতরণ করা ঋণের ১১.২১ শতাংশ। ব্যাংক পরিচালকদের কাছে অন্য ব্যাংকের এক লাখ ৭১ হাজার ৬১৬ কোটি ১২ লাখ ৪৭ হাজার টাকা ও নিজ ব্যাংকের এক হাজার ৬১৪ কোটি ৭৭ লাখ ১৭ হাজার টাকা পাওনা রয়েছে।

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল গতকাল বুধবার জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে এই তথ্য জানিয়েছেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশনে অন্য এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী সংসদকে জানিয়েছেন, দেশের আট হাজার ২৩৮টি প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৯৬ হাজার ৯৮৬ কোটি টাকা।

দেশের সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে পাওয়া সিআইবি ডাটাবেইসের ২০১৯ সালের নভেম্বর পর্যন্ত হালনাগাদ তথ্যের ভিত্তিতে মন্ত্রী ঋণখেলাপিদের তালিকা সংসদে তুলে ধরেন। সরকারি দলের সদস্য আহসানুল ইসলাম টিটুর প্রশ্নের লিখিত জবাবে মন্ত্রী আরো জানান, গত নভেম্বর পর্যন্ত পরিশোধিত ঋণের পরিমাণ ২৫ লাখ ৮৩ হাজার ৬০৪ কোটি টাকা।

অন্য এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী সংসদকে জানান, ২০১৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বরের তথ্য অনুযায়ী ২৫টি ব্যাংকের পরিচালকরা নিজ ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছেন। তাঁদের গৃহীত ঋণের বকেয়া স্থিতির পরিমাণ এক হাজার ৬১৪ কোটি ৭৭ লাখ ১৭ হাজার টাকা, যা মোট ঋণের ০.১৬৬৬ শতাংশ। এ ছাড়া ব্যাংকের পরিচালকরা নিজ ব্যাংক ছাড়া অন্য ৫৫টি ব্যাংক থেকেও ঋণ নিয়েছেন। তাঁদের গৃহীত ঋণের স্থিতির পরিমাণ এক লাখ ৭১ হাজার ৬১৬ কোটি ১২ লাখ ৪৭ হাজার টাকা। এটা ব্যাংকগুলোর মোট প্রদেয় ঋণের ১১.২১ শতাংশ।

এর আগে গত বছরের ২২ জুন অর্থমন্ত্রী জাতীয় সংসদে দেশের শীর্ষ ৩০০ ঋণখেলাপির তালিকা প্রকাশ করেন। ওই সব খেলাপির কাছে তখন বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পাওনা ছিল ৭০ হাজার ৫৭১ কোটি টাকা। এ ছাড়া ২০০৯ সাল থেকে বিভিন্ন ব্যাংক ও লিজিং কম্পানির কাছ থেকে পাঁচ কোটি টাকার বেশি ঋণ নিয়েছেন এমন ১৪ হাজার ৬১৭ জনের পূর্ণাঙ্গ তথ্য দেন অর্থমন্ত্রী।

সংসদে সর্বশেষ দেওয়া ১০৭ পৃষ্ঠার তালিকা অনুযায়ী এসব ঋণখেলাপি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে রিমেক্স ফুটওয়্যার। এই কম্পানির খেলাপি ঋণের পরিমাণ প্রায় এক হাজার ৮০০ কোটি টাকা। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ক্রিসেন্ট লেদার প্রডাক্টসের খেলাপি ঋণের পরিমাণ এক হাজার ৩০০ কোটি এবং তৃতীয় স্থানে থাকা রূপালী কমপোজিট লেদারওয়্যার লিমিটেডের ঋণের পরিমাণ প্রায় এক হাজার ৩০০ কোটি টাকা। এদের মধ্যে সবচেয়ে কম এক কোটি টাকা ঋণ রয়েছে এআই ইন্ডাস্ট্রিজের; যদিও অন্যান্য কম্পানির খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছাপায় অস্পষ্টতা থাকায় তালিকা সংসদে তুলে ধরা হয়নি।

সংসদে প্রদত্ত ঋণখেলাপি তালিকার প্রথম দিকের ৫০টি কম্পানির মধ্যে আরো রয়েছে রাইজিং স্টিল লিমিটেড, মোহাম্মদ ইলিয়াম ব্রাদার্স (প্রা.) লিমিটেড, এস এ অয়েল রিফাইনারি লিমিটেড, সামনাজ সুপার অয়েল লিমিটেড, কোয়ান্টাম পাওয়ার সিস্টেম লিমিটেড, অ্যালোকোট লিমিটেড, গ্যালাক্সি সোয়েটার অ্যান্ড ইয়ার্ন ডাইং, বুলট্রেড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড, বেনট্রেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ, কম্পিউটার সোর্স লিমিটেড, রুবাইয়া ভেজিটেবল অয়েল লিমিটেড, লেক্সো লিমিটেড, আলফা কমপোজিট টাওয়েলস, সুপ্লোভ রোটোর স্পিনিং লিমিটেড, চৌধুরী নিটওয়্যারস লিমিটেড, জেকোয়ার্ড নিটেক্স লিমিটেড, ইব্রাহীম টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড, হলমার্ক ফ্যাশন লিমিটেড, ফেয়ার ইয়ার্ন প্রসেসিং লিমিটেড, ফেয়ার ট্রেড ফেব্রিকস লিমিটেড, সোনালী জুট মিলস লিমিটেড, চৈতি কম্পোজিট লিমিটেড, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড, ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ (বিডি) লিমিটেড ইত্যাদি।

সরকারি দলের সদস্য নাছিমুল আলমের প্রশ্নের জবাবে মুস্তফা কামাল জানান, গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত করদাতার সংখ্যা আট লাখ ২৩ হাজার ২৩১ জন বৃদ্ধি পেয়ে মোট ৪৬ লাখ ৯৩ হাজার ৯৭৮ জনে দাঁড়িয়েছে। আর ২০১৮-১৯ অর্থবছরে মোট কর আদায় হয়েছে ৭২ হাজার ৮৯৯ কোটি ৯০ লাখ টাকা।

সরকারি দলের সদস্য বেগম শামসুন নাহারের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, গাজীপুরের দুই লাখ ৪০ হাজার ২৩৯ জন করদাতার মধ্যে ৭৮ হাজার ৩৪০ জন রিটার্ন দাখিল করেছেন। যাঁরা রিটার্ন দাখিল করেননি তাঁদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থার কার্যক্রম চলমান।

Bootstrap Image Preview