পুলিশের ভুলে প্রকৃত আসামির পরিবর্তে জেল খাটছেন এক চা বিক্রেতা। আসামির সঙ্গে নাম ও বাবার নামের মিল থাকায় গত পাঁচ দিন ধরে জেলে তিনি।
শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) বিকালে গাজীপুরের শ্রীপুরে নিজের চায়ের দোকান থেকে রফিকুল ইসলামকে গ্রেফতার করে শ্রীপুর থানার পুলিশ।
স্থানীয়রা জানান, মামলার মূল আসামি রফিকুল ইসলামের জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর ১৯৮০৩৩২৮৬০৮০৪১৮৯৭। সে অনুযায়ী তার জন্ম তারিখ ৬ জানুয়ারি ১৯৮০। আর বাবা নুর মোহাম্মদ, মা রহিমা খাতুন। ভোটার সিরিয়াল নং- ১৬১১।
এদিকে পুলিশের ভুলে গ্রেফতার হওয়া মো. রফিকুল ইসলাম কেওয়া পশ্চিম খন্ড মসজিদ মোড় এলাকার বাসিন্দা। জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী তার জন্ম ২ এপ্রিল ১৯৭৭। বাবার নাম নুর মোহাম্মদ, মায়ের নাম জামিনা খাতুন।
জানা যায়, তিন-চার বছর আগে অবৈধ করাতকলে গজারী গাছ চেড়াইয়ের অভিযোগে শ্রীপুর পৌর এলাকার ৮নং ওয়ার্ডের কেওয়া পশ্চিম খন্ডের রফিকুল ইসলামকে আসামি করে মামলা করে শ্রীপুর বনবিভাগ। পরবর্তীতে রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে এ মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।
এরপর শুক্রবার শ্রীপুর থানার এএসআই কফিল উদ্দিন আসামি গ্রেফতারে কেওয়া পশ্চিম খন্ড গ্রামের মসজিদ মোড় এলাকায় যান। সেখান গিয়ে তিনি নুর মোহাম্মদের ছেলে রফিকুলকে খুঁজতে থাকেন। মসজিদ মোড়ের পাশেই চা বিক্রেতা রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা আছে বলে জানান। পরে তাকে আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়ার কথা বললে স্থানীয়রা জানান, তিনি কখনই কাঠের ব্যবসা করেননি এবং মূল আসামি তিনি নন।
এসময় চা দোকানি রফিকুলও পুলিশের কাছে অনুনয় বিনয় করেন যে, তিনি আসামি নন। কিন্তু পুলিশ কারও কথা না শুনে রফিকুলকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যায়।
মামলার প্রকৃত আসামি রফিকুল ইসলাম জানান, তিনি দীর্ঘ ২০ থেকে ২২ বছর ধরে কাঠের ব্যবসা করছেন। এ পর্যন্ত বন বিভাগ কারণে অকারণে কয়েকটি মামলা দিয়েছে। যে মামলাতে পুলিশ ভুল করে চা বিক্রেতা রফিকুলকে গ্রেফতার করেছে সেই মামলায় তিনি জামিনে রয়েছেন। জামিনে থাকার পরও পুলিশের এমন আচরণে হতবাক হয়েছেন তিনি।
এ ব্যাপারে শ্রীপুর থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) কফিল উদ্দিনের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।
গাজীপুরের পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার জানান, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।