Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৯ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

বাংলাদেশ পাকিস্তানে খেলতে রাজি হয়েছে আইসিসির চাপে পড়ে: পাপন

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২০ জানুয়ারী ২০২০, ১০:৩৬ AM
আপডেট: ২০ জানুয়ারী ২০২০, ১০:৩৬ AM

bdmorning Image Preview


সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের সবুজ সঙ্কেত মিলেছে। জাতীয় নিরাপত্তা ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টও ইতিবাচক। সঙ্গে বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসান পাপন আইসিসি প্রেসিডেন্ট শশাঙ্ক মনোহরের উপস্থিতিতে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড প্রধান এহসান মানির সঙ্গে কথা বলে পাকিস্তান সফরে যাবার সন্মতি জ্ঞাপন, মানে ‘হ্যাঁ’ বলে দিয়ে এসেছেন। তারই আলোকে সফরসূচি হয়েছে চূড়ান্ত। কোথায় কবে কখন খেলা হবে? অর্থ্যাৎ শহর, ভেন্যু, মাঠ সব ঠিক হয়ে গেছে।

পাকিস্তান সফরকে সামনে রেখে মিরপুরে আজ টাইগারদের অনুশীলনও শুরু হয়েছে। মোটকথা বাংলাদেশ জাতীয় দলের পাকিস্তান যাবার সব রকম প্রস্তুতি প্রায় শেষের দিকে। সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী ২২ জানুয়ারি লাহোরের উদ্দেশ্যে দেশ ত্যাগ করবে জাতীয় দলের বহর। আর ২৪ জানুয়ারি লাহোরে বাংলাদেশ আর পাকিস্তানের প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচ। পরে খেলা দুটিও একই শহরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামেই অনুষ্ঠিত হবে।

এত কিছুর পরও অনেকের মনেই প্রশ্ন, আচ্ছা যে দেশে এখনো প্রাণঘাতি বোমাবাজি আর সন্ত্রাসী হামলায় অকাতরে মানুষ মারা যাচ্ছে, সেই পাকিস্তানে খেলতে যাবার ঝুঁকিটা আসলে কেন নিচ্ছে বিসিবি? তাও একবার-দুবার নয়, তিন-তিনবার পাকিস্তানের তিন শহর লাহোর, রাওয়ালপিন্ডি এবং করাচি যাওয়ার সিদ্ধান্ত কেন?

এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে অবশ্য সবার আগে পাকিস্তানের নিরাপত্তা ব্যবস্থার কথা চলে আসে। আসছে। আসবেও। তবে বিসিবি থেকে বার বার বলা হয়েছে, জাতীয় নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা সংস্থার সরেজমিন পর্যবেক্ষণের বরাত দিয়ে বিসিবি থেকে আশ্বস্ত করা হয়েছে, পাকিস্তানের নেয়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা সন্তোষজনক এবং সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য দল পাঠানো যায়।

তাই বলে মনে করার কোনই কারণ নেই যে, শুধু পাকিস্তানের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভাল দেখেই বাংলাদেশ ক্রিটে দল লাহোর যাচ্ছে। এখন টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে গেলেও আসলে বাংলাদেশ পাকিস্তানে খেলতে রাজি হয়েছে আইসিসির চাপে পড়েই। বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন আজ দুপুরে সে কথাই জানালেন মিডিয়ার সামনে।

পাকিস্তানের সফরের প্রস্তুতির প্রথম দিন ক্রিকেটার, কোচ, নির্বাচক ও বোর্ড কর্তাদের সাথে অল্প সময়ের জন্য কথা বলতে বিসিবিতে এসে নাজমুল হাসান পাপন জানিয়ে দিয়েছেন, আসলে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ খেলার জন্য আইসিসির থেকেই চাপ ছিল এবং পাকিস্তানে তিনবার যাওয়া ও টেস্ট খেলার পিছনে সেটাই মূল কারণ।

রোববার বিসিবিতে উপস্থিত সাংবাদিকদের সাথে আলাপে পাকিস্তান সফর নিয়ে কথা বলতে গিয়ে পাপন জানান, ‘আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপটাই সবচেয়ে গুরুত্ব পেয়েছে। আর আইসিসিও এ সিরিজ মনিটর করবে। আইসিসি লোকজন সিরিজ সরেজমিন তদারকে পাকিস্তানে যাবে।’

নাজমুল হাসান পাপনের কথা, ‘একটা জিনিস মনে রাখতে হবে যে, এটা যদি শুধু দ্বি-পাক্ষিক সিরিজ হতো তাহলে একটা কথা। এখানে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ আছে আইসিসির। বলতে গেলে এটা অনেকটা বিশ্বকাপ। আমরা টি-টোয়েন্টি খেলছি, ওয়ানডে খেলছি। এখন ওরা (আইসিসি) শুরু করেছে টেস্ট হোম এবং অ্যাওয়ের ভিত্তিতে হবেই। কাজেই এখানে তো আর কোনো অপশন নেই। এখানে অংশগ্রহণ করাটা আমি মনে করি অবশ্যই প্রয়োজন। আইসিসির পূর্ণ সদস্য হিসেবে এখানে আমাদের অংশ নেয়া উচিত।’

এর পরপরই আসল কথাটি উচ্চারণ করেন বিসিবি বিগ বস, ‘আসলে এখানেই মূল একটা চাপ ছিল। আমার মনে হয় এই টি-টোয়েন্টি সিরিজটি খেলে আসলে আমরা বুঝতে পারবো যে আসলে পরিস্থিতি কি এবং যদি আমাদের কোনো সমস্যা থাকে, এটা নিয়ে আমরা আলোচনা করতে পারবো এবং পরে কথা বলতে পারবো।’

শুধু কি আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ খেলার জন্যই আইসিসির পক্ষ থেকে চাপ দেয়া হয়েছে? আইসিসি কি পাকিস্তানের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপট, বর্তমান অবস্থা এবং সামগ্রিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরখ করে দেখেছে? পাকিস্তানে কি আসলে এখন খেলতে যাবার মত অবস্থা আছে?

এ প্রশ্নের উত্তরে পাপন জানান, আইসিসির সার্বক্ষণিক নজরদারি আছে। আইসিসিও পর্যবেক্ষক দল পাঠাচ্ছে এবং তাদের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা পর্যবেক্ষক টিমও পাঠানো হবে। এ তথ্য দিয়ে পাপন বলেন, ‘আইসিসি তো দল পাঠাচ্ছেই। ওরা এরই মধ্যে নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণ করেছে এবং আইসিসির সব লোকজন থাকবে।’

বিসিবি সভাপতি পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন, আসলে আইসিসি আশ্বস্ত করাতেই পাকিস্তান খেলতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। তাই মুখে এমন কথা, ‘ওরা (আইসিসি) বলাতেই তো আসলে যাচ্ছি। সবদিক থেকে যেভাবে সিদ্ধান্তটি এসেছে, এরপর ওখানে না যাওয়াটা কঠিন। এরপরও ওখানে যদি এমন কোনো ঘটনা আল্লাহ না করুক ঘটে যায় বা তেমন অবস্থা হয় তাহলে তো আর আমরা যাবো না। আমাদের যদি কখনো মনে হয় যে, ওখানটায় যেমনটা ভেবেছিলাম বা পরিস্থিতি পরিবর্তন হয়েছে তাহলে আমাদের সিদ্ধান্তও পরিবর্তন হবে। সেটা ভিন্ন ইস্যু। তবে এখন পর্যন্ত আমরা মনে করছি এটা একটি নিরাপদ জায়গা এবং আমরা খেলতে যেতে পারি সেখানে। মাথায় এখন সেই নিরাপত্তার ব্যাপারটি বাদ দিয়ে খেলায় মনোনিবেশ করা উচিত। সেটাই ওদেরকে বলতে এসেছিলাম (আজ বিসিবিতে)।’

Bootstrap Image Preview