বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (শজিমেক) রোগীসহ মুক্তিযোদ্ধা ও স্বজনদের মারধরের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় বগুড়া সদরের ফুলবাড়ি দক্ষিণপাড়ার হেলাল উদ্দিন (৬৭) নামে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা রোববার (১৯ জানুয়ারি) দুপুরে বগুড়া প্রেসক্লাবে দোষীদের শাস্তির দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে মুক্তিযোদ্ধা হেলাল উদ্দিন লিখিত বক্তব্যে বলেন, গত শুক্রবার সকালে তার স্ত্রী মাজেদা ইয়াসমিন জোসনাকে (৫৫) বুকে ব্যথার কারণে শজিমেক হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগে ভর্তি করা হয়। সেখানে সিসিইউ বেড নং-০৩ এ চিকিৎসাধীন ছিলেন। শনিবার বিকেলে সেখানকার দায়িত্বরত দুইজন ডাক্তার তার অসুস্থ স্ত্রীকে বেড ছেড়ে দিয়ে বাইরে ফ্লোরে যেতে বলেন। খবর পেয়ে বিকেল ৪টার দিকে তিনি হাসপাতালে গিয়ে বেড ছেড়ে দেয়ার কারণ জানতে চান। এ সময় ছাড়পত্র নিয়ে বেড ছাড়ার কথা বললে দায়িত্বরত ডাক্তাররা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। একপর্যায়ে তারা দরজা বন্ধ করে দিয়ে তাদেরকে অবরুদ্ধ করে রেখে মোবাইল ফোনে ১০/১২ জন ইন্টার্ন চিকিৎসককে ডেকে এনে মুক্তিযোদ্ধা হেলাল উদ্দিনকে বেধরক মারপিট করতে থাকেন। এ সময় অসুস্থ স্ত্রী মাজেদা পারভিন ও শ্যালক জাহিদুর রহমান এগিয়ে এলে তাদেরকেও মারপিট করেন। এই দৃশ্য মোবাইল ফোনে ধারণ করতে গেলে মেয়ে মাসুমা আকতারকেও মারপিট করে মোবাইল কেড়ে নেন তারা।
খবর পেয়ে তার দুই ছেলে মাজেদুর রহমান (৩১) ও মোকসেদুর রহমান (২৫) দ্রুত হাসপাতালে পৌঁছালে পুনরায় ২০/২৫ জন ইন্টার্ন চিকিৎসক মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশ সদস্যদের সামনে তাদের বেধরক মারপিট করেন। এ সময় পুলিশ সদস্যরাও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কাছে অসহায় হয়ে পড়েন। ইন্টার্ন চিকিৎসকরা সেখানে ভাঙচুর করেন। সন্ধ্যার পর সদর থানা পুলিশ সেখান থেকে তাদেরকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। পরে স্ত্রী মাজেদা পারভিন অসুস্থ হয়ে পড়লে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে চিকিৎসা দেয়া হয়। এ ঘটনায় আইনের আশ্রয় নেয়ার কথাও জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে আসা মুক্তিযোদ্ধা হেলাল উদ্দিনের ছেলে মাজেদুর রহমান বলেন, শজিমেক হাসপাতালের চিকিৎসকরা কসাই। এরা চিকিৎসার নামে ব্যবসায় নেমেছে। টাকার বিনিময়ে বেড ভাড়া দেয়ার জন্য তারা বেড ছেড়ে দিতে বলেছে। তাদের হাতে কেউ নিরাপদ নয়। তুচ্ছ ঘটনায় তারা চিকিৎসা বন্ধ করে দেয়ার হুমকি দেয়।
শজিমেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আব্দুল আজিজ মন্ডল ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, একটা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। এ ব্যাপারে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. আব্দুল ওয়াদুদ জানান, রোগীর লোকজনের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে মাত্র। কোনো মারধরের ঘটনা ঘটেনি।