ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তনের দাবিতে অনশনরত শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙালেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তনের ঘোষণার পরপরই রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এসে পানি এবং জুস খাইয়ে শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙান তিনি।
সরস্বতী পূজার জন্য আগামী ৩০ জানুয়ারি ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তনের দাবিতে টিএসসির রাজু ভাস্কর্যে আমরণ অনশন চালিয়ে আসছিলেন অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী। এতে অসুস্থ হয়ে পড়েন প্রায় ১৫ জন শিক্ষার্থী। শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনের পক্ষে জনমত জোরাল হয়ে ওঠার প্রেক্ষাপটে শনিবার আকস্মিকভাবে জরুরি বৈঠকে বসে নির্বাচন কমিশন। কয়েক ঘণ্টার বৈঠক শেষে সন্ধ্যার পর প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা সাংবাদিকদের সামনে এসে ভোটের তারিখ পিছিয়ে ১ ফেব্রুয়ারি করার ঘোষণা দেন।
এর প্রতিক্রিয়ায় আন্দোলনকারীরা বলেন, আমরা শুরু থেকেই অহিংস আন্দোলন করে আসছি। আমাদের আন্দোলন সম্পূর্ণ যৌক্তিক ছিল। এটাকে বিবেচনায় নিয়ে তারিখ পরিবর্তনের জন্য আমরা সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানাই। এসময় অনশন প্রত্যাহার করে নেন শিক্ষার্থীরা।
এ সময় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে অনশনকারীদের একজন সুস্মিতা দে বলেন, আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি আদায় অত্যন্ত আনন্দের। এটা আমাদের জন্য গর্বের। অহিংস আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা যৌক্তিক দাবি আদায় করেছি। এর মধ্য দিয়ে আবারও প্রমাণ হল, বাংলাদেশ একটি অসাম্প্রদায়িক দেশ।
কুয়েত-মৈত্রী হল সংসদের ভিপি সুস্মিতা বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ, শেষ মুহূর্তে হলেও তিনি আমাদের যৌক্তিক দাবি বুঝতে পেরেছেন। তিনি আমাদের মমতাময়ী মা।
এসময় ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, যখন গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমে কোনও দাবির প্রতিফলন ঘটে, তখন আমাদের ভালো লাগে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা একটি যৌক্তিক দাবি অসাম্প্রদায়িক চেতনা ও মানবিক মূল্যবোধ দ্বারা তাড়িত হয়ে এই দাবিটি করেছে। নির্বাচন কমিশন সে দাবিকে সম্মান জানিয়েছে, এজন্য কমিশনকে ধন্যবাদ। শিক্ষার্থীদের এই অসাধারণ মূল্যবোধকে আমি শ্রদ্ধা করি। তিনি বলেন, এমন একটি পদ্ধতিতে তারা আন্দোলন করেছে, যাতে সুস্থ ধারার চিন্তার প্রতিফলন তারা দেখাতে সক্ষম হয়েছে। গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে উজ্জীবিত হয়ে একটি যৌক্তিক দাবি তারা উত্থাপন করেছে। এটি সমাজে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।