Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ শুক্রবার, মার্চ ২০২৪ | ১৪ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

স্কুলেই ছাত্রীকে ধর্ষণ চেষ্টা এএসআইয়ের, সংঘর্ষে রণক্ষেত্র এলাকা

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৮ জানুয়ারী ২০২০, ০৯:৩৮ PM
আপডেট: ১৮ জানুয়ারী ২০২০, ০৯:৩৮ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত


কোলকাতার হাড়োয়া থানার পুলিশের এক এএসআইয়ের বিরুদ্ধে স্কুলের মধ্যে এক ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। সেই অভিযোগকে কেন্দ্র করে শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে কার্যত রণক্ষেত্রের রূপ নেয় হাড়োয়া থানার মোহনপুর এলাকা।

পুলিশের গাড়িতে আগুন ধরানোর পাশাপাশি রাস্তাঘাট যেমন অবরোধ করেছেন ক্ষিপ্ত জনতা, তেমনি পুলিশও পাল্টা লাঠি ও কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটিয়েছে বলেও অভিযোগ।

ওই এএসআইকে স্কুলের মধ্যে আটকে রেখে বেধড়ক মারধর করা হয়। পরে বিশাল পুলিশ বাহিনী গিয়ে প্রায় আট ঘণ্টার চেষ্টায় মাঝরাতে তাঁকে উদ্ধার করে। জাহাঙ্গির হোসেন নামের ওই অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব ইনসপেক্টর (এএসআই) এই মুহূর্তে বসিরহাট হাসপাতালে ভর্তি।

জানা গেছে, মোহনপুরের একটি স্কুলে রাজ্য সরকারের উদ্যোগে ছাত্র ও যুব উৎসবের আয়োজন করা হয়েছিল। বৃহস্পতিবার শুরু হওয়া ওই উৎসবের শেষ দিন ছিল শুক্রবার। অনুষ্ঠান উপলক্ষে ওই স্কুলেই ডিউটি পড়ে হাড়োয়া থানার এএসআই জাহাঙ্গিরের।

স্কুলের দুই ছাত্রী সিভিক ভলান্টিয়ার হওয়ার ব্যাপারে সহযোগিতা চান জাহাঙ্গিরের কাছে। এজন্য তারা সকালে বেশ কয়েকবার জাহাঙ্গিরের সাথে কথা বলেন। সন্ধ্যার দিকে অনুষ্ঠান শেষ হতেই জাহাঙ্গির ওই দুই ছাত্রীর এক জনকে স্কুলেরই দোতলার একটি ঘরে ডেকে নিয়ে যান। তার পর ঘরের দরজা বন্ধ করে ওই ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন।

প্রত্যদর্শীরা জানিয়েছেন, সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ হঠাৎ করেই উপরের ক্লাসরুম থেকে চিৎকার শুনতে পেয়ে স্কুল চত্বরে যাঁরা ছিলেন তাঁরা ছুটে যান। ঘরের দরজা খুলে উদ্ধার করা হয় ওই ছাত্রীকে। জাহাঙ্গিরকে পাকড়াও করা হয়। তার মধ্যেই অন্যান্য পড়ুয়া ও এলাকার বাসিন্দারা পৌঁছে যান স্কুলে। জাহাঙ্গিরকে ধরে শুরু হয় বেধড়ক মারধর। কোনও ক্রমে তাঁদের হাত ছাড়িয়ে ওই এএসআই প্রথমে স্কুলের অফিসঘরের একটি আলমারির পিছনে লুকিয়ে পড়েন। সেখান থেকেও তাঁকে টেনে বার করা হয়। মাটিতে ফেলে শুরু হয় বেধড়ক মার।

খবর যায় হাড়োয়া থানায়। কিন্তু সেখানকার পুলিশ কর্মীরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেননি। তাদের উদ্দেশে ছোড়া হয় ইট-পাটকেল। ঘিরে ফেলা হয় পুলিশকর্মীদের। এর পর রাতের দিকে মাটিয়া, বসিরহাট এবং মিনাখা থানা থেকে বিশাল পুলিশ বাহিনী যায়। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল চলতে থাকে অবিরত। ভাঙচুর চালানো হয় পুলিশের গাড়িতে। আগুন লাগানোর অভিযোগও ওঠে। জ্বালিয়ে দেওয়া হয় একটি মোটরসাইকেলও।

পরে রাতে বসিরহাটের এসডিপিও ঘটনাস্থলে যান। পৌঁছন বসিরহাট জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার। গভীর রাতে ঘটনাস্থলে পৌঁছন বসিরহাট জেলার এসপি কঙ্করপ্রসাদ বারুই। তাঁর উদ্যোগে রাত প্রায় দুটো নাগাদ জাহাঙ্গিরকে উদ্ধার করা হয়। তার পর তাঁকে পাঠানো হয় বসিরহাট হাসপাতালে। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন বেশ কয়েক জন পুলিশকর্মী।

শনিবার সকাল থেকে ফের উত্তেজনা ছড়ায় ওই এলাকায়। অভিযুক্ত পুলিশকর্মীর কড়া শাস্তির দাবিতে করা হয় রাস্তা অবরোধ। শেষে পুলিশ গিয়ে অবরোধকারীদের সঙ্গে কথা বলে। বেলার দিকে অবরোধ উঠে যায়।

বসিরহাটের এসপি কঙ্করপ্রসাদ বারুই বলেন, ‘‘এলাকা আপাতত শান্ত। কোথাও কোনও সমস্যা নেই। ওই এএসআইয়ের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে। দোষী প্রমাণিত হলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা

Bootstrap Image Preview