নোয়াখালীর হাতিয়ার জাহাজমারা গ্রামের মৃত মাহফুজুর রহমানের ছেলে মজনু। শৈশবে তার মা মারা গেলে বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করেন। সৎ মায়ের সংসারে সে বেশিদিন থাকেনি। নিজে বিয়ে করেছিল, তবে স্ত্রীও মারা যায়। এরপর পরিবারের সঙ্গে থাকা নয়, বেপরোয়া জীবন বেছে নেয় সে।
ন্যূনতম অক্ষরজ্ঞানের শিক্ষাও অর্জন করেনি। গ্রামের সবাইকে ঢাকায় শ্রমিকের কাজ করার কথা জানালেও সে করত চুরি, আর ছিনতাই। এতে পাওয়া টাকা দিয়ে ড্যান্ডি, গাঁজা আর ইয়াবা সেবন করত। নেশায় বুঁদ হয়ে পড়ে থাকত রেলের কামরায় কিংবা স্টেশনে।
মানুষ মাত্রই জৈবিক চাহিদা থাকবে। নিজের জৈবিক চাহিদা মেটাতে অমানবিক এক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত ছিল মজনু। স্টেশনে ও রেললাইনে ঘোরাফেরা করা মানসিক প্রতিবন্ধী বা অপুষ্ট রোগা শরীরের ভিক্ষুক নারীদের টার্গেট করত মজনু। এরপর জোর করে নিজের কাছে নিয়ে রাখত। কুর্মিটোলার ঝোঁপের মধ্যে, কুর্মিটোলার ট্রেনের বগি, কমলাপুর স্টেশনের পেছনে, বিমানবন্দরের ট্রেন লাইনের পাশেসহ কয়েকটি স্থানে এই অসহায় নারীদের দিনের পর দিন ধর্ষণ করে আসছিল সে। একজন পালিয়ে গেলে আবার আরেকজনকে নিজের কব্জায় নিত মজনু। এদের কাছে টাকা থাকলে তাও কেড়ে নিত সে। এই অত্যাচারের কথা বলতে পারেনি কোনো প্রতিবন্ধী। এমনই বিকৃত মানসিকতার ভয়ংকর এক জীবন কাটাচ্ছিল কুর্মিটোলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ধর্ষণকারী মজনু।
কোনো সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের সঙ্গে সে অপরাধ না করায় আগে তা ধরা পড়েনি। বিকৃত মানসিকতার এই যুবক অনিরাপদ জীবনের কারণে সংক্রমণ রোগসহ বিভিন্ন অসুস্থতায়ও ভুগছে। ফুটপাতে ঝুঁকিপূর্ণ জীবনে অসামাজিক কার্যকলাপ ও মাদক গ্রহণের কারণে সংক্রমণ ব্যাধিসহ তার শরীরে রোগের আলামত পাওয়া গেছে। ঘটনার দিনও সে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নিজের চিকিৎসা নিতে যায়।