Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৬ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

১১ বিষয়ে ফেল তবুও এস.এস.সি পরীক্ষার্থী!

নোয়াখালী প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৭ জানুয়ারী ২০২০, ০৮:২৮ PM
আপডেট: ০৭ জানুয়ারী ২০২০, ০৮:২৮ PM

bdmorning Image Preview
প্রতীকী ছবি


শিক্ষাবোর্ডের নির্দেশনা অমান্য করে ১১ বিষয় অকৃতকার্য শিক্ষার্থীসহ ১৯ জন অকৃতকার্য শিক্ষার্থীকে নিয়ম বহির্ভূতভাবে এসএসসি পরীক্ষার ফরম পুরণের অভিযাগ উঠেছে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সিরাজপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে।

বোর্ড ফি নির্ধারিত টাকার পরিমাণ তোয়াক্কা না করেই প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে বলছে গুঞ্জন রটেছে। এদিকে ১১ বিষয় অকৃতকার্য শিক্ষার্থীরা ফরম পুরণ করার খবর জানাজানি হলে ক্ষুব্ধ হন অন্যান্য অভিভাবকরা। কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সিরাজপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবার মোট ৪৯ জন শিক্ষার্থীর ফরম পুরণ করা হয়।

জানা যায়, কোম্পানীগঞ্জ সিরাজপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ৯ জন, মানবিক বিভাগ থেকে ১০ জন ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে ৩০ জনসহ মোট ৪৯ জন শিক্ষার্থী টেস্ট পরীক্ষায় অংশগ্রহণ কর। এর মধ্যে মানবিক বিভাগর ৭ জন ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে ১২ জনসহ মোট ১৯ জন শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অনিয়ম ও তথ্য গোপনের আশ্রয় নিয়ে অতিরিক্ত টাকার বিনিময়ে সকল শিক্ষার্থীকে পাস দেখিয়ে কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডে চুড়ান্ত তালিকা প্রদান করে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, অকৃতকার্য ১৯ জনের মধ্যে ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগর ছাত্রী জানাতুল ফেরদাউস (রেজিঃ নং-১৬১১৩২০২৮৭) ১২ বিষয়ের মধ্যে ১১ বিষয়েই অকৃতকার্য হয়েছিল। এছাড়া ৮ বিষয়ে একজন, ৭ বিষয়ে দুইজন, ৬ বিষয়ে একজন, ৫ বিষয়ে দুইজন, ৪ বিষয়ে একজন, ৩ বিষয়ে পাঁচজন ও এক বিষয়ে ৬ জন শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়। এদের প্রত্যকের কাছ থেকে বোর্ডের নির্ধারিত ফি’র বাইরে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযাগ উঠেছে।

নাম প্রকাশ অনিচ্ছুক এক পরীক্ষার্থীর অভিভাবক জানান, আমাদর বাচ্চারা সারা বছর কষ্ট করে পড়ালেখা করে পরীক্ষায় পাস করে আর যারা পাস করেনি, মেধাহীন ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে টাকার বিনিময়ে পাস দেখিয়ে ফরম পুরণ করাটা দুঃখজনক। আমরা একটি ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কাছ এটি মোটেই আশা করিনি।

বিদ্যালয়ের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নুরুল আলম সিদ্দিকী জানান, এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। কারণ ওই সময় আমি দায়িত্বে ছিলাম না। তিনি দীর্ঘদিন সহকারী প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করলেও এ ঘটনার দায় এড়িয়ে বলেন, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি ও তৎকালীন (সদ্য অবঃ প্রাপ্ত) প্রধান শিক্ষকের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ফরম পুরণ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে সদ্য অবসরে যাওয়া প্রধান শিক্ষক মাঃ শহীদ উল্যাহ জানান, ছাত্রছাত্রীদের অভিভাবক ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির অনুরোধক্রমে অকৃতকার্য ছাত্রছাত্রীদর ফরম পুরণ করা হয়েছে।

বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য সুভাষ চন্দ্রকে এ বিষয় বলা হলে তিনি জানান, ফরম পুরণের সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময় আমি উপস্থিত ছিলাম না। তবে শুনেছি বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে সকল পরীক্ষার্থীকে পাস দেখিয়ে তালিকা উপস্থাপন করায় পরিচালনা কমিটি তাতে বাধা প্রদান করেনি।

এ বিষয়ে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শাহ কামাল পারভেজ জানান, বিদ্যালযের পক্ষ থেকে সকল শিক্ষার্থীকে পাস দেখিয়ে ফরম পুরণের আবেদন করা হয়। তবে নিয়ম অনুযায়ী টেস্ট পরীক্ষায় এক বিষয় অকৃতকার্য হলেও তাদের ফরম পুরণে নিষেধাজ্ঞা আছে। কেউ এ নিয়মের বাইরে অনিয়ম করলে তা বোর্ডে অবহিত করা হবে।

Bootstrap Image Preview