Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৭ বুধবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৩ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

ঢাবি ছাত্রী ধর্ষণ: ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিলেন ভিপি নুর

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৬ জানুয়ারী ২০২০, ০৪:৩৪ PM
আপডেট: ০৬ জানুয়ারী ২০২০, ০৪:৩৪ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত


রাজধানীর কুর্মিটোলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন ডাকসু ভিপি নুরুল হক নুর।

তিনি বলেন, আমাদের বোন ধর্ষণের ঘটনায় ইতোমধ্যে ছাত্র প্রতিনিধিরা আন্দোলনে নেমেছেন, সোচ্চার হয়েছেন। আমরা চাই ধর্ষকদের অবশ্যই চিহ্নিত করে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। অন্যথায় যে আন্দোলন শুরু হয়েছে সেই আন্দোলন সকল বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়বে।

সোমবার দুপুর পৌনে ১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে মানববন্ধন থেকে এ কথা বলেন তিনি।

ভিপি নুর বলেন, ধর্ষকদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা সকল শিক্ষার্থীর প্রাণের দাবি। একটা কথা বলা হয় যে, স্পিকার, প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা নারী। এটাকে বলা হচ্ছে নারীর ক্ষমতায়ন। কিন্তু বাস্তবিক অর্থে এখনও নারীরা, আমার বোনরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। ঘর থেকে বের হলেই তাদের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতা কাজ করে।

তিনি বলেন, আমরা দেখেছি বিরোধী দলের প্রার্থীকে ভোট দেয়ার কারণে চার সন্তানের জননী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। সেই ঘটনায় সারাদেশ উত্তাল হলেও মিথ্যা আশ্বাস দিয়েছিল সরকার। পরে ওই ঘটনার বিচার করেনি। ডাকসুতে যখন হামলা হলো সরকার বলল- তারা হার্ডলাইনে কিন্তু যারা ওই হামলার মূল কারিগর তারা কিন্তু মামলার আসামিও হয়নি। আমাদের দাবি থাকবে যেকোনো ঘটনায় যারাই প্রকৃত অপরাধী তাদের গ্রেফতার করুন। মনে রাখবেন আজ ঢাবি ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় কিন্তু ঢাবি শিক্ষার্থীরা জেগে উঠেছে।

এদিকে নিপীড়নের শিকার ওই ছাত্রীকে গণধর্ষণের আলামত মিলেছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ।

তিনি বলেন, নিপীড়নের শিকার ঢাবি ছাত্রীর শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাকে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে।

এর আগে সকালে কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবে যাওয়ার পথে একটি ঝোপের মধ্য থেকে ভিকটিমের বই-ঘড়ি-ইনহেলার উদ্ধার করা হয়।

র‍্যাব সূত্র জানায়, ঝোপের মধ্য থেকে ইউনিভার্সিটির বই, চাবির রিং, ইনহেলার, ঘড়িসহ বেশ কিছু আলামত পাওয়া গেছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, যে স্থানে আলামতগুলো পাওয়া গেছে সেখানে মেয়েটিকে ধর্ষণ করা হয়েছে।

এদিকে গণধর্ষণের ঘটনায় রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট থানায় একটি মামলা হয়েছে।

প্রসঙ্গত ক্লাস শেষে ক্যাম্পাস থেকে বান্ধবীর বাসায় যাওয়ার পথে রোববার রাতে রাজধানীর কুর্মিটোলায় গণধর্ষণের শিকার হন ওই ছাত্রী।

গভীর রাতে ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। তিনি বর্তমানে হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে চিকিৎসাধীন।

ওই তরুণী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি আবাসিক হলের শিক্ষার্থী। তিনি ক্যাম্পাসের একটি সংগঠনের সঙ্গে জড়িত। এই ঘটনায় ফুঁসে উঠেছে পুরো ক্যাম্পাস। রাতেই ধর্ষকদের বিচার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

ধর্ষণের প্রতিবাদে সোমবার সকাল থেকে ছাত্রলীগ, ছাত্রদল ও বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ বিক্ষোভ করছে।

জানা গেছে, রাজধানীর কুর্মিটোলায় বান্ধবীর বাসায় যেতে বিকেল সাড়ে ৫ টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে ওঠেন ওই ছাত্রী। বাস থেকে কুর্মিটোলা এলাকায় নামার পর অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজন তার মুখ চেপে ধরে। এতে তিনি অচেতন হয়ে পড়েন।

এরপর তাকে উপর্যুপরি ধর্ষণ করা হয়। রাত ১০টার দিকে চেতনা ফেরার পর তিনি সিএনজিচালিত অটোরিকশা নিয়ে বান্ধবীর বাসায় যান। বান্ধবীকে ঘটনা জানান। এরপর সহপাঠীরা তাকে আবাসিক হলে নিয়ে আসেন। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেলে নেয়া হয়।

রাতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম গোলাম রব্বানীসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক হাসপাতালে তাকে যান। তারা নিপীড়নের শিকার ওই ছাত্রীর সঙ্গে কথা বলেন।

ক্যান্টনমেন্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাজী সাহান গণমাধ্যমকে বলেন, পুলিশ ঘটনাটি জেনেছে। ছাত্রীর সঙ্গে কথা বলতে পুলিশ হাসপাতালে গেছেন। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ওই ছাত্রী বিবিসিকে বলেন, রোববার সন্ধ্যায় তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে চড়ে বান্ধবীর বাসায় যাচ্ছিলেন। উদ্দেশ্য একসঙ্গে পরীক্ষার প্রস্তুতি নেবেন।

সন্ধ্যা ৭টার দিকে তিনি কুর্মিটোলা এলাকায় বাস থেকে নামেন। সেখান থেকে অজ্ঞাত কয়েক ব্যক্তি তার মুখ চেপে ধরে পাশের একটি নির্জন স্থানে নিয়ে যায়। এরপর তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন।

নির্যাতনের একপর্যায়ে জ্ঞান ফিরে পান ওই ছাত্রী। পরে পাশবিক নির্যাতনে আবারও জ্ঞান হারান।

Bootstrap Image Preview