ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি নুরুল হক নুরের ওপর হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। এসময় নুরসহ অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে সাতজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
রবিবার(২২ ডিসেম্বর) বেলা পৌনে ১টার দিকে এ হামলা চালানো হয়।
নুরদের ওপর এমন হামলা দেখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রুশাদ ফরিদী ফেসবুক স্ট্যাটাসে ক্ষোভ প্রকাশ করে লিখেছেন,
‘শিক্ষকতা ছেড়ে দেয়ার সময় হয়েছে। চোখের সামনে ডাকসু ভিপি নুরু আর অন্যান্য ছাত্রদের মেরে শেষ করে ফেলা হল। কিছুই করতে পারলাম না। নিজেদের ছাত্রদের রক্ষা করতে পারি না এই শিক্ষকতার কি দাম আছে? ডাকসু অফিসের দোতলায় উঠে দেখি কেউ কেউ পানি পানি বলে চিতকার করছে। কেউ অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছে। ওরা দরজা বন্ধ করে বসেছিল। বার বার আশ্বাস দেয়ার পরেও ভয়ে দরজা খুলছে না। বলছিল, লাইট নিভিয়ে দিয়ে লোহার রড দিয়ে এলো পাথারি মারা হয়েছে। কয়েক বোতল পানি শুধু এগিয়ে দিতে পারলাম। এইটা একটা বিশ্ববিদ্যালয়? আর আমিও একজন শিক্ষক? ছিঃ ছিঃ ছিঃ’
হামলার পর আহত অবস্থায় ভিপি নুরের ফেসবুক থেকে এক ভিডিও বার্তায় বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম-আহ্বায়ক রাশেদ খান বলেন, ‘আমাদের অবস্থা খুব খারাপ। আমাদের রুমের মধ্যে লাইট বন্ধ করে বাঁশ-রড দিয়ে মেরেছে। সবার মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে। আমরা ডাকসু ভিপি নুরের অফিসে অবরুদ্ধ। আমাদের সবাই রক্ষা করুন।’
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি-প্রক্টরসহ পুলিশের সাহায্য কামনা করেন তিনি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ডাকসু ভবনের মূল ফটক বন্ধ করে নুরের ওপর লাঠিসোটা নিয়ে হামলা ও ভাঙচুর করা হয়। এ ছাড়া বাইরে থেকেও মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের নেতাকর্মীরা ডাকসুতে ইট-পাটকেল ছুড়ছেন।
জানা গেছে, মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের একাংশের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুলের নেতৃত্বে অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী এ হামলায় অংশ নেন। এ সময় ডাকসুর সদস্য ও ছাত্রলীগ নেতা রাকিবুল ইসলাম ঐতিহ্য তাদের বাধা দিতে গেলে তাকেও শিবির আখ্যা দিয়ে লাঞ্ছিত করেন তারা।
পরে সূর্যসেন হল সংসদের ভিপি মারিয়াম জামান সোহান এবং জিএস সিয়াম হামলায় অংশ নেন। তারাও লাঠিসোটা নিয়ে ভিপি নুর এবং অনুসারীদের মারধর শুরু করেন।
এসময় সেখানে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গেলে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত সাংবাদিকের মোবাইল কেড়ে নেন মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের নেতাকর্মীরা।