Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ শুক্রবার, মার্চ ২০২৪ | ১৫ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

স্কুলছাত্রীকে ধ'র্ষণ করতেন প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষক, পাহারা দিতেন শিক্ষিকা!

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২ ডিসেম্বর ২০১৯, ০৭:৪৬ PM
আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০১৯, ০৭:৪৬ PM

bdmorning Image Preview


বরিশালের বাকেরগঞ্জের ভোজমহল গ্রামে ৫ম শ্রেণীর ছাত্রীকে প্রধান শিক্ষকসহ দুইজন ধ'র্ষণ করায় গর্ভবতী হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। পঞ্চম শ্রেনীর ছাত্রী ধ'র্ষণে একজন জেলে থাকলেও বহাল তবিয়তে রয়েছেন প্রধান শিক্ষক (দায়িত্বপ্রাপ্ত) বাবুল ও তার সহযোগী একই স্কুলের শিক্ষক রেবা।

বুধবার রাতে শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি নির্যাতিতা স্কুল ছাত্রী বাবুল ও রেবার শাস্তির দাবি জানায়। নি'র্যাতিতা ভোজমহল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী এবং ওই গ্রামের হতদরিদ্র পরিবারের সদস্য।

মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অন্ত:সত্ত্বা পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রী জানায়, নয় মাস পূর্বে স্কুলের শিক্ষক রেবা তাকে ডেকে নিয়ে প্রধান শিক্ষক বাবুলের কক্ষে যেতে বলে। এরপর সেখানে গেলে প্রধান শিক্ষক বাবুল তাকে ধ'র্ষণ করে। আর বলে দেয় এ ঘটনা কাউকে জানালে তাকে প্রাণে মে'রে ফেলবে। এভাবে প্রায়দিনই বাবুল তাকে ধ'র্ষণ করত। বাইরে পাহারায় থাকতো শিক্ষিকা রেবা।

এর মধ্যে তার বাড়ি সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা জুয়েলও তাকে জোরপূর্বক ধ'র্ষণ করে। বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে বাসায় ঢুকে তাকে ধ'র্ষণ করে। প্রধান শিক্ষকের সাথে সাথে জুয়েলও তাকে একাধিকবার ধ'র্ষণ করে বলে জানায় মেয়েটি। জুয়েলও তাকে প্রা'ণনাশের হুমকি দিতো। ধ'র্ষণে গর্ভবতী হওয়ার চার মাস পর বিষয়টি তার মা বুঝতে পেরে তাকে জিজ্ঞাসা করলে সে সব বলে দেয়।

এরপর মেয়েটির মা স্কুলে গিয়ে সকল শিক্ষকের কাছে বিষয়টি জানালে তারা তাকে ভয়ভীতি দেখায়। এমনকি নি'র্যাতিত মেয়েটি এ ঘটনায় প্রধান শিক্ষকের স্ত্রীকে জানালে তিনিও নির্যাতিতাকে ভয়ভীতি দেখায়।

ঘটনার ৫ মাস পর বিষয়টি বাকেরগঞ্জ থানায় জানালে সেখানে মামলা দায়ের হয়। মামলা বাদী হচ্ছে মেয়েটির মা। কিন্তু ওই মামলা থেকে প্রধান শিক্ষক বাবুল ও শিক্ষক রেবাকে বাদ দিয়ে শুধু জুয়েলকে অভিযুক্ত করা হয়। জুয়েল বর্তমানে কারাগারে রয়েছে। নির্যাতিতা মেয়েটি আরো অভিযোগ করে প্রধান শিক্ষক বাবুল এভাবে স্কুলের বহু মেয়েকে ধ'র্ষণ করেছে। তাদের ভয়ভীতি দেখানোর কারনে কোন মেয়ে তার বিরুদ্ধে কিছু বলে না।

স্কুল সূত্র থেকে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষকের পদটি শূন্য রয়েছে। সেখানে বাবুল দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে কাজ করছেন। পূর্বে সে ভোজমহল এলাকার মেম্বর ছিল। এ কারণে তার বেশ প্রভাব থাকায় তার বিরুদ্ধে কেউ টু শব্দ পর্যন্ত করতে পারে না।

মেডিকেলের লেবার ওয়ার্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত নার্স শাহানাজ পারভীন বলেন, মেয়েটির শ্বাস কষ্ট হচ্ছে। নরমাল ডেলিভারী সম্ভব হবে না, সিজারিয়ানের প্রয়োজন হতে পারে। এ জন্য তার অভিভাবকদের রক্ত সংগ্রহ করতে বলা হয়েছে। রক্ত সংগ্রহ হলে সিজারিয়ান অপারেশন করা হবে।

এ ব্যাপারে ভোজমহল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (দায়িত্বপ্রাপ্ত) বাবুল হোসেন বলেন, এ অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে।

বাকেরগঞ্জ থানার ওসি আবুল কালাম বলেন, এ ঘটনায় ভিকটিমের মা বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছিলেন। ওই মামলার চার্জশিটও দেয়া হয়েছে।

ভিকটিমের অভিযোগ পুলিশ প্রধান শিক্ষক বাবুলের নাম বাদ দিয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে ওসি বলেন, পুলিশ যদি বাদ দিয়ে থাকে তাহলে ভিকটিম ২২ ধারায় ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে জবানবন্দি দিয়েছে। সেখানে কেন প্রধান শিক্ষকের নাম বললো না। আমার ধারণা কারাগারে থাকা জুয়েল ভিকটিমের নিকট আত্মীয়। হয়ত তাদের সাথে কোন গুছ প্রক্রিয়া হয়ে থাকতে পারে। এ জন্য ভিকটিম ওই কথা বলছে।

Bootstrap Image Preview