Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ শুক্রবার, মার্চ ২০২৪ | ১৫ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

টাকার বিপরীতে ফের বাড়ল ডলারের দাম

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৯ নভেম্বর ২০১৯, ১১:২৯ AM
আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০১৯, ১১:২৯ AM

bdmorning Image Preview


আন্তঃব্যাংক লেনদেনেই (ব্যাংকগুলোর নিজেদের মধ্যে কেনাবেচা) ডলারের দর ৮৫ টাকায় উঠেছে। ব্যাংকগুলো নগদ ডলার বিক্রি করছে ৮৭ টাকার বেশি দরে। খোলাবাজারে আরও বেশি; এক ডলারের জন্য গুণতে হচ্ছে ৮৭ টাকা ৪০ পয়সা।

মাসখানেক ধরে ডলারের বাজার চড়া। ৩১ অক্টোবর আন্তঃব্যাংক লেনদেনে ডলারের ছিল ৮৪ টাকা ৭০ পয়সা। অল্প অল্প বেড়ে বৃহস্পতিবার তা ৮৫ টাকা হয়েছে।

রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংক বৃহস্পতিবার ৮৭ টাকা দরে নগদ ডলার বিক্রি করেছে। অন্যদিকে খোলাবাজারে (কার্ব মার্কেটে) ডলার বিক্রি হয়েছে ৮৭ টাকা ৩০ পয়সায়।

আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে পাঁচ মাস আগে ৩১ অক্টোবর ডলার বিক্রি হয়েছিল ৮৪ টাকা ৫০ পয়সায়। এক বছর আগে ছিল ৮৩ টাকা ৯০ পয়সা।

অর্থনীতির গবেষক আহসান এইচ মনসুর খোলা বাজারে ডলারের দর বৃদ্ধি নিয়ে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সাম্প্রতিক দুর্নীতিবিরোধী অভিযানকে ঘিরে যে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে, তাতে একটি গোষ্ঠীর মধ্যে বিদেশে যাওয়ার প্রবণতা বেড়ে গেছে। আবার অনেকে দেশে থাকলেও টাকা পরিবর্তন করে ডলার করে রাখছেন।

“এ ক্ষেত্রে বেশিরভাগ লোকই খোলাবাজার থেকে ডলার কিনছেন। কারণ, ব্যাংক থেকে ডলার কিনতে গেলে তার জন্য নানা কাগজপত্র লাগে। কিন্তু খোলাবাজার থেকে সহজে টাকা দিয়ে ডলার কেনা যায়।

“এ পরিস্থিতিতে খোলাবাজারে ডলারের চাহিদা বাড়লেও সে অনুযায়ী সরবরাহ নেই। এ কারণেই চাপ বেড়ে গেছে।”

এক মাস আগেও খোলাবাজারে প্রতি ডলারের বিনিময় মূল্য ছিল ৮৫ টাকা ৫০ পয়সা। মঙ্গলবার প্রতি ডলার ৮৭ টাকা ৫০ পয়সা পর্যন্ত উঠেছিল বলে জানান ব্যবসায়ী রিপন।

বাংলাদেশ ব্যাংকও ডলারের চাহিদার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে বাজারে ডলার ছাড়ছে। চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের পাঁচ মাসে (১ জুলাই থেকে ২৮ নভেম্বর) ৩০ কোটি ডলার বিক্রি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

এর মধ্যে জুলাই মাসে বিক্রি করে ৩ কোটি ৬০ ডলার, আগস্টে ২ কোটি ৩০ লাখ ডলার।

চাহিদা না থাকায় সেপ্টেম্বরে কোনো ডলার বিক্রি করেনি বাংলাদেশ ব্যাংক। অক্টোবরের মাঝামাছি সময় থেকে চাহিদা বেড়েছে বলে জানান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা।

সাধারণত ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে চাহিদা তৈরি হলে ডলার বিক্রি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ব্যাংকগুলোর কাছে ২৩৩ কোটি ৯০ লাখ ডলার বিক্রি করেছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

দীর্ঘদিন ডলার-টাকার বিনিময় হার ধরে রাখা ঠিক হয়নি মন্তব্য করে ব্র্যাক ব্যাংকের চেয়ারম্যান আহসান মনসুর বলেন, “অনেক পিছিয়ে গেছি আমরা। আমাদের প্রতিযোগী দেশগুলো বিশ্ববাজার দখল করতে তাদের মুদ্রার মান অনেক কমিয়েছে; আমরা করিনি।”

এখন টাকার বিপরীতে ডলারের দাম বাড়াতে ‘বড় ধরনের অ্যাকশনে’ যাওয়ার পক্ষপাতি তিনি। তার হিসাবে, ডলারের দর এখন ৯৩ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ৯১ টাকা ৮০ পয়সা হওয়া উচিৎ।

গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান মনসুর মনে করেন, ডলারের দাম বাড়ালে রপ্তানি আয়ে বিপর্যয় যেমন কেটে যাবে, তেমনি প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সও বাড়বে।

এখন প্রণোদনা দিয়ে সরকার ‘ভুল’ পথে হাঁটছে বলে মনে করেন তিনি।

“নগদ সহায়তা-প্রণোদনা দিয়ে রেমিটেন্স-রপ্তানি বাড়ানো সম্ভব নয়। এটা একটা ভুল সিদ্ধান্ত। এই মুহূর্তে যেটা করতে হবে সেটা হল ডলারের বিপরীতে আমাদের টাকার মান কমাতে হবে। যে কাজটি আমাদের কমপিটিটর দেশ চীন, ভারত ও ভিয়েতনাম প্রতিনিয়ত করছে।”

ডলারের দাম বাড়ালে আমদানি খরচ বেড়ে বাজারে নানা পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার শঙ্কাও থাকে।

এনিয়ে আহসান মনসুর বলেন, “আমদানির ক্ষেত্রে আমরা স্বস্তিদায়ক অবস্থায় আছি। গত অর্থবছরে মাত্র দেড় শতাংশের মতো আমদানি বেড়েছিল। চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) আড়াই শতাংশের মতো কমেছে।

Bootstrap Image Preview