Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৮ বৃহস্পতিবার, মার্চ ২০২৪ | ১৪ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

ক্রেতাশূন্য হাট, বিক্রি না হওয়ায় ফেরত গেছে পেঁয়াজ

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৯ নভেম্বর ২০১৯, ০৯:২১ PM
আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০১৯, ০৯:২১ PM

bdmorning Image Preview


বিগত গত কয়েক সপ্তাহ থেকে পেঁয়াজের দাম লাফিয়ে বাড়ায় চরম বিপাকে পড়েছে সাধারণ ক্রেতারা। স্বাভাবিক অবস্থায়  প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হতো ৪৫ টাকা দরে। কিন্তু হঠাৎ করে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধের খবরে দ্বিগুণেরও বেশি দাম বৃদ্ধি করেছেন ব্যবসায়ীরা। ফলে চড়া দামেই পেঁয়াজ কিনতে বাধ্য হচ্ছেন ক্রেতারা। গুদামে পর্যাপ্ত পেঁয়াজ মজুদ থাকলেও বাজারে দেখা মেলেনি ফলে পেঁয়াজের দাম ঠেকেছিল ৩০০ পর্যন্ত।

সম্প্রতি দেশি পেঁয়াজের উদপাদন শেষ পর্যায়ে। স্থানীয় বাজার গুলোতে উঠতে শুরু করেছে দেশে উৎপাদিত পেঁয়াজ।শুধু কৃষকেরাই নন, অনেক ব্যবসায়ী ও মজুতদারেরাও পেঁয়াজ নিয়ে এসেছিলেন হাটে। এসব পেঁয়াজের বেশির ভাগই গত মার্চ-এপ্রিলে উৎপাদিত স্থানীয় দেশি পেঁয়াজ। বেশি লাভের আশায় মজুত করে রাখা হয়েছিল। এরই মধ্যে নতুন পেঁয়াজ উঠতে শুরু করায় ও বিদেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানির খবরে কৃষক ও মজুতদারেরা আজ মঙ্গলবার ঘরে রাখা প্রায় সব পেঁয়াজ হাটে এনে তুলেছিলেন। কিন্তু হাটে ক্রেতা তেমন ছিল না বললেই চলে। যারা এসেছিলেন তাঁরা তেমন একটা কেনেননি। সকালের দিকে বিক্রেতারা যেখানে প্রতি কেজি পুরোনো পেঁয়াজের দাম হেঁকেছিলেন ১৫০ থেকে ১৭৫ টাকা সেখানে দুপুর ১২টার দিকে দাম নেমে আসে ১০০ থেকে ১৩০ টাকায়। আর আগাম জাতের নতুন পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে। কিন্তু এই দামেও হাটে পেঁয়াজ নিয়ে আসা বেশির ভাগ কৃষক ও ব্যবসায়ী বিক্রি করতে পারেননি। তাই হাটে ওঠা বেশির ভাগ পেঁয়াজ ফেরত গেছে।

পেঁয়াজের ভান্ডার বলে খ্যাত পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার করমজা হাটে আজ মঙ্গলবার এ দৃশ্য দেখা গেল। মাত্র তিন দিন আগে গত শনিবার এই হাটে পুরোনো দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১৭৫ থেকে ২২৫ টাকায় আর আগাম জাতের নতুন পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি দরে।

পেঁয়াজের ভান্ডার বলে পরিচিত সাঁথিয়া উপজেলার করমজা হাটটি। শুধু সাঁথিয়াই নয়, সুজানগর ও বেড়া উপজেলায় উৎপাদিত পেঁয়াজও এই হাটে বিক্রি হয়। ঢাকা, চট্টগ্রাম, টাঙ্গাইলসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে পেঁয়াজের ব্যাপারীরা এই হাটে পেঁয়াজ কিনতে আসেন।

হাটে পেঁয়াজ নিয়ে আসা সাঁথিয়ার শহীদনগর গ্রামের পেঁয়াজচাষি আব্দুল হামিদ বলেন, ‘ঘরে শেষ পর্যন্ত আড়াই মণের মতো পেঁয়াজ ছিল। সেই পেঁয়াজ আইজ হাটে আনছি। গত হাটেও ২০০ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বেইচ্যা গেছি। আর আইজ কেউ দামই কয়না।’

হাটে পেঁয়াজ কিনতে এসেছিলেন টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরের ইকবাল হোসেন ও আমিনুল ইসলাম। এই হাট থেকে পাইকারি দরে পেঁয়াজ কিনে ভূঞাপুরের বাজারে খুচরো দামে বিক্রি করে থাকেন তাঁরা। তাঁরা জানান, গতকাল দুজনে মিলে ৫০০ কেজির মতো পেঁয়াজ কিনেছেন। অথচ অন্য সময়ে এই হাট থেকে তাঁরা আড়াই থেকে তিন হাজার কেজি পেঁয়াজ কিনে নিয়ে যান। তাঁদের ভাষ্য, মানুষ পেঁয়াজ খাওয়া একেবারেই কমিয়ে দিয়েছে। তাই এখান থেকে পেঁয়াজ কেনার পর টাঙ্গাইলে নিয়ে তাঁরা বিক্রি করতে পারছেন না। গত কয়েক দিনে তাঁদের ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা লোকসান হয়েছে বলে তাঁরা জানান।

হাটের পেঁয়াজের আড়তদার মুন্নাফ প্রামাণিক বলেন, ‘আজকের হাটে পেঁয়াজের আমদানি হঠাৎ করেই ব্যাপক বেড়েছে। কিন্তু হাটে ব্যাপারীদের উপস্থিতি কম থাকায় পেঁয়াজের বেচাকেনা তেমন হয়নি। অন্য সময় প্রতি হাটবারে ৫০ থেকে ৬০ ট্রাক পেঁয়াজ এখান থেকে ঢাকা বা চট্টগ্রামে যায়। কিন্তু আজ মাত্র চার ট্রাক (প্রতি ট্রাকে ১৫ মণ) পেঁয়াজ এই হাট থেকে গেছে।

Bootstrap Image Preview