Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৮ বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৫ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

পেঁয়াজের বিকল্প হিসেবে আসছে ‘চিভ’

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৬ নভেম্বর ২০১৯, ১০:৩১ PM
আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০১৯, ১০:৩১ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত ছবি


সমগ্র দেশবাসী যখন পেঁয়াজের ঊর্ধ্বমুখী দামে দিশেহারা, তখনি বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বারি) বিজ্ঞানীরা আবিস্কার করেছেন পেঁয়াজের এমন এক বিকল্প যাতে করে রান্নায় আর পেঁয়াজ ব্যবহার করা লাগবে না। দেশের মাটিতে পেঁয়াজের বিকল্প হিসেবে ‘চিভ’ নামক এক মসলা চাষে সফল হয়েছেন তারা।

বারি এর আঞ্চলিক মশলা গবেষণা কেন্দ্রের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. নূর আলম চৌধুরী জানান, চিভ মসলাটি উত্তর চীন, সাইবেরিয়া ও মঙ্গোলিয়া অঞ্চলের। দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টায় সেই মসলার চাষ বাংলাদেশের মাটিতে করতে সফল হয়েছি আমরা।

শুধু তাই নয়, উচ্চ ফলনশীল জাত উদ্ভাবনের লক্ষ্যে দীর্ঘদিন চিভের ওপর গবেষণা করেও সফলও হয়েছেন। তারা বারি চিভ-১ নামের একটি জাত উদ্ভাবন করেছেন যা বছর জুড়েই চাষ ও ফলনের উপযোগী।

এ গবেষণায় ড. মো. নূর আলম চৌধুরীকে সাহায্য করেছেন ড. মোস্তাক আহমেদ এবং ড. আলাউদ্দিন খান ও মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান।

ড. মো. নূর আলম চৌধুরী জানান, চিভে পেঁয়াজ ও রসুনের স্বাদ এবং গুণাগুণ উভয়েই বিদ্যমান। তাই আপৎকালীন সময়ে পেঁয়াজ-রসুনের বিকল্প হয়ে উঠতে পারে এই চিভ। পৃথিবীর অনেক দেশে চিভ সাধারণত স্যুপ, সালাদ ও চাইনিজ ডিসে ব্যবহৃত হয়। এর পাতা লিলিয়ান আকৃতির ফ্ল্যাট, কিনারা মসৃণ ও এর ভালভ লম্বা আকৃতির। মসলাটি হজমে সাহায্য ও রোগ নিয়ন্ত্রণ করে। এর মধ্যে ক্যান্সার প্রতিরোধী গুণাগুণও বিদ্যমান রয়েছে। এর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, ভিটামিন বি-১, বি-২, নায়াসিন, ক্যারোটিন ও খনিজ উপাদান বিদ্যমান।

২০১৭ সালে বারি’র এই তিন বিজ্ঞানী উন্নত জাতের উচ্চফলনশীল চিভ উদ্ভাবনে গবেষণা শুরু করেন। শুরুর দিকে দেশের পাহাড়ি এলাকা সিলেট ও চট্টগ্রামে চাষ করতেন। কিন্তু এখন পাবনা, ফরিদপুর, রাজবাড়ী, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, মাগুরা, বগুড়া ও লালমনিরহাট এলাকায় চিভ চাষের উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে বলেছে জানান কৃষিবিদরা। চিভ গাছ একবার লাগালে দীর্ঘদিন ধরে ফল পাওয়া যায়। বাড়ির আঙিনায় বা টবে এই ফসলের চাষ করা যায়।

বারি’র মশলা ফসল বিশেষজ্ঞ ও গাজীপুর আঞ্চলিক মশলা গবেষণা কেন্দ্রের (বিএআরআই) প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. শৈলেন্দ্র নাথ মজুমদার জানান, চিভকে পেঁয়াজ-রসুনের বিকল্প হিসেবে আদর্শ একটি মশলা হতে পারে। বাঙালিরা এতে অভ্যস্ত হওয়াই এখন সময়ের ব্যাপার। পেঁয়াজ-রসুনের ঘাটতি চিভ দিয়েই মেটানো সম্ভব হবে বলে মনে করছি আমরা।

উল্লেখ্য, বিবিএস ২০১৭ এর তথ্য অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে বাৎসরিক ২২ লাখ মেট্রিক টন পেঁয়াজের চাহিদার বিপরীতে উৎপাদন হয় ১৭.৩৫ লাখ মেট্রিক টন। সেক্ষেত্রে, পেঁয়াজের বিকল্প হিসেবে চিভ ব্যবহার করলে বাকি ৫ মেট্রিক টন পেঁয়াজের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব।  

  

Bootstrap Image Preview