Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৫ বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

লাগামহীন পেঁয়াজসহ নিত্যপণ্যের দাম

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৮ অক্টোবর ২০১৯, ০২:৫১ PM
আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০১৯, ০২:৫১ PM

bdmorning Image Preview


রাজধানীসহ সারাদেশে এখনও লাগামহীন পেঁয়াজের বাজার। নজরদারি না থাকায় বিক্রেতাদের খেয়াল-খুশি মতো উঠানামা করছে দর।সপ্তাহের ব্যবধানে ১৫ থেকে ৩০ টাকা বেড়ে আবারও রাজধানীর খুচরা বাজারে কেজিপ্রতি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১১৫ টাকা দরে। এছাড়া আলুর দাম কেজিতে বেড়েছে আট টাকা পর্যন্ত।

গত সপ্তাহে দেশি পেঁয়াজ ৮৫ থেকে ৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে রাজধানীর বাজারগুলোতে। এ নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।

বিক্রেতারা বলছেন, পাইকারি বাজারে দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ কম থাকায় সেখানে বাড়তি দরে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। এর প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারে।

এদিকে ক্রেতারা বলছেন, বাজারে কোনো পেঁয়াজের ঘাটতি নেই। এছাড়া বাজারে আমদানি করা পেঁয়াজে ভরা। এখানে পেঁয়াজের দামতো বাড়ার কোনো কারণ নেই।

শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) রাজধানীর শান্তিনগর, সেগুনবাগিচা, মালিবাগ, মালিবাগ রেলগেট বাজার, খিলগাঁও এবং ফকিরাপুল কাঁচা বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।

এ সব বাজারে প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকা থেকে ১১৫ টাকা কেজি দরে, আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজ ৮০ থেকে ৮৫ টাকা, আমদানি করা মিশরের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯৫ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে। অথচ এক সপ্তাহ আগে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৮৫ টাকা থেকে ৯০ টাকা কেজি দরে, আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজ ৭০ থেকে ৭৫ টাকা, আমদানি করা মিশরের পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৮০ থেকে ৮৫ টাকা কেজি দরে।

বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ থাকলেও এর বাড়তি দাম যেন মানতে পারছেন না ক্রেতারা। তাদের অভিযোগ বাজারে পেঁয়াজে ভরপুর। এছাড়া আমদানি করা পেঁয়াজ বাজারে আসছে প্রতিনিয়ত সেক্ষেত্রে দর বাড়ার কোনো কারণই নেই।

এ বিষয়ে এস এম শরিফুল নামে এক ক্রেতা বলেন, গত দুই-তিন সপ্তাহ আগে পেঁয়াজের ঘাটতি থাকায় সরকার বিভিন্ন দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি করায় দামও কমে যায়। কিন্তু হঠাৎ করে আবার পেঁয়াজের দর বাড়ার কোনো কারণ দেখি না। বাজারে পেঁয়াজের ঘাটতি নেই। তবে দাম বাড়ানোর পেছনে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট জড়িত।

এ ক্রেতার অভিযোগের সঙ্গে একমত না শান্তিনগর বাজারের ব্যবসায়ী ওমর ফারুক। তিনি বলেন, দেশি পেঁয়াজের ঘাটতি রয়েছে বাজারে। এ জন্য দাম বাড়তি। যেহেতু এ পেঁয়াজের ঘাটতি রয়েছে। এ জন্য অন্য সব পেঁয়াজের দরও বাড়তি রয়েছে। তবে সরবরাহ বাড়লে আবারও দাম কমবে বলে জানান তিনি।

এদিকে, খোলা বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি অব্যাহত রেখেছে সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)। সেখানে কেজিপ্রতি ৪৫ টাকা দরে পেঁয়াজ বিক্রি করা হচ্ছে। একজন ক্রেতা টিসিবির ট্রাক সেল থেকে সবোর্চ্চ দুই কেজি পর্যন্ত পেঁয়াজ কিনতে পারেন।

এদিকে, সরবরাহ বাড়ায় শীতের আগাম সবজি শিমের দাম সপ্তাহের ব্যবধানে কিছুটা কমেছে। প্রতিকেজি শিম বিক্রি হচ্ছে ৮০-১০০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১২০-১৪০ টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে শিমের দাম কেজিতে ৪০ টাকা পর্যন্ত কমেছে।

শিমের পাশাপাশি কিছুটা দাম কমেছে কপির দাম। ছোট আকারের ফুলকপি মানভেদে বিক্রি হচ্ছে ১৫-২৫ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ২০-৩০ টাকা পিস। আর গত সপ্তাহে ৩০-৪০ টাকা পিস বিক্রি হওয়া বাঁধাকপির দাম কমে ২০-৩০ টাকায় দাঁড়িয়েছে। তবে দাম অপরিবর্তিত রয়েছে মুলার দাম। আগের সপ্তাহের মতো মুলা বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪০ টাকা কেজি দরে।

অধিকাংশ শীতের আগাম সবজির দাম কমলেও কয়েক মাস ধরে চড়া দামে বিক্রি হওয়া পাকা টমেটো ও গাজরের দাম এখনো চড়াই রয়েছে। পাকা টমেটো আগের সপ্তাহের মতো প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৪০ টাকা। গাজর বিক্রি হচ্ছে ১০০-১২০ টাকা।

এর সঙ্গে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে লাউ, করলা, ঝিঙে, বরবটি, বেগুন, পটল, ঢেঁড়শ, উসি, মিষ্টি কুমড়া, ধুন্দুলসহ সব ধরনের সবজি। গত সপ্তাহের মতো ছোট আকারের লাউ বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকা। করলা, বরবটি, বেগুন, চিচিংগা, ঝিঙা, ধুনদলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০-৭০ টাকার মধ্যে। এ সবজিগুলোর দাম সপ্তাহের ব্যবধানে অপরিবর্তিত রয়েছে।

কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী মো: শাহজাহান আলী বলেন, আস্তে আস্তে শীতের আগাম সবজির দাম কমতে শুরু করেছে। শিম, কপির দাম বেশ কমেছে। এখন যদি টানা বৃষ্টি বা বন্য না হয়, তাহলে কিছুদিনের মধ্যে সব ধরনের সবজির দাম কমে যাবে।

এদিকে,মাংসের বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতিকেজি গরু ও মহিষের মাংস বিক্রি হচ্ছে ৫৫০-৫৭০ টাকা, খাসি ৭০০-৮০০ টাকা, বয়লার ১৩৫-১৪০ টাকা, লাল লেয়ার ১৮০-২০০ টাকা, পাকিস্তানি কক ২৫০-২৭০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ১১০-১২০ টাকা ডজন।

মাছ বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ২৪০-৩৫০ টাকা কেজি। এছাড়া তেলাপিয়া ১৩০-১৬০ টাকা, পাঙাস ১২০-১৫০ টাকা, শিং ৪০০-৬০০ টাকা, কাচকি ২৫০-৩৫০ টাকা, পাবদা ৪০০-৬০০ টাকা, ট্যাংরা ৫৫০-৭০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

Bootstrap Image Preview