Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ শুক্রবার, মার্চ ২০২৪ | ১৫ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

শান্তিতে নোবেল পেলেন কৃষকের ছেলে আবি আহমেদ!

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১ অক্টোবর ২০১৯, ০৬:০২ PM
আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০১৯, ০৬:০২ PM

bdmorning Image Preview


চলতি বছরে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রী আবি আহমেদ আলী। শান্তি ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতার জন্য তাকে এ পুরস্কার দেয়া হয়েছে।

শুক্রবার নরওয়ের স্থানীয় সময় সকাল ১১টায় (বাংলাদেশ সময় বিকেল ৩টা) রাজধানী অসলো থেকে নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটি এবারের শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ীর নাম ঘোষণা করে।

গত বছর ইরিত্রিয়ার সঙ্গে একটি শান্তি চুক্তিতে সম্মত হয় ইথিওপিয়া। ক্ষমতায় আসার মাত্র ছয়মাসের মধ্যেই তিনি এই অবিশ্বাস্য সিদ্ধান্তটি নিয়েছেন।

এতে ১‌৯৯৮-২০০০ সালের সীমান্ত যুদ্ধের পর গত ২০ বছরের অচলাবস্থার নিরসন হয়েছে। ওই যুদ্ধে ৭০ হাজারের বেশি লোক নিহত হয়েছেন।

নোবেল পুরস্কারের ওয়েবসাইটে দেয়া তথ্যমতে, এ বছর শান্তিতে নোবেল পুরস্কারের জন্য ৩০১টি মনোনয়ন জমা পড়েছিল। এর মধ্যে ২২৩ জন ব্যক্তি ও বাকি ৭৮টি প্রতিষ্ঠান।

তবে গত ৫০ বছর ধরেই বিজয়ীর নাম ঘোষণার আগে মনোনীতদের তালিকা প্রকাশ করে না নোবেল কর্তৃপক্ষ।

আগামী ডিসেম্বরে অসলোতে বিজয়ীকে নয় মিলিয়ন সুইডিশ ক্রোনার পুরস্কার দেয়া হবে।

২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর ইথিওপিয়ায় ব্যাপক উদারীকরণ সংস্কার করেন আবি আহমেদ। দেশটির কঠোর নিয়ন্ত্রীত সমাজ ব্যবস্থায় তিনি বড় ধরনের একটা নাড়া দিতে সক্ষম হয়েছেন।

কারাগার থেকে কয়েক হাজার বিরোধী দলীয় নেতাকে তিনি মুক্ত করে দেন। এরমধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে-তিনি প্রতিবেশী ইরিত্রিয়ার সঙ্গে দুই দশকের যুদ্ধের ইতি ঘটিয়ে একটি শান্তি চুক্তি সই করেন।

পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত বিশ্ব গড়ার চেষ্টায় গত বছর শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পায় ইন্টারন্যাশনাল ক্যাম্পেইন টু অ্যাবোলিশ নিউক্লিয়ার উইপনস- আইসিএএন।

আগামী ১৪ অক্টোবর অর্থনীতিতে এবারের নোবেল বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হবে।

গরিব কৃষকের সন্তান, গোয়েন্দা কর্মকর্তা থেকে আফ্রিকার দ্রুত বর্ধমান অর্থনীতির সংস্কারের নেপথ্য নায়কে পরিণত হয়েছেন আবি।

প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে কয়েক দশকের ঘা-কে তিনি সেরে তুলেছেন। তাকে দেশটির এক অবিশ্বাস্য নেতা হিসেবে আখ্যায়িত করা হচ্ছে।

শুক্রবার নোবেল জয়ের মধ্য দিয়ে তার জীবনের অবিশ্বাস্য গল্পের নতুন একটি অধ্যায় সূচিত হয়েছে।

৪৩ বছর বয়সী এই আফ্রিকান নেতা নিজ সমাজ ব্যবস্থাকে একটা বড় পরিবর্তনের দিকে নিয়ে গেছেন। সেই গতিকে তিনি সীমান্ত ছাড়িয়ে বহুদূর ছড়িয়ে দিয়েছেন।

তিনি বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের কেবল কারাগার থেকে মুক্ত করে দিয়েই ক্ষান্ত হননি, তাদের ওপর চালানো রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন ও নৃশংসতার জন্য ক্ষমাও চেয়েছেন।

এছাড়া তার পূর্বসূরি যাদের সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে দেশ ছাড়া করেছিল, সেই সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্যদের তিনি দেশে স্বাগত জানিয়েছেন।

তবে অর্থনৈতিক পরিকল্পনার ক্ষেত্রে আবি আহমেদ প্রতিকূলতাও রয়েছে। বিশেষ করে তরুণরা তাকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দিতে বিক্ষোভও করছেন।

কিন্তু এসব সত্ত্বেও মিত্রদের প্রত্যাশা, তার ব্যক্তিগত উচ্চাভিলাষ তার তার উত্থানকে দীর্ঘায়িত করবে।

পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর বেশাসায় এক মুসলমান বাবা ও খ্রিষ্টান মায়ের ঘরে জন্ম নিয়েছেন আবি। বিদ্যুৎ ও পানির স্বল্পতা ছিল তাদের বাড়িতে। এমনকি তাকে ফ্লোরে ঘুমিয়ে বড় হতে হয়েছে।

গত মাসে একটি রেডিওতে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, নদী থেকে আমাদের পানি বয়ে নিয়ে আসতে হতো। সপ্তম গ্রেডে পড়ার আগ পর্যন্ত বিদ্যুৎ কিংবা অ্যাসফল্ট আস্তীর্ণ রাস্তা দেখেননি তিনি।

ক্ষমতাসীন জোট ইথিওপিয়ান পিপল’স রেভালুশনারি ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইপিআরডিএফ) গঠনের মধ্যে দিয়ে আবি আহমেদের রাজনৈতিক উত্থান ঘটে।

প্রযুক্তির প্রতি তার আলাদা মুগ্ধতা রয়েছে। কিশোর বয়েসে তিনি সামরিক বাহিনীর একজন রেডিও অপারেটর হিসেবে যোগ দেন।

সরকারে ঢোকার আগে তিনি লেফটেন্যান্ট কর্নেল পদবি পেয়েছিলেন। ইথিওপিয়ার সাইবার গোয়েন্দা সংস্থা ইনফরমেশন নেটওয়ার্ক সিকিউরিটি এজেন্সির প্রতিষ্ঠাতা প্রধান ছিলেন তিনি।

Bootstrap Image Preview