Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ শুক্রবার, মার্চ ২০২৪ | ১৫ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

ঢাবিতে মেধাতালিকায় স্থান পেয়ে 'বিপদে' যমজ দুই বোন!

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৪ অক্টোবর ২০১৯, ০৮:২৪ PM
আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০১৯, ০৮:২৪ PM

bdmorning Image Preview


সাদিয়া আক্তার সুরাইয়া ও নাদিরা ফারজানা সুমাইয়া। তারা যমজ বোন। দুজনেই মাধ্যমিকে পেয়েছেন এ প্লাস। উচ্চ মাধ্যমিকে পেয়েছেন গোল্ডেন এ প্লাস। এখন সুযোগ পেয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণিজ্য অনুষদে পড়ার।

দিনমজুর বাবা মহিদুল হাওলাদার আর গৃহিণী মা শাহিদা বেগমের যমজ এ সন্তান প্রাচ্যের অক্সফোর্ডে পড়ার সুযোগ পেলেও ভর্তিসহ পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়ার সামর্থ্য নেই তাদের। উচ্চ শিক্ষার সুযোগ মিললেও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে স্বপ্ন পূরণের। তারা বলছেন, অর্থনৈতিক সমস্যাই তাদের সামনে এগিয়ে যাওয়ার বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (গ ইউনিট) বাণিজ্য অনুষদে সুমাইয়ার মেধাক্রম ৮৪৬ এবং সুরাইয়ার মেধাক্রম ১১৬৩। বাগেরহাট জেলা সদরের পৌরসভার হরিণখানা গ্রামে বেড়ে ওঠা তাদের। তাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির শেষ দিন ৩১ অক্টোবর।

সুমাইয়া ও সুরাইয়া বলেন, শৈশব থেকেই দারিদ্র্যতার মধ্যে বেড়ে উঠেছি। পারিবারিক অসচ্ছলতার কারণে মাধ্যমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত আমরা টিউশনি করিয়ে পড়াশোনার খরচ জোগাড় করেছি। স্বপ্ন দেখেছি যেন আমরা দুই বোন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো স্বনামধন্য একটি প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করতে পারি।

তাদের মা শাহিদা বেগম বলেন, অর্থনৈতিক দৈন্যদশার মধ্যে দুই মেয়েকে পড়ালেখা করিয়েছি। ওরা পড়ালেখা করতে চায়। ওরা সুযোগ পেয়েছে আমারও ইচ্ছা পড়ালেখা চালিয়ে যাক। তবে আমার যে সামর্থ্য তাতে দুইজনকে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানো অনেক কষ্ট। তারপরও চেষ্টা করছি সকলের সাহায্য নিয়ে যদি দুজনকে ভর্তি করতে পারি। তাহলে পড়াশোনা চালিয়ে নিতে পারবে ওরা।

দুই বোনকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করার জন্য যে পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে সেই পরিমাণ টাকা জোগাড় করতে পারছি না আমরা। এ কারণে পরিবারের সবাই চিন্তাই আছি।

ভর্তি প্রস্তুতিতে সহযোগিতা করেছেন ইউসুফ আলী শিমুল। শিমুল বলেন, ওরা বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাবার পর তাদের বাড়িতে প্রথম যখন গেছি আমার কান্না পাচ্ছিল বাড়ির অবস্থা দেখে। ভাবছিলাম এমন অসচ্ছল পরিবার থেকে সৃষ্টিকর্তার রহমত আর ওদের আপ্রাণ প্রচেষ্টা ছাড়া প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাওয়া সম্ভব না।

আমি তাদের কিছুদিন গাইড দেবার সুযোগ পেয়ে নিজেকে খুবই সৌভাগ্যবান মনে করছি। আমার চাওয়া টাকার অভাবে যেন এমন মেধাবীদের স্বপ্ন পূরণে কোনো প্রতিবন্ধকতা তৈরি না হয়। সমাজের বিত্তবানরা এগিয়ে এলে এই দুই বোনের স্বপ্ন পূরণ হবে।

তাদের বিষয়ে বাগেরহাট সরকারি পিসি কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রইস সরদার বলেন, মেয়ে দুটি খুবই মেধাবী। অত্যন্ত গরিব পরিবারের তারা। ওদের বাবা রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। কেউ যদি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয় তাহলে হয়তো তারা লেখাপড়াটা চালিয়ে যেতে পারবে।

Bootstrap Image Preview