Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২০ শনিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

শেরপুরে পাহাড়ি ঢলে নদীর তীর রক্ষা বাঁধ ধ্বস

শেরপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ১৬ জুলাই ২০১৯, ০৪:৪৫ PM
আপডেট: ১৬ জুলাই ২০১৯, ০৪:৪৫ PM

bdmorning Image Preview


টানা ভারি বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের তোড়ে শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার মরিচপুরান ইউনিয়নের ২টি স্থানে ভোগাই নদীর তীর রক্ষা বাঁধ ধ্বসে গেছে। 

এসব এলাকা দিয়ে ওই ইউনিয়নের অন্তত ৫ গ্রামে পানি প্রবেশ করছে। এছাড়াও টানা বর্ষণে উপজেলার মোট ৭টি ইউনিয়নের ৪২টি গ্রাম পানিতে সয়লাব হয়েছে। তলিয়ে গেছে ২৯০ হেক্টর রোপা-আমনের বীজতলা ও ভেসে গেছে সাড়ে তিনশ পুকুরের মাছ। জমিতে বালু পড়ে বিনষ্ট হয়েছে বেশকিছু আবাদী জমি। বন্ধ রয়েছে ১৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।

সরকারি হিসাব মতে, গত ১১ দিনের টানা ভারি বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে উপজেলা চেল্লাখালী ও ভোগাই নদী দুটির বিভিন্ন স্থানে বেড়িবাঁধ হুমকির মুখে পড়েছে।

ইতিমধ্যেই ভোগাই নদীর পৃথক তিনটি স্থানে প্রায় এক কিলোমিটার বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তন্মধ্যে মরিচপুরান ইউনিয়নের উত্তর কোন্নগর রাজাখালপাড় ও ফকিরপাড়ায় প্রায় ৮শ ফুটের মতো বাঁধ ধ্বসে আশপাশের গ্রামে ঢলের পানি প্রবেশ করছে।

খলাভাঙ্গা এলাকায় আগে থেকে ভাঙ্গা প্রায় এক কিলোমিটার অংশ দিয়ে প্রবল বেগে পানি প্রবেশ করছে আশপাশের এলাকায়। রামচন্দ্রকুড়া ইউনিয়নের বেশকিছু এলাকায় ভোগাই নদীর বাঁধ ধ্বসে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে।

অব্যাহত ভারি বর্ষণ ও ঢলের পানিতে ইতিমধ্যেই উপজেলার মরিচপুরান, যোগানিয়া, কলসপাড়, বাঘবেড়, নালিতাবাড়ী, কাকরকান্দি ও রাজনগর ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল তলিয়ে গেছে। এসব এলাকার প্রায় সাড়ে তিনশ পুকুরের মাছ, ২৯০ হেক্টর রোপা-আমন বীজতলা ও শাক-সবজির ক্ষেত বিনষ্ট ছাড়াও কাঁচা প্রায় ৪০ কিলোমিটার গ্রামীণ রাস্তা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।

চারপাশ পানিতে নিমজ্জিত হওয়ায় বন্ধ রয়েছে মোট ১৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ভাঙ্গন কবলিত এলাকায় নদী তীরবর্তী জমিগুলোতে বালুর স্তর পড়ে বিনষ্ট হয়েছে বেশকিছু ফসলি জমি। তবে কোথাও ঘর-বাড়িতে পানি উঠেনি। অবশ্য টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের পানি প্রবেশ করায় জলাবদ্ধতায় দূর্ভোগে পড়েছেন কয়েক হাজার পরিবার।

ইতিমধ্যেই ওইসব ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা।

উত্তর কোন্নগর রাজাখালপাড় এলাকার বাসিন্দা আক্কাছ আলী (৫০) জানান, ভোগাই নদীর বাঁধ ভেঙ্গে তার ৫ কাঠা জমিতে বালু পড়েছে।

একই গ্রামের চাঁন মিয়া (৪২) জানান, বালুর স্তর পড়ে তার প্রায় ৫ একর জমি নষ্ট হয়ে গেছে।মরিচপুরান মৌলভীপাড়া গ্রামের মৎস চাষী আইয়ুব আলী (৩৮) জানান, তার মাছের ঘেরের প্রায় ৬৫ হাজার শিং মাছ ভেসে গেছে। ভেসে গেছে ২০ মণের মতো সাধারণ জাতের মাছ।

মরিচপুরান ইউপি চেয়ারম্যান খন্দকার শফিকুল ইসলাম ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করে জানিয়েছেন, ঢলের পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথেই তিনি ভোগাই নদীর তীর রক্ষা বাঁদ মেরামতের জন্য যাবতীয় প্রস্তুতি ইতিমধ্যেই সম্পন্ন করেছেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শরিফ ইকবাল রোপা-আমন বীজতলা ক্ষতিগ্রস্তের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, দু-এক দিনের মধ্যে পানি নেমে গেলে কোন ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা নেই।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) লুবনা শারমিন জানান, ইতিমধ্যেই নদী তীর রক্ষা বাঁধ মেরামতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে বিতরণের জন্য ১০ মেট্টিকটন জিআর এর চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশাসন সবসময় সতর্ক ও তৎপর রয়েছে।

Bootstrap Image Preview