বাগেরহাটের মোল্লাহাটে দেড় বছরের শিশু ডিপজল হত্যার ঘটনায় বিচারিক আদালতের দেয়া মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত শিশুর মা-সহ তিন আসামিকে খালাস দিয়ে রায় ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার (৯ জুলাই) আসামিদের আপিল মঞ্জুর এবং ডেথ রেফারেন্স খারিজ করে হাইকোর্টের বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ ও বিচারপতি সহিদুল করিমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রায় দেন।
আদালতে আজ আসামিপক্ষে ছিলেন এ কে এম ফজলুল হক খান ফরিদ। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী সাইফুর রহমান রাহি। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এম এ মান্নান মোহন ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আতিকুল হক সেলিম। পরে এ কে এম ফজলুল হক খান ফরিদ বলেন, ‘চাক্ষুষ সাক্ষী’ না থাকাসহ বিভিন্ন কারণে আসামিরা খালাস পেয়েছেন।
এম এ মান্নান মোহন বলেন, সাক্ষীদের সাক্ষ্যে গড়মিল থাকাসহ বিভিন্ন কারণে ডেথ রেফারেন্স রিজেক্ট করা হয়েছে। এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আপিল করা হবে।
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের ২১ এপ্রিল বাগেরহাটের দায়রা জজ আদালতের রায়ে মোল্লাহাট উপজেলার নগরকান্দি গ্রামের ইকু বিশ্বাসের স্ত্রী ও ডিপজলের মা লতিফা বেগম, একই গ্রামের আয়েন উদ্দিন মোল্যার ছেলে মনির মোল্লা ও লুৎফর রহমানের স্ত্রী নাজমা বেগমকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। তাদের মধ্যে মনির মোল্লা ও নাজমা বেগম সম্পর্কে ভাই-বোন। মামলার অভিযোগে বলা হয়, লতিফা বেগমের সঙ্গে প্রতিবেশী মনির মোল্লার পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
এ নিয়ে ঝগড়ার পর স্ত্রী লতিফা বেগমকে মারধর করেন ইকু বিশ্বাস। পরকীয়ায় বাধা ও মারপিটের ঘটনায় আসামিরা ইকু বিশ্বাসের ওপর ক্ষিপ্ত হন। ২০০৫ সালের ১২ এপ্রিল ভোরে ডিপজল নিখোঁজ হয়। পরের দিন বাড়ির পাশের একটি পুকুর থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ওই দিনই মোল্লাহাট থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা করা হয়।
তবে, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর ওই বছরের ২৯ অক্টোবর মনির মোল্লা ও নাজমা বেগমকে আসামি করে মোল্লাহাট থানায় একটি হত্যা মামলা করেন ইকু বিশ্বাস। তদন্ত শেষে ২০০৬ সালের ১০ মে এজাহারভুক্ত দুই আসামি ও শিশুটির মা লতিফা বেগমকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।
এরপর বিচার শেষে ২০১৪ সালের ২১ এপ্রিল রায় ঘোষণা করা হয়। পরে ডেথ রেফারেন্স হিসেবে বিষয়টি হাইকোর্টে পাঠানো হয়। পাশাপাশি আসামিরা ফৌজদারি আপিল ও জেল আপিল করেন।