Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৬ মঙ্গলবার, এপ্রিল ২০২৪ | ৩ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

ঠাকুরগাঁওয়ে ইউএনও পদশূন্য, উপজেলায় ব্যাপক অনিয়ম

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ
প্রকাশিত: ০২ জুলাই ২০১৯, ০৫:৫৬ PM
আপডেট: ০২ জুলাই ২০১৯, ০৫:৫৬ PM

bdmorning Image Preview


ঠাকুরগাঁয়ের হরিপুর উপজেলায় নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পদটি প্রায় ২মাস ধরে শূন্য থাকায় উপজেলায় বিভিন্ন অনিয়ম ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। 

হরিপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে। এমতাবস্থায় কিছু স্বার্থনেশি ব্যক্তি পেশিশক্তি খাঁটিয়ে প্রশাসনকে ফাঁকি দিয়ে অনিয়ম করে কিছু কাজকর্ম করে চলছে তা দেখার কেউ নেই।

হরিপুর উপজেলা পরিষদের সামনে হরিপুর-ঠাকুরগাঁওগামী পাঁকা রাস্তায় মুক্তিযোদ্ধ স্মৃতিসৌধের গেটের পার্শ্বে বিলের জলাশয়ের উপর নির্মিত ব্রিজের উত্তরপার্শ্বে বিলের কৃষি জমি থেকে মাটি খননের যন্ত্র (ইসকেভেটার) দিয়ে মাটি কেটে ভূমির শ্রেণি পরিবর্তন করে পুকুর করার জন্য প্রায় ৩ফুট উচু করে পাঁকা রাস্তার সরকারি যায়গাসহ দখল করে পুকুর পাহাড় বাঁধা হয়েছে।

এতে বর্ষায় বিলের জলাশয়ের পানি প্রবাহের বাঁধা সৃষ্টি হবে এবং পাঁকারাস্তা হুমকির মূখে পড়বে। ভূমির শ্রেণি পরিবর্তন বা কৃষি জমিতে পুকুর খনন, জলাশয়ের পানি প্রবাহ বন্ধ করে পুকুর খনন বাড়ীঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ ইত্যাদি বিষয়ে কাজ করতে চাইলে নিয়ম অনুসারে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বা সহকারী কমিশনার ভূমি এর বরাবরে আবেদন করতে হবে।

কারণ এসব বিষয়ে সরকারের রাজস্ব আদায়ের স্বাথ জড়িত রয়েছে। এসব নিয়ম উপেক্ষা করে সম্প্রতি গত কয়েকদিনে উপজেলা সদরেই পাঁকারাস্তা সংলগ্ন কৃষি জমিতে মানিক সরকার ও খুরশেদ আলী গং নামে প্রায় ৮বিঘা জমিতে পুকুর খননের জন্য পেশিশক্তি খাটিয়ে এসব কাজ করে চলছে। অথচ এর আশেপার্শ্বে সরকারি কয়েক একর খাস জমিও রয়েছে। এই যায়গাগুলোতে সরকারি কিছু স্থাপনা তৈরি করার জন্যও প্রস্তাব রয়েছে বলে জানা গেছে।

এরপরেও এই যায়গাগুলো সংরক্ষণের বিষয়ে প্রশাসনের কোন জোড়ালো ভূমিকা নেই। অবশেষে গত শনিবার হরিপুর উপজেলার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা মৌসুমি আফরিদা এর হস্তক্ষেপে কাজ বন্ধ হলেও এটির সুষ্ঠু ব্যবস্থা না নিলে আবারও কাজ শুরু হতে পারে।

উপজেলার যাদুরাণী হাটের ইজারাদার আঃ হামিদ চেয়ারম্যান জেলা প্রশাসকের দেওয়া প্রস্তাবিত হাটের টোল আদায়ের তালিকা অনুসরণ না করে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে পেশিশক্তি দেখিয়ে গরু, মহিষ, ছাগলসহ অন্যান্য পণ্যের অতিরিক্ত টোল আদায় করছেন এবং এই অর্থ সিন্ডিকেটকারীগণের মধ্যে ভাগবন্টন করে নিচ্ছেন বলে বিশেষ সূত্রে জানা গেছে।

প্রতিটি গরু ও মহিষের জন্য সরকারিভাবে ২৩০টাকা নেওয়ার নিয়ম থাকলেও এর স্থলে টোল নেওয়া হচ্ছে ২৭০ টাকা। প্রতিটি ছাগলের জন্য ৯০ টাকার স্থলে নেওয়া হচ্ছে ১৩০ টাকা। অতিরিক্ত টোল আদায়ের বিষয়ে ইজারাদার আঃ হামিদকে জিজ্ঞাস করা হলে তিনি বিষয়টি এরিয়ে যান। যাদুরাণী হাটের অতিরিক্ত টোল আদায়ের বিষয়টি হরিপুর উপজেলায় অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা নির্বাহী কর্মকর্তা মৌসুমি আফরিদা অবহিত থাকার পরও এর কোন প্রতিকার হয়নি।

উপজেলার নারগুন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পশ্চিমপার্শ্বে নারগুন ব্রিজটি গত বছর অতিরিক্ত বন্যার কারণে পানি প্রবাহের বাঁধা সৃষ্টি হওয়ায় এমনিতেই ব্রিজটি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।

এমতাবস্থায় এই ব্রিজের আশেপার্শ্বে পানিপ্রবাহ বন্ধ করে ব্রিজের জলাশয়ের জমিতে প্রভাবশালীরা প্রভাব খাটিয়ে বিশাল আকারের পুকুর তৈরী করছেন। এতে ব্রিজটি এবার বন্যায় ভেঙ্গে পড়বে। ব্রিজটির কিছু হলে গ্রামবাসীর যাতায়াতসহ বিদ্যালয়টি বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

উপজেলার ৩নং বকুয়া ইউনিয়নের পীরহাট বাজারের সরকারি যায়গা দখলে প্রতিযোগীতা চলছে বলে বাজারের ইজারাদার জানিয়েছেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ প্রকৌশলী কর্মকর্তা, যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা, খাদ্য কর্মকর্তা, পরিসংখ্যান কর্মকর্তা, সাব-রেজিষ্ট্রার, ভূমি সহকারী কমিশনার, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী ও পিআইও কর্মকর্তা পদগুলি শূন্য থাকায় সরকারি অফিসও দাপ্তরিক কাজ চলছে ঢিলেঢালাভাবে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের দিয়ে। এতে জনসেবা ব্যহত হচ্ছে।

এমতাবস্থায় উপজেলার সার্বিক উন্নয়নের জন্য জনস্বার্থে নির্বাহী কর্মকর্তাসহ শূন্যপদ গুলিতে অতীব জরুরীভাবে কর্মকর্তা যোগদানের বিষয়ে সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করেছেন এলাকার সুধীমহল।

উল্লেখ্য যে, গত ২৩/০৪/১৯ইং তারিখে হরিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এম.জে. আরিফ বেগ ভূমি ও সেনানিবাস অধিদপ্তরে বদলি হয়ে যান। এসময় থেকে রাণীশংকৈল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মৌসুমি আফরিদা হরিপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্বে রয়েছেন।

Bootstrap Image Preview