Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৮ বৃহস্পতিবার, মার্চ ২০২৪ | ১৪ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

ভুয়া পাসপোর্ট করতে এসে রোহিঙ্গা নারীসহ আটক ২

সোহেল কান্তি নাথ, বান্দরবান প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ২৮ মে ২০১৯, ০৬:০৪ PM
আপডেট: ২৮ মে ২০১৯, ০৬:০৪ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত


বান্দরবানে পরিচয় গোপন করে ভুয়া পাসপোর্ট করার সময় দলালসহ এক রোহিঙ্গা নারীকে আটক করেছে পুলিশ।

সোমবার (২৭ মে) দুপুরে বান্দরবান আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস থেকে তাদেরকে আটক করা হয়। আটককৃত রোহিঙ্গা নারীর নাম সায়েকা। সে উখিয়া পালংখালী ক্যাম্পের হামিদুল্লাহর মেয়ে। তার মায়ের নাম মরিয়ম আক্তার। অপর দুই দলাল নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের জামছড়ি এলাকার বাসিন্দা জকরিয়া ও আব্দুল মালেক। 

ঘটনা সূত্রে জানা যায়, নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের বাসিন্দা দালাল জকরিয়া পালংখালী ক্যাম্পের শরণার্থী সায়েকাকে টাকার বিনিময়ে পাসপোর্ট করে দেয়ার জন্য নাইক্ষ্যংছড়িতে নিয়ে আসে। সেখানে নাইক্ষ্যংছড়ির বাসিন্দা ছৈয়দ হোসেন কে টাকা দিয়ে সায়েকাকে তার মেয়ে রেজিয়া বেগম পরিচয় দেয়ার জন্য রাজি করায়।

পরে রেজিয়ার কাগজপত্র দিয়ে সায়েকার ছবি বসিয়ে সদর ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম পুলিশ (চৌকিদার) আব্দুল মালেকের মাধ্যমে পাসপোর্ট করার যাবতীয় কাগজপত্র সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তছলিম ইকবালের কাছ থেকে সত্যায়িত করে নেয়।

পরবর্তীতে, দালালসহ কাগজপত্র বান্দরবান আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে জমা দিতে গেলে তাদের কথাবার্তা শুনে অফিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সন্দেহ হলে তারা পুলিশকে খবর দেয়ন। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দালাল জকরিয়া ও আব্দুল মালেকসহ রোহিঙ্গা নারী সায়েকাকে আটক করেন।

এ সময় পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে দালাল জকরিয়া জানায়, তার ছেলে মালেশিয়ায় থাকে। ছেলের বৌ করার জন্য সায়েকাকে ক্যাম্প থেকে নিয়ে এসে বিদেশ পাঠানোর জন্য পাসপোর্ট করতে নিয়ে আসে। এ ঘটনা জানার পর পুলিশ সায়েকার পিতা পরিচয়দানকারী ছৈয়দ হোসেন, তার স্ত্রী এলম খাতুন ও মেয়ে রেজিয়া আক্তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসেন।

এ ঘটনায় নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তছলিম ইকবাল বলেন, আমার এলাকার বাসিন্দা ছৈয়দ হোসেনের পাসপোর্ট ফরম সত্যাইয়িত করেছি। সে আমার পরিচিত। তাই আমি ভাল করে যাচাই করিনি। কিন্তু সে আমার সাথে প্রতারণা করেছে। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া দরকার। প্রয়োজনে আমিও তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব। তবে আমার আরও ভাল করে যাচাই করা দরকার ছিল। এটা আমার জন্য একটা শিক্ষা। ভবিষ্যতে এ ধরনের ভুল আর হবে না। 

উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ধরে নাইক্ষ্যংছড়ির কয়েকজন জনপ্রতিনিধিসহ একটি দালালচক্রের বিরুদ্ধে টাকার বিনিময়ে রোহিঙ্গা নারী-পুরুষকে ভোটার ও পাসপোর্ট করে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। বাংলাদেশী নাগরিকদের পিতা-মাতা সাজিয়ে কাগজপত্র বৈধ করে রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট করে দেয় দালালচক্র।

এ বিষয়ে বান্দরবান পুলিশ সুপার জাকির হোসেন মজুমদার বলেন, আটককৃত সায়েকা পালংখালী ক্যাম্পের শরণার্থী। তার কাছে রোহিঙ্গা কার্ডও রয়েছে। তার সাথে দু’জন দালালকে আটক করা হয়েছে। যাদের মেয়ে সেজে সে পাসপোর্ট করছিল সে পরিবারকেও আমরা আমাদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছি। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে প্রকৃত দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
 

Bootstrap Image Preview