Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ শুক্রবার, মার্চ ২০২৪ | ১৫ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

'আমাকে মেরে ফেল তবুও বাড়িতে ফিরে যাব না'

আব্দুল্লাহ আল মামুন, পার্বতীপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ
প্রকাশিত: ২৪ মে ২০১৯, ০৫:২৩ PM
আপডেট: ২৪ মে ২০১৯, ০৫:২৩ PM

bdmorning Image Preview


আমাকে শুট করে মেরে ফেল তবুও বাবা-মার কাছে ফিরে যাব না। আমাকে তারা ঘরে তালাবদ্ধ করে আটকে রাখে, মারধর করে। জোর করে বিয়ে দিতে চায়। আমি তালা ভেঙ্গে আমার প্রেমিক সিয়ামের কাছে পালিয়ে এসেছি। আমি কখনো অপহৃত হইনি। আমাকে অপহরণ করা হয়েছে বলে গল্প সাজিয়ে থানায় মামলা করে ছিলেন আমার বাবা-মা। এভাবেই গ্রামের শতাধিক নারী-পুরুষের উপস্থিতিতে পুলিশকে উদ্দেশ্য করে কথাগুলো বলছিলেন বাড়ি থেকে পালিয়ে আসা স্কুল ছাত্রী।

বৃহস্পতিবার (২৩ মে) রাত সাড়ে ১১টার দিকে পৌরসভার নামাপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ অনেকটা জোর করে ওই ছাত্রীকে তার বাবা-মার হাতে তুলে দিতে সক্ষম হয়েছেন।

জানা যায়, পার্বতীপুর শহরের নামাপড়া গ্রামের আব্দুল ওহাবের পুত্র মিজানুর রহমান সিয়ামের সাথে গুলশান নগর মহল্লার এক স্কুল ছাত্রীর (১৬) প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ঘটনাটি পরিবাড়ে জানাজানি হলে ওই ছাত্রীর উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে তার বাবা-মা। গত ২ বছর আগে সিয়ামের সাথে বাড়ি থেকে পালিয়েও যায় ওই ছাত্রী।

১৫ দিন পর তারা আবার বাড়িতে ফিরে এসে নিজ নিজ বাড়িতে অবস্থান করতে থাকে। ফলে ওই ছাত্রীর উপর নির্যাতনের মাত্রা আরো বেড়ে যায়। নির্যাতনে অতিষ্ট হয়ে গত ১৫ এপ্রিল কাউকে না জানিয়ে পার্শ্ববর্তী চিরিরবন্দর উপজেলায় তার ফুফুর বাড়িতে আত্মগোপন করে থাকে সে।

মেয়ের খোঁজ না পেয়ে গত ৬ মে সিয়ামসহ ৭ জনের নামে একটি অপহরণ মামলা করেন ছাত্রীর বাবা। এ ঘটনা জানতে পেরে ওই ছাত্রী আদালতে উপস্থিত হয়ে তাকে অপহরণ করা হয়নি বলে আদালতে জবানবন্দি প্রদান করে। সে বাবা-মায়ের অত্যাচারের কারণে ফুপুর বাড়িতে ছিল বলে জানায়। ছাত্রীর বয়স কম হওয়ায় আদালত তাকে বাবা-মার হেফাজতে তুলে দেয়। 

ওই ছাত্রী জানায়, আদালত থেকে আসার পর তার বাবা-মা তাকে ঘরে তালাবদ্ধ করে রাখতো। কারো সাথে কথা বলতেও দিত না। সুযোগ পেয়ে তালা ভেঙ্গে সে তার প্রেমিক সিয়ামের বাসায় চলে এসেছে। তাকে বিয়ে না করে সে ফিরে যাবে না।

সিয়ামের বাবা আব্দুল ওহাব বলেন, তার ছেলে ওই ছাত্রীকে অপহরণ করেনি। সে স্বেচ্ছায় এসেছে। ছাত্রীর বয়স কম হওয়ায় বিয়ে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।

পার্বতীপুর মডেল থানার এসআই নয়ন জানান, ছাত্রীর বাবা তার মেয়েকে অপহরি করা হয়েছে মর্মে থানায় একটি মামলা করে ছিল। আদালত ছাত্রীকে পিতামাতার হেফাজতে দিয়েছে। তারপরেও বৃহস্পতিবার রাতে ওই ছাত্রী সিয়ামের বাড়িতে গিয়ে আর ফিরে আসতে চাচ্ছিল না। পরে মুচলেকা নিয়ে মেয়েকে তার বাবা মার হেফাজতে তুলে দেওয়া হয়েছে। 


 

Bootstrap Image Preview