Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ শুক্রবার, মার্চ ২০২৪ | ১৫ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

বিলুপ্তির পথে চৌহালীর বাঁশ ও বেত শিল্প 

ইদ্রিস আলী, চৌহালী (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ 
প্রকাশিত: ২৩ মে ২০১৯, ১০:৩১ PM
আপডেট: ২৩ মে ২০১৯, ১০:৩১ PM

bdmorning Image Preview


সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার বিভিন্ন গ্রামাঞল থেকে বাঁশ ও বেত শিল্প বিলুপ্তি প্রায়। উপজেলার প্রাকৃতিক জীবকুল ও পরিবেশ বিপর্যয় বাঁশ ও বেত চাষে প্রয়োজনীয় পুজি ও ন্যায্য মূল্য না পাওয়ার কারণে বিলুপ্ত হতে বসেছে এ শিল্প।

অন্যদিকে দেশিয় প্লাষ্টিকের বাজার জমজমাট হওয়ায এ পেশায় নিয়োজিতরা বর্তমান বাজারে প্লাষ্টিক পণ্য ও অন্যান্য দ্রব্যের সাথে পাল্লা দিতে না পারায় তাদের কার্যক্রম মুখ থুবড়ে পড়েছে। যার কারণে গ্রাম থেকে হারিয়ে যাচ্ছে বাংলার ঐতিহ্যবাহী এসব শিল্প৷   

তার সাথে অত্র এলাকার বাঁশ শিল্পের কারিগরদেরও ভাগ্য নেমে এসেছে চরম দুর্দিন। অনেকে তাদের পূর্ব পুরুষের পেশাকে আঁকড়ে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করেও হিমশিম খেতে হচ্ছে। এক সময় বাঁশ ও বেত শিল্প এলাকার প্রতিটি ঘরে ঘরে বাঁশের তৈরি সামগ্রীর কদর ছিল খুব বেশি। কিন্তু কালের পরিবর্তনের হাওয়ায় এখন তা আর বিশেষ চোখে পড়ে না।

অপ্রতুল ব্যবহারে আর বাঁশের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে বাঁশ ও বেত শিল্পীরা তাদের বাপ দাদার পৈত্রিক পেশাকে ছেড়ে অন্যান্য পেশা বেছে নিতে বাদ্য হচ্ছে। হাতে গোনা কয়েকজন শিল্পের কারিগররা নিরুপায় হয়ে ঐতিহাসিক আঁকড়ে ধরে রাখার প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এক সময় বাঁশের তৈরি কুলা, চালনি, খাচা, চাটাই, ডালা, ঝুড়ি, কুলা, চেয়ার,  পাখা, টোপাসহ প্রাকৃতিক বাঁশ দিয়ে তৈরি করা হতো।

এলাকার গ্রামগুলোতে এসব শিল্পের চাহিদা ছিল অনেক বেশি। বিগত কয়েক বছর ধরে এশিল্পের ব্যবস্থা অত্যন্ত নাজুক। এ পেশায় দক্ষ শিল্পীদের পরিবারে দেখা দিয়েছে চরম দুরাবস্থা। যার ফলে কুটির শিল্পের উপর নির্ভরশীল পরিবারে চলছে দুর্দিন। বেকার হয়ে তারা মানবেতর জীবনযাপন করছে।

অন্যদিকে আগের তুলনায় পরিমান মত বাঁশের জন্ম বা উৎপাদন সঠিকভাবে হচ্ছে না। কালের পরিবর্তনে যে বাঁশ ৪০/৫০টাকায় বিক্রি হত বর্তমানে সেই বাঁশ মূল্য ২৫০/৩০০টাকা। অন্যদিকে বাঁশের ব্যাপক চাহিদা থাকার কারণে বংশবৃদ্ধির আগেই তা উজাড় করে কাটা হচ্ছে এসব বাঁশ। আশির দশকে গ্রামের বেশীর ভাগ ঘর বাড়িই বাঁশের সাহায্যে তৈরি করা হতো। একটি ঘর তৈরি করতে বাঁশ লাগত প্রায় ৪০/৫০টি।

সে সময় প্রত্যেক গ্রামে বড় বড় বাঁশ ঝাড় ও বেত বাগান দেখা যেত। এখন তা আর চোখে পরে না। কারণ বাঁশঝাড় ও বেতবাগান পরিস্কার করে সেখানে গড়ে উঠেছে এখন নতুন নতুন বাড়ি। অপরদিকে শহরে গড়ে উঠেছে বড় বড় পাকা দালান। যদিও ইট পাথর সিমেন্ট দিয়ে তৈরি এসব দালান ঘর।

তবুও নির্মাণ কাজে ব্যবহার করা হয় বাঁশ। এসব কারণে বাজারে বাঁশ শিল্পীদের উপার্জন কমে গেছে। ক্রয়ের তুলনায় বিক্রি মূল্য অধিক না পাওয়ায় তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। ফলে কাজের প্রতি তারা দারুনভাবে অনিহা প্রকাশ করছে এবং অনেকেই পৈত্রিক পেশা ছেড়ে অন্যান্য পেশায় যেতে বাধ্য হচ্ছে।

 

Bootstrap Image Preview