আদালতকে এক মর্মস্পর্শী চিঠি লিখেছেন অস্ট্রেলিয়ান এক কিশোরী। ওই চিঠিতে লিখেছেন দুই যাজকের ছেলের কথা। এই ছেলে দুটোর যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছিলেন ওই কিশোরী।
সম্প্রতি কায়রো পিটার নাহিকে (২১) জেল দেয়া হয়েছে চার কিশোরীকে যৌন নির্যাতন করার জন্যে। ভাইব গির্জার সদস্য থাকাকালীন তিনি এ কাজ করেছেন। ভাইব চার্চ খ্রিস্টানদের একটি দলের যাদের বাস মূলত নিউ সাউথ ওয়েলসে।
নাহির বিরুন্ধে ১৩টি পয়েন্টে অভিযোগ আনা হয়েছে। ১৬ বছরের কম বয়সী শিশুদের সাথে আপত্তিকর আচরণের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এছাড়াও ইন্টারনেটের মাধ্যমে অন্য এক শিশুকে রাজি করানোর অভিযোগও রয়েছে।
নাহির লালসার শিকার হওয়া চার শিশুর একজন চিঠি লিখেছেন আদালতের কাছে। তিনি লিখেছেন, এই চিঠি লেখাটা আমার জন্যে খুবই কঠিন এবং আবেগময় বিষয়। ওই দানব আমার সঙ্গে যা করেছে তা সব ভুলে গিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। সে আমার নিষ্পাপ শৈশব কেড়ে নিয়েছে। সে আমার স্কুলের সব বন্ধুদের কেড়ে নিয়েছে। আমার বাকি জীবনে এটা বয়ে বেড়াতে হবে এবং একসময় আমি যেমন ছিলাম সেই মানুষটা বদলে গেছে।
মেয়েটি যখন নিপীড়নের শিকার হয়েছিলেন, তখন তার বয়স ১৪। এর পর থেকে তিনি অতি সামান্য বিষয়ে রেগে যেতেন। নিজের প্রেমিকের হাত ধরে থাকতেও ভয় লাগতো তার। এমন অনেক সমস্যায় ভুগতে হয়েছিলন তাকে।
নাহির বাবা-মা ওই গির্জার যাজক। সে সুবাদে সেখানে তার ভালো পদচারণা রযেছে। ওই মেয়েগুলোর সাথে তার দেখা হয়েছিল ২০১৫ সাল থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে। তারা অবশ্য ছেলের এমন অপকর্মের কথা জানতেন না বলে জানিয়েছেন সাংবাদমাধ্যমকে।
আদালনের শুনানীতে বলা হয়, নাহি নিজেই কিশোর ছিলেন যখন প্রথমবারের মতো ১৩ বছর বয়সী এক শিশুকে যৌন নির্যাতন করেন।
নির্যাতিতার মা ঘটনাটি জানতে পারেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। পরে তিনি এ নিয়ে কথা বলতে এগিয়ে এসেছেন। তিনি গির্জার বোর্ড সদস্য এবং দুই যাজকের কাছে নাহির চারিত্রিক সনদপত্র চেয়েছেন। তবে গির্জার সুনামের খাতিরে তিনি উচ্চবাচ্য করবেন না বলে কথা দিয়েছেন।
প্রথম ঘটনার পর পরই নাহি স্ন্যাপচ্যাপে অন্য এক ১১ বছর বয়সী মেয়েকে আপত্তিকর ছবি ও বার্তা পাঠাতে শুরু করেন। নাহি মেয়েটিকে তার স্তনের ছবি পাঠাতে রাজি করান এবং ১২ বছর পূর্ণ হলে মেয়েটি দেখা করবে বলে প্রতিশ্রুতি আদায় করিয়ে নেন। আদালতে বলা হয়, নাহি তাকে আপত্তিকরভাবে স্পর্শ করেন এবং ওরাল সেক্সের প্রস্তাব দেন। মেয়েটি রাজি না হলে নাহিও আর জবরদস্তি করেনি।
২০১৭ সালে একটা গাড়ির গ্যারেজে নাহির দেখা হয় আরেকটি মেয়ের সাথে। সেখানে নাহি মেয়েটিকে চুমু দেন এবং ওরাল সেক্স করতে বাধ্য করান। পরে মেয়েটি তার বোনের প্রেমিককে খবর দেন। সেই প্রেমিক মাধ্যম হয়ে ঘটনাটি তার বাবা-মাকে বলেন। পরে তারা পুলিশের কাছে যান। নাহিকে গ্রেফতার করা হয় এবং ১৩টি পয়েন্টে তিনি দোষী সাব্যস্ত হন।
তাকে তিন বছরের জেল দেয়া হয়। জেল খাটার পর তাকে আরো ১৮ মাস পরীক্ষাধীন রাখার নির্দেশনা দিয়েছেন বিচার ক্যাথেরিন।