নওগাঁর রাণীনগরে ঝড়ে বসতবাড়ি, দোকানপাট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ফলদ গাছপালা ভেঙ্গে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙ্গে তার ছিড়ে যাওয়ায় কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্নসহ প্রায় ৫ শতাধিক বসতবাড়ি, দোকানপাট ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাউনি উড়ে গিয়ে ক্ষতিতে পড়েছেন ঝড়ের কবলে পড়া লোকজন।
জানা গেছে, শুক্রবার (১৭ মে) বিকেল ৫ টা নাগাদ হঠাৎ করেই আকাশের পশ্চিম-উত্তর কোনে কালো মেঘ দেখা দেয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই শুরু হয় প্রচণ্ড গতিতে ঝড়ের তাণ্ডব। প্রায় ১০-১৫ মিনিটে রাণীনগর উপজেলার পূর্বাঞ্চলের করজগ্রাম, খাঁনপুুর, ভেবরা, কালীগ্রাম, আবাদপুকুর, সিলমাদার, ডাকাহার, দামুয়া, কয়াপাড়া, জেঠাইল, পাকুরিয়া, একডালা, পারইল, বগারবাড়ি, জলকৈসহ অন্তত ২৫/৩০ টি গ্রামের প্রায় ৫ শতাধিক বাড়ি-ঘর, ব্যবসা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ব্যাপক ক্ষতি হয়।
আকস্মিক এই ঝড়ে অধিকাংশ ঘর-বাড়ি, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের চাল উড়ে যায়। এমনকি ঝড়ের তাণ্ডবে তালগাছসহ হাজার হাজার ফলদ গাছপালা ভেঙ্গে গিয়ে মৌসুমি ফলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। এতে কয়েকটি রাস্তায় যানবাহন চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে পড়লে ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় লোকজন গাছ কেটে রাস্তায় চলাচলের উপযোগী করে। এছাড়া আবাদপুকুর কলেজ, ডাকাহার প্রাথমিক বিদ্যালয়, মধুপুর উচ্চ বিদ্যালয়সহ বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের টিনের চালা উড়ে গেছে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকার বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙ্গে ও তার ছিড়ে পড়ে যায়।
পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি রাণীনগর উপজেলা বিলিং অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার আসাদুজ্জামান বলেন, ঝড়ে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ৭টি খুঁটি ভেঙ্গে গেছে এবং ১৫টি খুঁটি হেলে পড়েছে। এছাড়া প্রায় ৬২টি স্থানে তার ছিড়ে গেছে। যার ফলে রাণীনগর উপজেলার বেশ কয়েকটি এলাকায় বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে।
শনিবার (১৮ মে) দিন এলাকার মেইন লাইন চালু করতে পারলেও বিদ্যুৎ পরিস্থিতি পুরোটা স্বাভাবিক হতে আরো দু'একদিন সময় লাগতে পারে বলে জানা গেছে।
রাণীনগর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার মেহেদি হাসান জানান, প্রাথমিকভাবে প্রায় ৪'শ বাড়ি-ঘর ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। তবে তালিকা তৈরি শেষ হলে ক্ষতির সঠিক পরিমাণ পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
রাণীনগর উপজেলা অফিসার আল মামুন বলেন, ঝড়ের তাণ্ডবে উপজেলার বেশ কিছু এলাকার ঘর-বাড়ি, ব্যবসা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ মৌসুমি ফলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ইতিমধ্যেই ক্ষতিগ্রস্থের তালিকা তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। তবে কি পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তালিকা না করে বলা যাচ্ছে না।