Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ শুক্রবার, মার্চ ২০২৪ | ১৫ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

স্বর্ণলতা বাসে সেই নার্সের ছোপ ছোপ রক্তের দাগ যেন দিল্লি ক্রাইমকেও হার মানায়

নারী ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২ মে ২০১৯, ০৯:৩২ PM
আপডেট: ১২ মে ২০১৯, ০৯:৩২ PM

bdmorning Image Preview


বাসে গণধর্ষণের পর খুন হওয়া নার্স বহন করা পরিবহনের মেঝেতে ছোপ ছোপ রক্তের দাগ খুঁজে পেয়েছে সিআইডির ক্রাইমসিন ইউনিট। শুনতে অনেকটা গল্পের সিকুয়েন্সের মতোই মনে হবে কিংবা কিছুদিন আগেই ভাইরাল হওয়া দিল্লি ক্রাইমের সিনগুলোর কথাও মাথায় আসবে। কিন্তু এটি কোনো গল্প নয়; এটি আমাদের দেশেরই একটি চিত্র। কিশোরগঞ্জের কটিয়াদিতে স্বর্ণলতা বাসে এই ঘটনা ঘটে। 

ঢাকা থেকে কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরের পিরিজপুর রুটে চলাচলকারী ‘স্বর্ণলতা ভিআইপি পরিবহন লি.’-এর একটি বাসে ইবনে সিনা হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স শাহীনূর আক্তার তানিয়াকে ধর্ষণ করে অন্তত চারজন ধর্ষক। এরপর ধর্ষণের অভিযোগ থেকে বাঁচতে ওই চারজনই তানিয়াকে হত্যার মিশনে অংশ নেয়। শেষে ঘটনাটির মোড় ঘোরাতে মৃতপ্রায় তানিয়াকে পাঁজাকোলা করে স্থানীয় একটি ফার্মেসিতে নিয়ে রেখে আসার চেষ্টা চালায়।

কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। তানিয়াকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগে ঘটনার রাতেই বাসটির চালক নূরুজ্জামান ওরফে নূরু, হেলপার লালন মিয়া ও লাইনম্যান আল-আমিন পুলিশের হাতে ধরা পড়ে। পরে তানিয়ার বাবার দায়ের করা হত্যা মামলায় এ তিনজনকে গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ। বুধবার আদালত এ তিনজনসহ তানিয়া ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় আটক পাঁচজনকে আট দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

বর্তমানে বাজিতপুর থানায় চলছে আসামিদের রিমান্ড। রিমান্ডে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তানিয়াকে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় মুখ খুলতে শুরু করেছে ঘাতক বাসচালক, হেলপারসহ অন্যরা। নাম ও পদবি প্রকাশ না করার শর্তে পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা রিমান্ড থেকে পাওয়া এসব তথ্যের আভাস দেন।

তানিয়াকে ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত স্বর্ণলতা পরিবহনের বাসটি (ঢাকা মেট্রো ব-১৫-৪২৭৪) জব্দের পর গতকাল শনিবার আলামত ও নমুনা সংগ্রহ করেছে সিআইডি।

ময়মনসিংহের সিআইডির ক্রাইমসিন ইউনিটের একটি দল বাজিতপুর থানায় রাখা বাসটি থেকে আলামত ও রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে।

আলামত সংগ্রহের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বাজিতপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সারোয়ার জাহান। তিনি জানান, বাসচালক নূরুজ্জামান নূরু ও হেলপার লালন মিয়া রিমান্ডে নানা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। সেসব তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদে তারা ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন।

তারা জানিয়েছেন, ঘটনার সময়ে বাসটিতে চালক নূরু ও হেলপার লালন মিয়া ছাড়াও বোরহান নামে আরেকজন ছিলেন। বোরহান নূরুর খালাতো ভাই এবং বাসটির আরেক হেলপার। তার বাড়িও গাজীপুরের কাপাসিয়ায়।

বোরহানকে ধরতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে বলেও জানান মো. সারোয়ার জাহান।

এদিকে আজ রোববার বেলা সারে ১১টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন। পরে তিনি তানিয়ার গ্রামের বাড়ি লোহাজুরি ইউনিয়নের বাহেরচরে যান। তানিয়ার বাবা গিয়াস উদ্দিনকে সান্ত্বনা দেন এবং প্রয়োজনীয় তদন্ত শেষে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।

Bootstrap Image Preview