সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুরে মাদ্রাসা ছাত্রীকে যৌন হয়রানির ঘটনা ধামাচাঁপা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন খোদ সেই মাদ্রাসাটির অধ্যক্ষ। চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারি কতৃক যৌন হয়রানির শিকার সপ্তম শ্রেণীতে পড়ুয়া উপজেলার দিঘিরপাড় দাখিল মাদ্রাসা ছাত্রীর পরিবার বিচার চাইতে গিয়ে এখন উল্টো অধ্যক্ষের রোশানলে পড়েছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।
যৌন হয়রানির মত ন্যাক্কারজনক ঘটনাটি এরপর জানাজানি হলে এলাকার লোকজন ক্ষোভে ফুসে উঠেছেন।
যৌন নির্যাতনের শিকার মাদ্রাসা ছাত্রীর পরিবার জানায়, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার দীঘিরপাড় দাখিল মাদ্রাসার চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারি বিল্লাল হোসেন একই মাদ্রাসায় সপ্তম শ্রেণীতে পড়ুয়া এক ছাত্রীকে গত ২৪ এপ্রিল বই দেয়ার কথা বলে লাইব্রেরী কক্ষে নিয়ে গিয়ে যৌন হয়রানি করে।
ওইদিন মাদ্রাসা ছুটির পর দুই সহপাঠীকে নিয়ে সপ্তম শ্রেণির ওই ছাত্রী লাইব্রেরিতে বই আনতে গেলে বিল্লাল ওই ছাত্রীকে একা লাইব্রেরিতে আসতে বলে।
দুই সহপাঠীকে বাইরে রেখে ভেতরে ডুকলে বিল্লাল ভেতর থেকে দরজা বন্ধ করে তাকে যৌন হয়রানি করে। ছাত্রীর ওড়না কেড়ে নিয়ে তার মুখ পেছিয়ে শ্লীলতাহানীর চেষ্টা চালানোর এক পর্যায়ে ছাত্রীটি চিৎকার দিলে বাহিরে অপেক্ষায় থাকা দুই সহপাঠীর দরজা ধাক্কা ও চেচামেচি শুরু করলে বাইরের লোকজন জড়ো হন।
ওই সময় জানালা দিয়ে লোকজন ওই ছাত্রীর সঙ্গে বিল্লালের ধস্তাধস্তি দেখে ফেললে সে দরজা খুলে দৌড়ে লাইব্রেরী থেকে পালিয়ে যায়।
পরে এ ঘটনায় বাড়িতে এসে ওই ছাত্রী তার পরিবারের লোকজনকে বিষয়টি জানালে পরিবারের পক্ষ থেকে মাদ্রাসার অধ্যক্ষকে অবহিত করে বিচার চাওয়া হয়।
কিন্তু অধ্যক্ষ বিষয়টি নিয়ে ঘাটাঘাটি না করার জন্য নির্দেশ দেন ছাত্রীর পিতাকে। ঘটনাটি মানুষ শুনলে ছাত্রীর জীবনে ক্ষতি হবে বলে পরোক্ষভাবে উল্টো হুমকিও দেন অধ্যক্ষ।
এবিষয়ে শনিবার (৪ মে) উপজেলার দিঘিরপাড়র দাখিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মতিউর রহমানের নিকট জানতে চাইলে তিনি জানান ছাত্রীর অভিযোগ সঠিক নয়।
এনিয়ে যৌন হয়রানির শিকার মাদ্রাসা ছাত্রীর বাবা জানান, মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির দায়িত্বশীল সহ অধ্যক্ষকে গোটা বিষয়টি জানিয়েছি। লোক লজ্জায় ও সামাজিকভাবে অপমান হওয়ার ভয়ে আমার মেয়ে এখন মাদ্রাসায় যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। এরপরও তারা কোন ব্যবস্থা নেননি ওই কর্মচারীর বিরুদ্ধে। উল্টো মাদ্রাসার বদনাম হবে বলে আমাকে ঘটনাটি চেপে থাকতে বলেছেন।