Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ শুক্রবার, মার্চ ২০২৪ | ১৪ চৈত্র ১৪৩০ | ঢাকা, ২৫ °সে

আবদুস সামাদ আজাদের ১৪ তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ২৭ এপ্রিল ২০১৯, ০৬:০৬ PM
আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০১৯, ০৬:০৬ PM

bdmorning Image Preview


স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ প্রয়াত আলহাজ্ব আব্দুস সামাদ আজাদের আজ ১৪তম মৃত্যুবার্ষিকী।

আব্দুস সামাদ আজাদ ১৯২২ সালের ১৫ জানুয়ারি সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার ভুরাখালি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন ও ২০০৫ সালের ২৭ এপ্রিল  মৃত্যুবরণ করেন।

আব্দুস সামাদ ছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহকর্মী, আওয়ামী লীগ নেতা, মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম পররাষ্ট্রমন্ত্রী। 

মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আজ শনিবার সকাল সাড়ে ৮টায় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বনানী কবরস্থানে মরহুমের কবর জিয়ারত ও পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।

পরিবারের পক্ষ থেকে রাজধানী ঢাকায় কলাবাগানের বাসভবনে কোরআনখানি এবং লেকসার্কাস লেকভিউ জামে মসজিদে শনিবার বাদ আসর দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। 

এছাড়া তাঁর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আবদুস সামাদ আজাদ স্মৃতি পরিষদের উদ্যোগে শনিবার সুনামগঞ্জে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

১৯৪০ সালে সামাদ আজাদ সুনামগঞ্জ মহকুমা মুসলিম ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি হিসাবে ছাত্র রাজনীতিতে পদার্পণ করেন। তিনি তখন সুনামগঞ্জ সরকারী জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র ছিলেন। পরবর্তীতে ১৯৪৬ সালে একই সংগঠনের অবিভক্ত আসামের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন ও ইতিহাস বিষয়ে তিনি এম এ পাশ করেন। তৎকালীন সময়ে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় থাকার কারনে সরকার তার এম এ ডিগ্রি কেড়ে নেয়। ১৯৪৪-৪৮ সাল পর্যন্ত তিনি সিলেট জেলা মুসলিম ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি ছিলেন।

১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনের সময় সক্রিয়ভাবে অংশ গ্রহণ করতে গিয়ে কারা বরণ করেন।

১৯৫২’র ভাষা আন্দোলনে তার সিদ্বান্ত অনুযায়ী ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করা হয়। ১৯৫৩ সালে তৎকালিন পূর্ব পাকিস্থান যুব লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের মনোনীত প্রার্থী হিসাবে তৎকালীন প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হয়ে রাজনীতিতে আসেন। ১৯৫৫ থেকে ১৯৫৭ সাল পর্যন্ত পূর্বপাকিস্থান (বাংলাদেশ) আওয়ামী লীগের শ্রম সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৫৬ সালে সমগ্র পূর্ব পাকিস্থান ধর্মঘটে নেতৃত্ব দেয়ায় পাক সামরিক সরকার পুন:রায় তাকে আটক করে কারাগারে পাঠায়। ১৯৫৮ সালে আইয়ুব খানের সামরিক শাসন জারীর পর তিনি আবার গ্রেফতার হন এবং ৪ বছর কারাভোগ করে ১৯৬২ সালে মুক্তিলাভ করেন। ১৯৬৪ সালে পাকিস্থান সরকার কর্তৃক সৃষ্ট ষড়যন্ত্রমূলক সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সাহসিকতার সাথে মোকাবিলা করতে গিয়ে তিনি আবারো কারারুদ্ধ হন।  

১৯৭০ সালে তৎকালীন পাকিস্থানের গণপরিষদের সদস্যনির্বাচিত হন তিনি। স্বাধীনতার পর ১৯৭৩ সালের সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়নে তিনি সুনামগঞ্জ জেলার ২ ও ৩ আসন সহ দুটি আসনে নির্বাচন করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এর আগে ১৯৭১ সালে মুজিবনগর সরকার (স্বাধীন বাংলাদেশ সরকার) প্রতিষ্ঠাতা নেতাদের মধ্যে তিনি ছিলেন অন্যতম।

তিনি মুজিবনগর সরকারের রাজনৈতিক উপদেষ্টা (পূর্ণমন্ত্রীর মর্যাদা) এবং ভ্রাম্যমান রাষ্ট্রদূত ছিলেন। ১৯৭১ সালের ডিসেম্বরে সামাদ আজাদ বাংলাদেশের প্রথম পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্বপান। ১৯৭১ সালের হাঙ্গেরি বুদাষ্টে বিশ্বশান্তি সম্মেলনে বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন এবং বিশ্ব বর্ণ বৈষম্য কমিটির চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন। ৯০ এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন।

১৯৯১ সালের নির্বাচনে সুনামগঞ্জ-৩ আসন থেকে নির্বাচিত হয়ে জাতীয় সংসদে বিরোধী দলীয় উপনেতার দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৬ সালের সংসদ নির্বাচনে একই আসন থেকে সাংসদ নির্বাচিত হয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পুন:রায় লাভ করেন। 

২০০১ সালের অক্টোবরে অনুষ্ঠিত অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একই দলের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

চারদলীয় জোট সরকারের আমলে তিনি প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি এই দায়িত্বে ছিলেন। জীবনের শেষ মুহুর্ত পর্যন্ত আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য ছিলেন। 

Bootstrap Image Preview